আবুল হাশেমঃ
রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা নারীসহ অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার ঘটনায় ভিডিও ভাইরাল হয়। ওই ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর পরই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ওই সাংবাদিকের নাম অলিউল্লাহ। তিনি দৈনিক মুক্ত খবর ও শ্যামল বাংলা নামে দুটি পত্রিকায় কাজ করেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারী বিকালে গোদাগাড়ী ইউএনও’র বাড়ির কাজের মেয়ে সাথে অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় এলাকাবাসী তাদের আটক করেন। আটকের পর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলে তৎক্ষনাৎ ঘটনা থেকে রক্ষা পান ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান। ওই ঘটনায় সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশসহ সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল করলে এতে ক্ষিপ্ত হয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ ইউএনও। সংবাদ প্রকাশ বন্ধ না করায় চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা করেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান। কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়ায় মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করে (ওসি গোদাগাড়ী) মামলা গ্রহণ করেন রুহুল আমিন।
পহেলা মার্চ (শনিবার) গোদাগাড়ী মডেল থানায় বাদি হয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান এ মামলা করেন।
জানা যায়, ২৭ ফেব্রুয়ারী গোদাগাড়ী উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিবস্ত্র অবস্থায় নারীসহ উপজেলার আবাসিক ভবনে ইউএনওর কাজের মেয়ের সাথে হাতে নাতে আটক হন। এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসীর মধ্যে এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তা হলেন হাফিজুর রহমান। তিনি গোদাগাড়ী উপজেলার ইউএনও অফিসের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। ভাইরাল হওয়ার পরপরই তিনি সাংবাদিকদের মামলা হামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানির করার হুমকি অব্যাহত রাখেন।
২৭ ফেব্রুয়ারী ( বৃহস্পতিবার) আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টায় জনতার হাতে ঐ নারীসহ আটক হলে উপস্থিত জনগণের কাছে সম্মানের দোয়ায় দিয়ে ঐ নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন হাফিজুর। এমন মুছলেকায় সম্মানের কথা ভেবে তাঁকে ছেড়ে দেন জনগণ। পরে ভাইরাল ভিডিও ফুটেজ অপসারণ না করা হলে তিনি চাঁদাবাজির মামলাসহ সাবেক ও বর্তমান ইউএনওকে দিয়ে সবাইকে ফাঁসানো হুমকি প্রদান অব্যাহত রাখে। সংবাদ বন্ধ না হওয়ায় ১ মার্চ গোদাগাড়ী মডেল থানায় তিনি সাংবাদিকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
অপর দিকে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজশাহীর বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন সামাজিক মাধ্যমসহ সংবাদ মাধ্যমে ঘটনাত তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। সাংবাদিক নেতারা বলেন সংবাদ প্রকাশের পর সাংবাদিকের কলম বন্ধে যে লগ্ন হস্তক্ষেপ করা হলো তা সত্যি স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য অশনিসংকেত। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার না হলে কঠোর আনন্দোলনের হুশিয়ারি দেন নেতারা।
এ বিষয়ে কথা বলতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে এর আগেই তিনি বলেছেন আমি এ ঘটনায় মামলা দায়ের করবো।
গোদাগাড়ী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রুহুল আমিন বলেন, উক্ত ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত ছাড়াই মামলা কিভাবে নিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন এখন তদন্ত হবে। চাপে মামলা নিতে হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। এর আগে তিনি অভিযোগ পেয়েও অস্বীকার করেছিলেন। পরে সেই অভিযোগেই তিনি চাঁদাবাজির মামলা নেন।
বিষয়টি জানাতে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদকে ফোন করলে তিনি বলেন এটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনি কি করবেন সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। ভাইরালের বিষয়ে অফিসিয়ালি কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দেখবেন।
উল্লেখ্য, উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান ইউএনও অফিসের অনিয়ম দূর্নীতির মূলহোতা। এর আগে ১৮-৮-২৪ ইং তারিখে বিভাগীয় কমিশনারসহ জেলা প্রশাসক বরাবর তাঁর নানা অনিয়ম দূর্নীতি বিষয়ে অভিযোগ হয়। অভিযোগ হলেও তিনি স্বপদে বহাল তবিয়তে থাকেন এই নারী খেকো হাফিজুর রহমান। ওই অভিযোগেও তাঁর বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর ঘটনা তুলে ধরা হয়। চারজন ব্যক্তির স্বাক্ষরিত সেই অভিযোগ এখনো আলোর মুখ দেখেনি। তবে হাফিজুর রহমান বলছে ওই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। অভিযোগ আছে ইউএনও অফিসের সকল অবৈধ লেনদেন তাঁর মাধ্যমেই হয়। একারণে তাঁকে নানাভাবে সহযোগীতা করেন ইউএনও।
Leave a Reply