সালেক আহমেদ পলাশ: নরসিংদীতে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীদের দখলে থাকা খাস জমি উদ্ধারে তৎপর হয়ে উঠেছে প্রশাসন। বিগত এক মাসে শিল্পশহর মাধবদী ও নরসিংদী শহরসহ পাশর্বর্তী ইউনিয়নে কোটি কোটি টাকা মূল্যের এসব খাসজমি বেদখল মুক্ত হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা। এসব খাসজমি উদ্ধার হওয়ায় সরকারের রাজস্ব বাড়াসহ ভূমিহীনদের মধ্যে জমি বরাদ্দ দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নরসিংদী সদর উপজেলার শিল্পশহর মাধবদী ও নরসিংদী পৌরসভাসহ পাইকার চর, মহিষাশুরা, হাজিপুর, চিনিশপুর, মেহেরপাড়া, কাঠালিয়া ও আমদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন মৌজায় দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে শত শত একর খাসজমি। এসব সরকারি জমি অবৈধ দখলে রেখে নির্মাণ করা হয় দোকানপাট, বাসাবাড়ি, শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের অনুমোদনহীন স্থাপনা। কোথাও কোথাও খাল ও নালা দখলের কারণে সৃষ্টি হয় পানি নিস্কাশনের প্রতিবন্ধকতাও। খাসজমি অবৈধভাবে দখলে থাকার কারণে সরকার বঞ্চিত হয়ে আসছিল রাজস্ব থেকে।সরকারি স্বার্থ, সম্পদ সম্পত্তি রক্ষা এবং সংরক্ষণের জন্য বেদখলে থাকা এসব খাসজমি উদ্ধারে তৎপর হয় জেলা প্রশাসন। পর্যায়ক্রমে পরিচালিত পৃথক এসব অভিযানে বেদখল মুক্ত হয় সরকারি জমি। জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইনের নির্দেশে খাসজমি উদ্ধারে গত ১০ আগস্ট থেকে অভিযান শুরু করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্যেট মো: শাহ আলম মিয়া। বিগত এক মাসে দফায় দফায় পরিচালিত এ উচ্ছেদ অভিযানে নরসিংদী সদর উপজেলার প্রায় ৫৫ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ১১ একর খাসজমি বেদখল মুক্ত করা হয়। এসব খাসজমি উদ্ধার হওয়ায় সরকারের রাজস্ব বাড়াসহ ভূমিহীনদের মধ্যে জমি বরাদ্দ দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন পর হলেও খাসজমি বেদখল মুক্ত হওয়ায় খুশি স্থানীয়রাও। চলমান এ অভিযানের ফলে সরকারি জমি বেদখলকারীরা আইনী প্রক্রিয়ায় বরাদ্দ নিতে বাধ্য হওয়ায় সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলে জানান তারা। নরসিংদী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্যেট মো: শাহ আলম মিয়া বলেন, অবৈধ দখলকারীরা এসব খাস জমিতে দোকানপাট, বাসাবাড়ি, মুরগীর খামার, গরুর খামার, শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের অনুমোদনহীন স্থাপনা নির্মাণ করে ভোগ দখল করে আসছিল। সরকারি স্বার্থ, সম্পদ সম্পত্তি রক্ষা এবং সংরক্ষণের জন্য বেদখলে থাকা এসব খাসজমি উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত থাকবে। নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারি জমি অবৈধ দখল মুক্ত করতে অভিযান পরিচালনা হচ্ছে। এসব খাসজমি উদ্ধারের ফলে সরকারের রাজস্ব প্রাপ্তি নিশ্চিতসহ আইনী প্রক্রিয়ায় ভূমি বরাদ্দের সুযোগ সৃষ্টি, সরকারি স্থাপনা নির্মাণ ও ভূমিহীনদের মধ্যে জমি বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হবে।তিনি আরও জানান, নরসিংদী জেলায় বিগত আড়াই বছরে খাসজমি উদ্ধার হয়েছে প্রায় ২১ একর, মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিগত দুই মাসেই উদ্ধার হয়েছে প্রায় ১৭ একর। এরমধ্যে বিগত এক মাসে সদর উপজেলায় উদ্ধার হয়েছে প্রায় ১১ একর, যার মূল্য প্রায় ৫৫ কোটি টাকা।