আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
কূটনীতিকরা বুঝতে পারছেন লাদাখের দু’ছটাক জমি দখল করে নেওয়া বেইজিংয়ের লক্ষ্য নয়। ভারতের উপর চাপ তৈরিই উদ্দেশ্য। তাই পাল্টা চাপের কৌশল নিয়ে চীনের উদ্দেশে যেমন সামরিক চোখ রাঙানি চলছে, তেমনই অর্থনৈতিক দিক থেকে বেইজিংকে চাপে ফেলার কৌশলও নিয়েছে নয়াদিল্লি। সমস্ত চীনা অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা আসলে প্রতীকী পদক্ষেপ। নয়াদিল্লির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হলে ভারত মহাসাগর দিয়ে চীনা বাণিজ্যও যে ঝুঁকির মধ্যে পড়বে-সেই বার্তাও দিতে শুরু করেছে সাউথ ব্লক।
কিন্তু তা যেমন ঠিক তেমনই এও ঠিক যে সার্বিক পরিস্থিতিতে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমিত করা গেলে দু’দেশের পক্ষেই তা ভাল। তাই লাদাখ সীমান্তে ভারত-চীন কোর কমান্ডার স্তরে বৈঠক চলছে। তৃতীয় দফার বৈঠকে স্থির হয়েছে উত্তেজনা প্রশমনে দুই দেশ কী অবস্থান নেবে। কীভাবে সীমান্তে সেনা উপস্থিতি কমাবে এবং উত্তেজনা কমিয়ে শান্তি স্থাপন করবে।
কিন্তু সেনাবাহিনী সূত্রে বলা হচ্ছে, সীমান্তে উত্তেজনা যদি সত্যিই কমে তা হলে তা ধাপে ধাপে কমবে। সমঝোতা অনুযায়ী চীন সত্যি কোনো পদক্ষেপ করছে কিনা তা দেখা হবে। তার ধারাবাহিকতা থাকছে কিনা তা কম করে ৭২ ঘণ্টা ধরে পর্যবেক্ষণ করা হবে। সে ব্যাপারে নিশ্চিত হলে তবেই ভারত উত্তেজনা কমানোর ব্যাপারে সদর্থক পদক্ষেপ করা শুরু করবে। কারণ এ সব ব্যাপারে কমিউনিস্ট ও তার লাল ফৌজের বিশ্বাসযোগ্যতার বড় ঘাটতি রয়েছে।
দু’দেশের সেনাবাহিনীর কোর কম্যান্ডার স্তরে বৈঠক হয়েছে। তাতে স্থির হয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাকে দুই দেশই মর্যাদা দেবে। দুই দেশের বাহিনী নিজেদের মধ্যে অন্তত ১০০ মিটারের তফাৎ রেখে টহলদারি চালাবে। প্যাংগং লেকে দুই দেশের টহলদারি বাহিনীর নৌকো পরস্পরকে ধাক্কা মারবে না কিংবা একজনের টহলদারি জিপ অন্য বাহিনীর জিপকে ধাক্কা দেবে না ইত্যাদি।
বাস্তব হল, তৃতীয় দফার আলোচনার পরেও সমঝোতা সূত্রের বাস্তবায়ণের কোনো লক্ষণ এখনও পিপলস লিবারেশন আর্মির মধ্যে দেখা যায়নি। সেনা কর্মকর্তাদের মতে, আসলে উত্তেজনা কমাতে এখন অনেক সময় লাগবে। তা ছাড়া যে ধরনের চড়া সুরে কূটনৈতিক দ্বৈরথ চলছে, তাতে উত্তেজনা এখনই কমার কথাও নয়। কে আগে চোখের পলক ফেলে সেটাই এখন দেখার।