জয়পুরহাট,জেলা প্রতিনিধিঃ-
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে নতুন কৌশলে দাদন ব্যবসায় জমজমাট বাণিজ্য চলছে। সমবায় সমিতির নামমাত্র একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে অন্তরালে চলে চড়া সুদের জমজমাট বাণিজ্য। দেখেও দেখেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ঋণ বিতরনের নামে ঋণ গ্রহীতাদের থেকে নেওয়া হয় ফাঁকা স্ট্যাম্প ও ফাঁকা ব্যাংকের চেকের পাতায় স্বাক্ষর। অতিরিক্ত সুদ দিতে অপারগতা স্বীকার করলে ফাঁকা স্ট্যাম্প ও ব্যাংকের চেকে লেখা হয় লক্ষ লক্ষ টাকা।.
মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হয় ঋণ গ্রহীতাদের। দাদন ব্যবসায়ী ও সমবায় সমিতির এমন বেড়াজালে জড়িয়ে নিজেদের সর্বস্ব বিক্রি করেও দাদন ব্যবসায়ীদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ঘরছাড়া অনেকেই। সম্প্রতি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার্ ও উপজেলা সমবায় কর্মকতার্র কাযার্লয়ে অভিযোগ সূত্রে এ তথ্য পাওয়া যায়।.
অনুসন্ধানে জানাগেছে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ৩ শতাধিক সমবায় সমিতির রেজিস্ট্রেশন করলেও বর্তমানে চালু আছে ৩২ টির মত। অল্প সংখ্যক সমিতি চালু থাকলেও কেউ কেউ মানছেন না সমবায় সমিতির নীতিমালা। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে চলে ঋণ বিতরন ও কিস্তি আদায়।
উপজেলা সমবায় কর্মকতার্রা কাযার্লয়ে অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, মোহাম্মদপুর ইউপি’র নন্দিগ্রাম এলাকার আবু রায়হান নওশাদ চাঁনপাড়া প্রগতি গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির থেকে ৫ লক্ষ টাকা কিস্তিতে ঋণ গ্রহন করে। এখন পর্যন্ত ৮ লক্ষ ২০ হাজার টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করলেও পুনরায় তারা ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। ঋন গ্রহনের সময় অগ্রণী ব্যাংক আওলাই শাখার ৩ টি ফাঁকা চেক, জমির দলিল ও ৩শ টাকার ফাঁকা স্ট্যম্পে স্বাক্ষর নেয়। এখন কাগজপত্র ফিরিয়ে দেয়না। উল্টা মামলার ভয়ও দেখায়। .
একই অভিযোগ উপজেলার আওলাই ইউপি’র বয়রা গ্রামের ফজলুর রহমান তিনি ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে। ঋন গ্রহনের সময় অগ্রণী ব্যাংক আওলাই শাখার ৩ টি ফাঁকা চেক ও ৩শ টাকার ফাঁকা স্ট্যম্পে স্বাক্ষর নিয়েছিল। প্রতি মাসে কিস্তিতে ৩ বছরে ১০ লক্ষ ৮ হাজার টাকা পরিশোধ করলেও ৫ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা পাওনার দাবি করে পুনরায় অফিসে ডেকে নিয়ে ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেয়। .
অভিযোগের বিষয়ে চাঁনপাড়া প্রগতি গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালক আসাদুজ্জামান মানিক বলেন, আমাদের বিষয়ে যে অভিযোগ হয়েছে তা সঠিক নয়। আমরা সমিতির লিগালওয়ে কাগজপত্রের মাধ্যমে ঋণ দিয়েছি।
এছাড়াও উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার্র কার্যালয়ে অভিযোগ থেকে জানাযায়, পাঁচবিবি পৌর শহরের রাধাবাড়ি এলাকার ওপেন ওঁড়াও নামে আদিবাসী এক যুবক শফিকুল ইসলাম নাম এক দাদন ব্যবসায়ীর থেকে ২৮ হাজার টাকা নিয়ে ৩ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেও শোধ হচ্ছেনা ২৮ হাজারের ঋণ। উল্টা মামলার হুমকি দিচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে দাদন ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার নামে যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা। অপরদিকে একই উপজেলার শালাইপুর গ্রামের মোস্তফা নামে এক দাদন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেও রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। যা আগামী প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হবে।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা লুৎফুল কবির জানান, চাঁনপাড়া প্রগতি গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।.
উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরমান হোসেন বলেন, ওপেন ওঁড়াও নামে আদিবাসী এক যুবক লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে তিনি বলেন।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..