টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের টঙ্গীর শিলমুন মধ্যপাড়া এলাকায় একটি বসত বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সকাল ১০ ঘটিকার সময় শিলমুন মধ্যপাড়া এলাকায় জাহানারা জহিরের বাড়িতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মধ্য পাড়ার স্থানীয় মৃত হারুন অর রশিদের স্ত্রী মোমেলা আক্তারের সাথে মোসা: জাহানআরা জহিরের দীর্ঘদিন যাবত জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এ বিষয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। এই জমি সংক্রান্ত ঘটনার জেরে আজ সকালে মোমেলা আক্তার ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জাহানারার বাড়িতে হামলা চালায় এবং বাড়ি থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা, ১টি এসি ও ৫ ভরি স্মর্ণালংকারসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে যায়। এছাড়া সন্ত্রাসীরা বাড়ির প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এ ব্যাপারে জাহানারা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, আমার ছেলে তরিকুল ইসলাম বাবান গত ১৫দিন যাবত ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আজ সকালে আমার ছেলেকে দেখার জন্য আমি হাসপাতালে যাই। এ সময় আমার মেয়ে মোবাইল ফোনে জানায় প্রায় এক শতাধিক সন্ত্রাসী নিয়ে মোমেলা আক্তার আমাদের বাড়িতে এসেছে। সন্ত্রাসীরা বাড়িতে ঢুকে আমার খালাতো ভাই সবুজকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। কিন্তু সবুজ একজন স্টোকের রোগী। সে কথা বলতে পারে না। এ সময় তারা আমার মেয়ে রুমানা জহির রিমিকে অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখিয়ে বলে তোদেরকে এই বাড়ি থেকে বের করে দিব। এখন ঘরে কি আছে আমাদের জন্য রান্না কর, আর বিদায়ের জন্য প্রস্তুতি নে! সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়িতে থাকা শিশু বাচ্চা আয়ান ও তনু চিৎকার করতে থাকে। সন্ত্রাসীরা বাড়িতে থাকা আমাদের ড্রয়িং রুমের এসি খুলে নিয়েছে এবং ঘরের সকল আসবাবপত্র বাড়ির বাহিরে বের করে নিয়ে যাচ্ছে। মেয়র কথা শুনে আমি দ্রুত ৯৯৯ ফোন দিলে তারা স্থানীয় টঙ্গী পূর্ব থানাকে অবহিত করতে বলে। আমি তাৎক্ষণিক নিজেই থানায় যাই, থানা থেকে এস আই নাজিরকে সাথে নিয়ে আমার বাড়িতে গিয়ে দেখতে পাই বাড়ির সকল আসবাবপত্র ভাংচুর করে বাহিরে তছনছ করে রেখেছে এবং পুলিশের উপস্থিতিতেই সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে বলতে থাকে তুই আমাদের কিছুই করতি পারবি না, পারলে করে দেখা। পুলিশ এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতিতেই মোমেলা আক্তার বাড়ি থেকে মালামাল বের করার কথা স্বীকার করেন। এছাড়াও মোমেলা আক্তার তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা আমার বাড়ির গেইটে সদ্য লাগানো একটি সাইনবোর্ড লাগানোর কথা স্বীকার করে এবং সকলের সম্মুখে সেই সাইনবোর্ড পুর্নরায় খুলে নেয়। এ সময় পুলিশ আমাকে থানায় গিয়ে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন এবং সন্ত্রাসী মোমেলা ও তার বাহিনীদের দিয়েই লাগানো সাইনবোর্ড খোলায় এবং থানায় বসে মিমাংশার পরামর্শ দেন। বর্তমানে আমি এবং আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা মোমেলা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি থানা এবং স্থানীয় কাউন্সিলর মো: সাদেক আলীকে জানিয়ে আমার জমি দখল নিতে এসেছি। এই জমির প্রকৃত মালিক আমি। এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক এসআই মো: নাজির জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে মোমেলা আক্তার ও অসংখ্য লোকজন দেখতে পাই। মোমেলা আক্তার বাড়ি দখল ও সন্ত্রাসী দ্বারা ঘরের মালামাল বের করা ও বাড়ির সামনে সাইবোর্ড লাগানোর কথা স্বীকার করেছে। তবে মালামাল লুটপাট হয়েছে কিনা তা অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যাবে। এ বিষয়ে কাউন্সিলর মো: সাদেক আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি হাসপাতালে ছিলাম। বাড়ি দখল ও লুটপাট সংক্রান্ত কোন বিষয়ে আমি অবগত নই। এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো: আমিনুল ইসলাম জানান, বাড়ি দখল ও লুটপাটের ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে ৯৯৯ এর মাধ্যমে আমি জানতে পারি শিলমুন এলাকায় এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে। উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।