লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় প্রেমের বিয়ে মেনে না নেওয়া গ্রাম পুলিশসহ স্বামীর বাড়িতে গেলে শশুর শাশুড়ীর নির্মম নির্যাতনের স্বীকার হন মোতাহারা আক্তার সাথী (১৯) নামে এক গৃহবধূ। প্রতিবাদ করায় এসময় পাভেল হোসেন নামে এক গ্রাম পুলিশও আহত হয়।
শনিবার (৪ জুলাই) রাত ৮ দিকে উপজেলার মধ্য গড্ডিমারী ৯ নং ওয়ার্ড এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। আহত দুজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। এ ঘটনায় গ্রাম পাভেল পুলিশ বাদী হয়ে ৪ জনের নামে হাতীবান্ধা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
থানায় করা অভিযোগ ও আহতদের কাছ থেকে জানা যায়, উপজেলার মধ্য গড্ডিমারী এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে মনিরুজ্জামান সুমন (২২) প্রেম করে গত ৫ জানুয়ারী ময়মনসিংহে পালিয়ে বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী নীলফামারীর ডোমার উপজেলার দক্ষিণ ঝুনাগাছ (চাপানী) এলাকার মমতাজ এর মেয়ে মোতাহারা আক্তার সাথীকে। সেখানে একমাস থাকার পর করোনা পরিস্থিতির কারনে সুমন সাথীকে নিয়ে এসে শশুর বাড়ীতে উঠে। কয়েকদিন পর সুমন তার বাবা-মাকে ম্যানেজ করে সাথীকে বাড়িতে নিয়ে আসবে বলে চলে এসে সকল প্ররকা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এভাবে ৭ মাস অতিবাহিত হলে ৪ জুলাই সাথীর পরিবার বিষয়টি গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান ডাঃ আতিয়ার রহমানকে জানান।
চেয়ারম্যান সাথীকে তার শশুর বাড়ীতে রেখে রাখার জন্য গ্রাম পুলিশ পাভেল হোসেনকে পাঠিয়ে দেয় কিন্তু মনিরুজ্জামান সুমনের পিতা মোঃ রফিকুল ইসলাম এ বিয়ে মানবেনা বলে সাথীকে বেধড়ক মারধোর করে আহত করেন। এসময় গ্রাম পুলিশ পাভেল হোসেন বাধা দিলে তারা গ্রাম পুলিশকে বেধড়ক মারধোর করে আহত করেন। পরে স্থানীয়রা সাথী ও গ্রাম পুলিশ পাভেলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেন। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন আছে। পরে রাতে গ্রাম পুলিশ পাভেল হোসেন বাদী হয়ে ৪ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এদিকে গ্রাম পুলিশকে বেধড়ক মারধোরের ঘটনায় অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত সকল প্রকার কর্মবিরতি ঘোষণা করেন গড্ডিমারী ইউপি সকল গ্রাম পুলিশ।
তবে মনিরুজ্জামান সুমনের পিতা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গ্রাম পুলিশ পাভেল হোসেন আমার বাড়ির গেটের দরজা বেঙ্গে মেয়েটিকে বাড়িতে ঢুকিয়ে দিতে চেয়েছিলো। আমরা তাদেরকে মারি নাই উল্টো তারাই আমাদেরকে মারধর করেছে।
গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান ডাঃ আতিয়ার রহমান বলেন, রফিকুলের ছেলে মাসুম মেয়েটিকে বিয়ে করে তার শশুর বাড়ীতে রেখে আসে। তারা এবিষয়ে আমাকে অভিযোগ করলে গ্রাম পুলিশ পাভেলসহ মেয়েটিকে তার শশুর বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়া হয় কিন্তু রফিকুল তার ছেলের বউকে বাড়িতে ঢুকতে না দিয়ে উল্টো মেয়েটিসহ গ্রাম পুলিশকে মারধর করে।
হাতীবান্ধা থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি উমর ফারুক বলেন, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপুর্ব আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।