হাসনাত তুহিন ফেনী থেকেঃঃ
বন্যার পানিতে ভাসছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা। বিভিন্ন উপজেলা থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে আসতে নৌকা ছাড়া কোন উপায় নেই। হাজার হাজার মানুষ এখন ও পানি বন্দী অবস্থায় রয়েছেন। কৃষকের গোলা থেকে হাজার হাজার টন ধান বেসে গেছে বন্যার স্রুতে। এছাড়াও বন্যার পানিতে গবাদিপশুর প্রধান খাদ্য হাজার হাজার টন খর বন্যার স্রুতে বেস যাওয়ায় এবং ঘর বাড়ি ভেঙ্গে যাওয়া পরিবার পরিজন ও গরু, মহিস ও ছাগল নিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন সুনামগঞ্জ জেলার কয়েক লক্ষ মানুষ ।
এদিকে, বিশুদ্ধ পানীয় জল, পশু ও গুখাদ্যের অভাব তীব্রতর। কারো কারো বসতভিটায় এখন ও পানি। চুলা বসানোর জায়গা নেই। নদী-খালে প্রচন্ড স্রোত। ভারত থেকে আগত পাহাড়ি ঢলে বসতভিটা ভাঙনের শিকার। সুনামগঞ্জ জেলার বৃহত্তর দেখার হাওরের বিশাল জলরাশীর উত্তাল তরঙ্গের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত মানুষের বসত ভিটা।
ঘরের ভিতর আশ্রয় নেওয়ার মতো অবস্থা নেই। কারো ঘর নেই, কারো ঘরের বেড়া নেই, কারো ঘরের চাল(ছাদ) নেই। র্নিগুম রাত যাপন করছে শত শত গ্রামের হাজার হাজার পরিবারে নারী, পুরুস ও শিশুরা। এমতাবস্থায়, দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বন্যা দুর্গত এলাকার বিপদগ্রস্ত মানুষের কল্যানে মানবতার উপহার নিয়ে ফনী জেলা ও নোয়াখালী জেলা শহর থেকে এক দল তরুন যুবক কে সাথে নিয়ে আবারো বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফেনী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসনাত তুহিন ও বাংলাদেশ সেলস্ অফিসার এসোসিয়েশ ফেনী জেলার শাখার প্রধান উপদেষ্টা রেজাকুল হায়দার চৌধুরী সুজন, ফেনী সদর উপজেলার সভাপতি আবদুল হাকিম সুমন,সাধারণ সম্পাদক সজিব দাস,ছাগলনাইয়া উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান,সোনাগাজী উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল,নোয়াখালী জেলার প্রধান আহ্বায়ক মনির আহম্মদ, সদস্য সোহেল,সিলেট জেলার অন্যতম সদস্য মনির হোসেন,স্থানীয় সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।
৩০ জুন ২০২২ইং বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় ফেনী থেকে রেল যোগে সিলেটর উদ্দেশ্যে ছুটে আসেন তারা। ১জুলাই শুক্রবার সকালে সিলেটে পৌছে শহরে খালিঘাট এলাকা থেকে, ৪কেজি চাল, ১কেজি ডাল, ৫০০গ্রাম তৈল, ১ কেজি আলো, ১কেজি পিয়াজ, ১কেজি ময়দা, ১প্যাকেট বিস্কুট ও ৪ টি করে ওরস্যালাইন সহ খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করে তারা নিজেরাই প্যাকেট তৈরি করেন। পরে সিলেট শহরের হাতিম আলী (রঃ) মাজার মসজিদে জুম্মার নামাজ শেষে সিলেট জেলার গোয়াইন ঘাট উপজেলার বড়বন হাওর ও রাধানগর গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১শ” ৭০টি বন্যা দুর্গত পরিবারের মানুষে হাতে উপহার হিসেবে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন।
বিএমএসএফ নেতা হাসনাত তুহিন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কালে স্হানীয় একজন মসজিদের ইমাম ও স্থানীয় সাংবাদিকের হাতে নগদ অর্থ সহ খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন। এছাড়াও ত্রাণ বিতরণ কালে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের একটি মেয়ের সাথে কথা বলে জানতে পারেন,মেয়েটি অর্থের অভাবে এসএসসি পরিক্ষা দিতে না পারায় পড়াশুনা প্রায় বন্ধের অবস্থা। এসব কথা শুনে হাসনাত তুহিন স্থানীয় ওয়াব আলীকে মেয়েটির দায়িত্ব নিতে বলেন এবং হাসনাত তুহিন ও দায়িত্ব নিবেন বলে জানিয়েছেন।
এ সময় স্থানীয় মেম্বার প্রার্থী ওয়াব আলী, সওকত মিয়া, মসজিদে ইমাম সহ লোক উপস্থিত ছিলেন।
পরে ঐ দিন রাত ১১টায় সিলেট কদমতলি রেলষ্টেশনে এসে দেখেন চট্রগ্রামের ট্রেন চলে গেছে রাত ৮টায়। কিন্তু অনেকেই প্রাইভেট কোম্পানীতে জব করার কারনে তাদেরকে যেতেই হবে। তাই রাত ১২টায় এনা বাস কাউন্টার থেকে অধিক দামে টিকিট ক্রয় করে নিজ এলাকার উদ্দেশ্যে যাত্র করেন মানবতার ফেরিওয়ালা এসব যুবকগন।
উল্লেখ্য এর আগে বন্যার প্রথম দিকে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসনাত তুহিন এর নেতৃত্বে হাসিনা সামাদ ফাউন্ডেশনের একদল যুবক গত ১৭ ও ১৮ জুন সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে চিরা, মুড়ি, গুড়, পানি, কলা, বিস্কুট, সেলাইন, লাইটার ও মোমবাতি বিতরন করেন ।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসনাত তুহিন ও বাংলাদেশ সেলস্ অফিসার এসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা রেজাকুল হায়দার চৌধুরী সুজন বলেন, যে কোন দুর্যোগে সিলেট ও সুনামগঞ্জের মানুষের পাশে ফেনীজেলা ছিলো, আগামীতেও ফেনী জেলাবাসীর পক্ষ থেকে সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..