আশিফুজ্জমান শরাফত:
চলুন ঘুরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে । স্থানীয় মানুষের কাছে যেটি সৈকত ‘মুরাদপুর বীচ’ নামেও সুপরিচিত।
প্রকৃতি কোন কার্পন্য করেনি সীতাকুণ্ড বাজার থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অনিন্দ্য সুন্দর গুলিয়াখালি সী বিচ কে সাজাতে ।
একদিকে দিগন্তজোড়া সাগর জলরাশি আর অন্য দিকে কেওড়া বন এই সাগর সৈকতকে করেছে অনন্য। কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে চলি চারিদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল এই সমুদ্রের অনেকটা ভেতর পর্যন্ত চলে গেছে। এখানে পাওয়া যাবে সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মত পরিবেশ। গুলিয়াখালি সৈকতকে ভিন্নতা দিয়েছে সবুজ গালিচার বিস্তৃত ঘাস। সাগরের পাশে সবুজ ঘাসের উন্মুক্ত প্রান্তর নিশ্চিতভাবেই আপনার চোখ জুড়াবে। বীচের পাশে সবুজ ঘাসের এই মাঠে প্রাকৃতিক ভাবেই জেগে উঠেছে আঁকা বাঁকা নালা। এইসব নালায় জোয়ারের সময় পানি ভরে উঠে। চারপাশে সবুজ ঘাস আর তারই মধ্যে ছোট ছোট নালায় পানি পূর্ণ এই দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। অল্প পরিচিত এই সৈকতে মানুষজনের আনাগোনা কম বলে আপনি পাবেন নিরবিলি পরিবেশ। সাগরের এত ঢেউ বা গর্জন না থাকলেও এই নিরবিলি পরিবেশের গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত আপনার কাছে ধরা দিবে ভিন্ন ভাবেই। চাইলে জেলেদের বোটে সমুদ্রে ঘুরে আসতে পারেন। এক্ষেত্রে বোট ঠিক করতে দরদাম করে করে নিতে হবে।
গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত গেলে অনেক দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে পারবেন। গুলিয়াখালীর আশেপাশে ভ্রমণ স্থান গুলোর মধ্যে আছে, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক, চন্দ্রনাথ মন্দির ও পাহাড়, ঝরঝরি ঝর্না, কমলদহ ঝর্ণা, কুমিরা সন্দ্বীপ ঘাট, মহামায়া লেক, খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা, সহস্রধারা ঝর্ণা ইত্যাদি। আপনার সময় ও কি দেখার ইচ্ছে সেই অনুযায়ী সাজিয়ে নিতে পারেন আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা।
গুলিয়াখালী বীচে যাবার উপায়
যেহেতু এই বীচ সীতাকুণ্ডে তাই দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে প্রথমে আসতে হবে সীতাকুণ্ডে। বিভিন্ন উপায়ে ঢাকা বা চট্রগ্রাম থেকে সীতাকুণ্ডে আসতে পারবেন।
সীতাকুন্ড থেকে গুলিয়াখালী
সীতাকুন্ডের বাস স্ট্যান্ড ব্রীজের নিচ থেকে সরাসরি সিএনজি/অটো নিয়ে গুলিয়াখালি বীচের বাঁধ পর্যন্ত চলে যেতে পারবেন। গুলিয়াখালি বীচের বাঁধ পর্যন্ত জনপ্রতি অটো ভাড়া নিবে ৩০ টাকা, আর অটো রিজার্ভ নিয়ে যেতে চাইলে ভাড়া লাগবে ১৫০-২০০ টাকা। ভাড়ার পরিমাণ অবশ্যই দরদাম করে ঠিক করবেন। সীতাকুণ্ড ফিরে আসার জন্যে আগে থেকেই সিএনজি চালকের নাম্বার নিয়ে রাখতে পারেন। অথবা যাওয়া আসা সহ রিজার্ভ করে নিতে পারেন। সন্ধ্যা হয়ে গেলে অনেক সময় ফিরে আসার সময় সিএনজি/অটো পাওয়া যায় না।
থাকা ও খাওয়া
গুলিয়াখালি সি বিচে থাকা ও খাবার কোন ব্যবস্থা নেই। শুধুমাত্র সী-বিচে ছোট একটি দোকান আছে তাই প্রয়োজনে সীতাকুণ্ড বাজার থেকে সাথে খাবার নিয়ে নিন।