পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া। চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি জানিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। তবে বিক্ষোভে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং সেনা সদস্যের মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট বুহারির এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, নাইজেরিয়ার সাবেক নেতাদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকে নিহতের সংখ্যা ঘোষণা করেছেন তিনি। কিভাবে দেশের এই অশান্তি, বিশৃঙ্খলার অবসান করা যায় সে বিষয়টি নিয়েই ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এই বিক্ষোভের আয়োজন করা একটি গ্রুপ এখন লোকজনকে বাড়িতে অবস্থানের আহ্বান জানিয়েছে। নারীবাদী জোটও লোকজনকে তাদের রাজ্যের কারফিউ অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লাগোসে কারফিউ কিছুটা শিথিল করা হবে।
দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেশটির বড় শহরগুলোয় পুলিশের বিতর্কিত বিশেষ বাহিনী স্পেশাল অ্যান্টি-রবারি স্কোয়াডের (সার্স) বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বহু হতাহত ছাড়াও অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
এদিকে, নিজের দেশের জনগণকে হত্যায় নাইজেরিয়া সরকারকে দায়ী করেছেন দেশটির ফুটবলার ওডিয়ন জুড ইগহালো। সম্প্রতি টুইটারে এক ভিডিও বার্তা পোস্ট করে তিনি বলেন, ‘আমি এই সরকারকে নিয়ে খুবই লজ্জিত।’
প্রসঙ্গত, সার্স হলো নাইজেরিয়া পুলিশের একটি বিতর্কিত শাখা। এই শাখার বর্বরতার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরুর পর এই শাখাটি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার। পরবর্তীতে তা বন্ধ করে দেওয়ার পরেও বিক্ষোভ থামেনি।
গত মঙ্গলবার দেশটির বৃহত্তম শহর লাগোসে বিক্ষোভকারীদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, দেশটির নিরাপত্তারক্ষীরা কমপক্ষে ১২ জনকে হত্যা করেছে। তবে নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ডের কথা অস্বীকার করেছে।
এদিকে শুক্রবার এক ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রেসিডেন্ট বুহারি (৭৭) জানিয়েছেন, বিক্ষোভে ৫১ বেসামরিক, ১১ পুলিশ সদস্য এবং ৭ সেনা সদস্য নিহত হয়েছে। তবে প্রেসিডেন্টের ঘোষণা করা নিহতদের মধ্যে মঙ্গলবার সেনা সদস্যদের গুলিতে নিহতদের সংখ্যা অন্তর্ভূক্ত রয়েছে কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়।