ওয়াকিল আহমেদ নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
দীর্ঘ ১৯ মাস বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হলগুলো খুলেছে আজ। সকাল ১০টায় আপন নীড়ে প্রবেশ শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার শহীদ আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ফুল, মাস্ক ও স্যানিটাইজার দিয়ে বরণ করে নেন। এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল পরিদর্শন করেন।
এসময় ভিসি বলেন, নির্ধারিত সময়ে আমাদের সব হল খুলে দেয়া হয়েছে আজ। বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে আজ অন্যরকম আমেজ। শিক্ষার্থীরা তাদের আপন নীড়ে ফিরেছে। আমরা তাদেরকে বরণ করতে সব হল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আজ হল খুলল এবং আগামীকাল থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে। আগে থেকেই সব বিভাগের পরীক্ষা চলছে। সব মিলিয়ে করোনার ঘাটতি কাটিয়ে আশাকরি স্বাভাবিক কার্যক্রমে দ্রুতই ফিরতে পারবো আমরা।
বিভিন্ন হল ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে হলে প্রবেশ করছেন। হলের প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীদের থেকে টিকা গ্রহণের সনদ ও হল কার্ড দেখে তাদের প্রবেশ করাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরপর তাদের ফুল, মাস্ক ও চকলেট দিয়ে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর দেখা হওয়ায় আড্ডায় মেতে উঠেন শিক্ষার্থীরা। একে অপরের সঙ্গে ছবি তুলছেন। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় প্রাণ ফিরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে।
কর্তৃপক্ষের এমন ব্যবস্থাপনা দেখে খুশি শিক্ষার্থীরা। আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আছির উদ্দিন বলেন, ভিসি ম্যাডাম আমাদের ফুল ও মাস্ক দিয়ে বরণ করে নিয়েছে। হলে ফিরতে পেরে অনেক ভালো লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এখন একটাই চাওয়া যাতে পড়াশোনা স্বাভাবিক গতিতে ফেরে এবং দ্রুত আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো শেষ হয়।
খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী লাবণ্য আক্তার বলেন, মনে হচ্ছে বহুদিন পরে নিজের ঘরে ফিরে এসেছি। পরিচিত বড় এবং ছোট বোনদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। অনেক বেশি ভালো লাগছে আজ। হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরণ করাটা খুবই সুন্দর লেগেছে।
দীর্ঘদিন পরে হলে ফেরা শিক্ষার্থীদের পেয়ে আনন্দিত শিক্ষকরাও। তাদের বরণ করতে নানা আয়োজন করেছেন তারা। মাস্ক,ফুল,চকোলেট ছাড়াও রয়েছে খাবারের ব্যবস্থা।
শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ ড. লায়লা খালেদা আঁখি বলেন, আজ আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের দিন। বহু দিন পরে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় হলে প্রাণ ফিরেছে। শিক্ষার্থীরা তাদের হলের পরিচয়পত্র এবং অন্তত একডোজ টিকা গ্রহণের কার্ড দেখিয়ে প্রবেশ করছে। তাদেরকে বরণ করতে আমরা কিছু উপহার সামগ্রী দিচ্ছি। এছাড়াও তাদের জন্য দুপুরে এবং রাতে খাবারের আয়োজন রয়েছে।
খালেদা জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের আগমন আমাদের অনেক ভালো লাগছে। প্রশাসনের নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে হলে প্রবেশ এবং বরণ করে নেয়া হচ্ছে। সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সেভাবে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। যারা এখনো দুই ডোজ টিকা নেয়নি তাদেরকে যত আগে সম্ভব টিকার আওতায় আনতে চেষ্টা করবো। এবং যেসব রুমে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী থাকবে সেখানে কিভাবে শিক্ষার্থী কমানো যায় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করবো।