নওগাঁর সাপাহারের সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্র থেকে মঙ্গলবার সকালে আরবী ২য় পত্র পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ৫৯ জন ভূয়া দাখিল পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রথমে তাদের আটক করা হলেও পরবর্তীতে আটককৃতদের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ওই মাদ্রাসার প্রধানদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন।
ভূয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানো মাদ্রাসাগুলো হলো, সাপাহারের সিমুলডাঙা দাখিল মাদ্রাসা (সদ্য এমপিওভুক্ত), মানিকুড়া দাখিল মাদ্রাসা (সদ্য এমপিওভুক্ত), বলদিয়াঘাট দাখিল মাদ্রাসা (সদ্য এমপিওভুক্ত), পলাশডাঙা দাখিল মাদ্রাসা, দেওপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, আলাদিপুর দাখিল মাদ্রাসা, তুলসিপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, আন্ধারদীঘি দাখিল মাদ্রাসা। এরমধ্যে সদ্য এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা ৩ টি এবং ননএমপিওভুক্ত মাদ্রাসা ৫টি।
কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে আরবী ২য় পত্র বিষয়ে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কিছু ভূয়া পরীক্ষার্থী এই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন সচিবের এমন নির্দেশে কক্ষ পরিদর্শকগণ খাতা স্বাক্ষর করার সময় বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে কেন্দ্র সচিবকে জানান। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে কেন্দ্র সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে সাথে সাথেই তিনি কেন্দ্রে অভিযান চালান। এসময় শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র, রেজিষ্ট্রেশন কার্ড, ছবিসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু যাচাই-বাছাই করেন। যাচাই-বাছাই শেষে এই ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে সনাক্ত করেন।
তারা আরও বলেন, এই কেন্দ্রে ৪০ টি মাদ্রাসার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ৮৯৮ জন পরীক্ষার্থী এবারে পরীক্ষা দিচ্ছেন। এরমধ্যে সিমুলডাঙা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১১ জন, পলাশডাঙা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৮ জন, দেওপাড়া সিংপাড়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৩ জন, আলাদিপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১ জন, তুলসিপাড়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৪ জন, বলদিয়াঘাট দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২ জন, আন্ধারদীঘি দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৭ জন, মানিকুড়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৩ জন ভূয়া পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে এসে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। পরবর্তীতে তাদের ছেড়ে দিলেও প্রকৃত পরীক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
এবিষয়ে কেন্দ্র সচিব মো. মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, আমি গোপন সূত্রে জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করি। এরপর ইউএনও স্যার ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্যার এসে কক্ষ পরিদর্শকদের সহায়তায় এই ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীদের সনাক্ত করেন। এরপর তাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকদের নিকট হস্তান্তর করা হয় এবং ওই ৮টি মাদ্রাসার প্রধানের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সেই মামলা দায়ের করার বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন বলেন, যাচাইয়ের পর ৫৯ জন ভূয়া পরীক্ষার্থী পাওয়ায় তাদের কক্ষ পরিদর্শক বহিষ্কার করেছেন এবং ওই ৮টি প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে কেন্দ্র সচিব নিয়মিত মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।