জাহিদ হাসান,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
টানা ৫ দিন ধরে বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের কারণে কুড়িগ্রামের চিলমারীর সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। অস্বাভাবিকভাবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ১০০টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির কারণে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে উপজেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে হাজারো মানুষ । বানভাসি মানুষের মাঝে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে।
বন্যার পানি নেমে যেতে না যেতে আবারো পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সদ্য ঘরে ফেরা মানুষজন আবারো বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে বাঁধসহ বিভিন্ন স্থানে। দুই দফা বন্যার কবলে পরেও অনেকের মেলেনি ত্রান সহায়তা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, (মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত) ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৯৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
আকস্মিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে নদীর তীরবর্তী এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল। রাস্তাঘাট তলিয়ে প্রায় ১০০টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেছে। নিম্নাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী মানুষজন প্রায় এক সপ্তাহের অধিক সময় ঘরবাড়ি ছেড়ে বাঁধসহ বিভিন্ন উঁচু স্থানে ঠাঁই নেয়ার পর সদ্য ঘরে ফিরতে না ফিরতে আবারো পানি বৃদ্ধি ফলে ঠাঁই নিতে শুরু করেছে বাঁধ ও উঁচু স্থান গুলোতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বৃষ্টিতে ভিজে রমনা খামার এলাকায় বাঁধে অস্থায়ী তাবু তৈরি করতে ব্যস্ত রওশনারা, আঃ খালেকসহ অনেকে ।
তাদের সাথে কথা বলতেই আবেগপ্লুত কন্ঠে বলেন ভাই হামার তো কাইয়ো নাই ১০দিন থাকি ঘরবাড়ি ছাড়ি বাঁধের আাস্তাত আছি । বাড়ী যাবার ধরি ফির পানি বাড়া শুরু হইলো আবার ঘরবাড়ি তলে গেল, কি আর করমো ফিরো এই বান্দের আস্তাত থাকার জন্য তাবু টাঙ্গিতেছি।
বানভাসি অনেকের অভিযোগ দুই দফা বন্যায় ১০ দিন থেকে পানিতে ভাসলেও এখনো কেউ খবর নেয়নি। কর্মহীন হয়ে থাকায় অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের ।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ত্রাণ পরিমানে কম থাকায় সকলকে দেয়া সম্ভব হয় নি। তবে আমরা সবসময় খোজখবর রাখছি বানভাসিদের।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ বলেন, আমি বন্যা এলাকাগুলো পরিদর্শন করতেছি ইতোমধ্যে চরের আশ্রয়নগুলোতে আশ্রয় নেয়া মানুষদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। ধারবাহিকতা ভাবে সকল বানভাসীদের ত্রাণ এর আওতায় আনা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।