
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতির নেতৃত্বে সাংবাদিককে হত্যাচেষ্টা,থানায় মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সংবাদ প্রকাশের জেরে টাঙ্গাইলে সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে মারধর এবং হত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মীর্জা আনোয়ার হোসেন ও তার ছেলের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) রাতে টাঙ্গাইল পৌর শহরের আকুর টাকুর পাড়া হাউজিং মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় মাসুদ গুরুত্বর আহত হয়।পরে স্হানীয়রা তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এঘটনায় রাতেই সদর থানায় টাঙ্গাইল জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মীর্জা আনোয়ার হোসেন ও তার ছেলেসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩-৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চ্যানেল ২৪ এর ক্যামেরাপার্সন, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এবং টাঙ্গাইল থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল টিনিউজবিডি ডটকমের স্টাফ রির্পোটার।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় মাসুদ তার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে একাই টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলো।পথে আকুর টাকুর পাড়া হাউজিং মাঠ এলাকায় পৌঁছালে টাঙ্গাইল জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মীর্জা আনোয়ার হোসেন এবং তার ছেলে মির্জা সিয়াম আনোয়ার বিশালসহ আরো সাতআটজন তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে।এ সময় সাংবাদিক মাসুদ কি ব্যাপারে তার গতিরোধ করা হলো জানতে চায়। এতে আসামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মীর্জা আনোয়ার হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন- মোটরসাইকেল চুরির মামলায় আমার ছেলে মীর্জা বিশাল গ্রেফতার হয়েছিল। তুই সেই সংবাদ কেন করেছিলি।এ কথার পরপরই মীর্জা আনোয়ার হোসেনের নির্দেশে তার ছেলেসহ ৫ থেকে ৬ জন প্রথমে মাসুদকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। মাসুদ গালিগালাজ করতে মানা করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মাসুদকে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। একপর্যায়ে মির্জা সিয়াম আনোয়ার বিশালের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাসুদের মাথায় আঘাতের চেষ্টা করে। এ সময় মাসুদের কাছে থাকা নগদ ১৫ হাজার টাকা নেয় এবং মোটরসাইকেল ভাংচুর করে।পরে মাসুদের ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা মাসুদকে উদ্দেশ্য করে বলে ‘পরবর্তীতে সুযোগ পেলে আরো মারধর করা হবে এবং হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে।’পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাংবাদিক মাসুদকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওই রাতেই টাঙ্গাইল জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মীর্জা আনোয়ার হোসেনসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩ থেকে ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিরা হলো- জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মীর্জা আনোয়ার হোসেনের ছেলে মির্জা সিয়াম আনোয়ার বিশাল,মোহাম্মদ রাফি এবং মোহাম্মদ রাকিব।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন,ছিনতাই ও মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মীর্জা আনোয়ার হোসেনের ছেলেসহ দুইজনকে চুরির মামলায় গ্রেফতার করে সদর থানা পুলিশ। এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ গত বছরের ১ মে করেছিলাম। এরই জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মীর্জা আনোয়ার হোসেনে নির্দেশে আমাকে হত্যার চেষ্টা এবং মারধর করা হয়। পরে আমি স্থানীয়দের সহযোগিতায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই।সেখানে চিকিৎসা নিয়ে রাতেই সদর থানায় মামলা দায়ের করেছি।আমি এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেফতার এবং উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।
এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও টাঙ্গাইল সদর থানার এসআই মোরাদুজ্জামান বলেন, সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে কয়েক জায়গায় আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হয়েছে।
এদিকে সাংবাদিক মাসুদের উপর হামলার ঘটনায় টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলাসহ কর্মরত সাংবাদিকরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা এ ঘটনায় আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি করেন।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply