1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
পঞ্চাশ বছর আগে ঠিক এইদিনটিও ছিল সোমবার,  ১ নভেম্বর ১৯৭১ সাল
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কসবায় বিএসএফের এলোপাথাড়ি গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত! চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ৩ হাজার পিস ইয়াবা সহ আটক ১ঃ মাদক পরিবহনে নিয়োজিত মোটর সাইকল জব্দ ট্রেনঃ পৃথিবীর সবচেয়ে আন্ডাররেটেড ঘাতকের রহস্য এবং “হ্যাবিচুয়াল কনফিডেন্স” চট্টগ্রামে ১৪ পিছ বিদেশী স্বর্নের বার সহ আটক ১ সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ছেড়ে দিয়েছে আদালত আওয়ামীলিগের সময়ে আওয়ামীলিগের নেতা , বিএনপির সময়ে বিএনপির নেতা সেজে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা ! নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এলজিইডি কুমিল্লার মতবিনিময় কলেজ ছাত্র আব্দুল আলীম হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ! সাভারে বিরুলিয়ায় নিহত নারী ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা : স্বামী গ্রেফতার । ফেসবুকে মানহানিকর লেখা প্রচারের অভিযোগ এনে এক কোটি টাকার মানহানি এবং হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পঞ্চাশ বছর আগে ঠিক এইদিনটিও ছিল সোমবার,  ১ নভেম্বর ১৯৭১ সাল

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১, ২.৫০ পিএম
  • ২৯৬ বার পঠিত
সসম্পাদকীয়
স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে ‘প্রাদেশিক নির্বাচন কার্যালয়’ অবস্থিত ছিল (বর্তমান নির্বাচন কমিশন) ঢাকার শান্তিনগর এলাকার মোমেনবাগের দু’টি ভাড়া করা বাড়িতে। এর একটি বাড়ির মালিক ছিল, জিয়া মন্ত্রীসভার খাদ্যমন্ত্রী আব্দুল মোমেন খান (তিনি সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা ড. আব্দুল মঈন খানের বাবা।) পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নির্বিচার গণহত্যা ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যেসব জাতীয় সংসদ সদস্য ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যরা বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়ে মুক্তাঞ্চলে চলে গিয়েছিলেন, একাত্তরের অক্টোবর-নভেম্বরে তাদের আসন শূন্য ঘোষণা করে সেগুলোয় উপ-নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল কমিশনে।
সেই সাজানো অনৈতিক, অবৈধ নির্বাচন রুখতে ঢাকার প্রাদেশিক নির্বাচন কার্যালয়ে একাত্তরের ১ নভেম্বরে রোজাকালীন সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বে ৬ জনের একটি দুর্ধর্ষ গেরিলা দল ব্যাপক বিধ্বংসী বিস্ফোরণ ঘটান। এই গেরিলা অপারেশনের বিষয়ে আমাদের বিস্তারিত জানিয়েছেন বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা শ্রদ্ধেয় রফিকুল হক নান্টূ। সেই গেরিলা দলে ছিলেন, রফিকুল হক নান্টূ, ইকবাল সূফী, হেদায়েতউল্লাহ, লস্কর এবং বাশার।
পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর জোরালো উপস্থিতির মাঝে এই অপারেশন সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করেছিলেন নির্বাচন অফিসের বাঙালি কর্মকর্তা (বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী) শ্রদ্ধেয় আবুল কাশেম। তিনি সাদেক হোসেন খোকাকে আত্মীয় পরিচয়ে সেই অফিস ৩ দিন ধরে রেকি করতে সহযোগিতা করেছিলেন।রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটে জন উপস্থিতি অত্যন্ত কম ছিল। সে রাতের প্রবল বৃষ্টি মূলত অপারেশনের অনুকূলে সহায়ক হয়েছিল। গেরিলারা তিনজন করে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রাদেশিক নির্বাচন অফিসের দুই ভবনে বিস্ফোরক স্থাপন করেন। শুরুতেই অস্ত্র দেখিয়ে ভবনের নিরাপত্তা রক্ষীদের সবাইকে ভবন থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। প্লাস্টিক এক্সপ্লোসিভ (পি,কে) স্থাপনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে একটি ভবনের একাংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। বিস্ফোরণের মুহূর্তে চিলেকোঠায় ঘুমন্ত এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হয়েছিল। এই নিরাপত্তারক্ষীর বিষয়ে গেরিলারা আগে জানতে পারেননি।অভিযানের অন্যতম সদস্য শ্রদ্ধেয় রফিকুল হক নান্টূ আরও জানান, সফল অভিযান শেষে, দুর্ধর্ষ বীর ৬ যোদ্ধা শান্তিবাগের গুলবাগস্থ ওয়াপদা অফিসের কর্মচারীদের একটি মেসে গিয়ে আত্মগোপন করেছিলেন। সেই মেসে গিয়ে তাঁরা ডাক দিলে মেস সদস্যরা দরজা খুলে দিলে, গেরিলারা তাদের জানান, ‘কিছুক্ষণ আগে যে বিস্ফোরণ হয়েছে তা আমরা ঘটিয়েছি। আমরা মুক্তিযোদ্ধা।’ এসব শুনে তারা হতভম্ব হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের কথা শুনেছে কিন্তু এতো কাছ থেকে দেখতে পেরেই হয়তো তাদের এ অনুভূতি জন্মে। অপরিচিত মেস মেম্বাররা অনাহূত মেহমানদের যথেষ্ট সহায়তা করেন।সেই রাতের অপারেশনটির সাফল্যের উত্তেজনায় ছয় গেরিলার কেউই রাতে না ঘুমিয়ে নিজেদের মধ্যে নানা কথা বলছিলেন। উচ্চশব্দ করতে মেসের লোকজন নিষেধ করে বলেন, সামনেই ভূট্টোর পিপলস পার্টির এদেশীয় শীর্ষ নেতা মাওলানা নূরুজ্জামানের বাসা। সে কোনোভাবে জানতে পারলে ভয়াবহ বিপদ হবে। সুতরাং সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। রাতে ঘুমাতে হবে, এবং মেসের সদস্যদের ওপরে সর্বক্ষণিক খেয়াল রাখা সম্ভব নয় ভেবে আমরা তাদের বলি, আমাদের নিয়ম হলো ‘আপনাদের বেঁধে রাখবো, দু’জন অস্ত্র উচিয়ে পাহারা দেবে এবং বাকিরা ঘুমাবে। কিন্তু আপনারা যেহেতু সহযোগিতা করছেন, ধরে নিয়েছি আপনারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ, সেজন্য আমরা আপনাদের বাঁধলাম না। তবে বাইরে আমাদের আরো লোকজন পাহারা দিচ্ছে, আপনারা কিছু করতে চাইলে সমস্যা হবে।’আসলে বাইরে আমাদের কেউ ছিল না। তাদের ভয়ের মধ্যে রাখার জন্য এটা বলেছিলাম। মেসের লোকজন ছিল সত্যি ভালো। তারা খুব ভোরে আমাদের নাশতার ব্যবস্থা করেন। চলে আসবার সময় আমাদের অস্ত্র-শস্ত্র লুকিয়ে আনার জন্য ব্যাগ দিয়ে সহযোগিতা করেন।
(বিঃদ্রঃ অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে অবরুদ্ধ ঢাকায় পরিচালিত এই অন্যতম সফল ও বৃহৎ গেরিলা অপারেশনটির বিষয়ে দেশের প্রায় প্রতিটি শীর্ষ সংবাদপত্র মারাত্মক ভুল তথ্য প্রদান করে আসছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত হবার সংবাদে প্রায় প্রতিটি শীর্ষ দৈনিক লিখেছে ‘১৯৭১ সালে মে-জুন মাসে মুক্তিযোদ্ধারা প্রভিনশিয়াল ইলেকশন কমিশনের অফিসে বোমা হামলা করলে এতে ১ জন নৈশপ্রহরী মারা যায়। ফলে জুন ১৯৭১ সালে প্রভিনশিয়াল ইলেকশন কমিশনের অফিস সচিবালয়ে স্থানান্তরিত হয়।” এটি ইতিহাস বিকৃতির শামিল, এই অপারেশন সম্পন্ন হয়েছিল ১ নভেম্বর ১৯৭১। অপারেশনের সাথে যুক্ত গেরিলাদের অনেকেই আজও বেঁচে আছেন। এবং সে সময় প্রকাশিত দৈনিকে ১ নভেম্বর ১৯৭১ সাল উল্লেখ করে সংবাদটি প্রচার হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ছেলেখেলা নয়, প্রতিটি তারিখ ও ঘটনা যথাযথভাবে নিশ্চিত হয়ে উপস্থাপন অবশ্যই নিশ্চিত করা দরকার)গত ২৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হক নান্টূকে নিয়ে আমরা দাঁড়িয়েছিলাম সেই অপারেশনের স্থানে। ‘অর্ধশত বছরে এভাবে ফিরে যাওয়া হয়নি’, বলেই মন্তব্য করেছিলেন সেদিন।  আমাদের ফিরিয়ে নিলেন পঞ্চাশ বছর আগের ‘অলৌকিক’ সময়ে। দুপুরের তীব্র রোদ উপেক্ষা করে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হক নান্টূ নিয়ে গেলেন মোমেনবাগে, যেখানে ছিল তৎকালীন প্রাদেশিক নির্বাচন কার্যালয়,। ১ নভেম্বর সোমবার ১৯৭১ গেরিলা নান্টূ অংশ নেন এই অপারেশনে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা ছিলেন মূল নেতৃত্বে। বাড়িটি খুঁজে পেতে আমাদের কষ্ট হয়নি মোটেও, আমাদের আশ্বস্ত করতেই সে যেন পুরনো রূপেই দাঁড়িয়ে আছে আজও। শুধুমাত্র ভেঙ্গে যাওয়া অংশটুকু মেরামত ও ওপরের দিকে আরেকটি তল বৃদ্ধি পেয়েছে। পঞ্চাশ বছর পর, গেরিলা দাঁড়ালেন তাঁর দুর্ধর্ষ অপারেশনের স্থানে! সে মুহূর্তের উত্তেজনার অনুবাদ ভাষায় সম্ভব নয়।
২৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ২০২১, আমরা ধারণ করেছিলাম পাঁচটি গেরিলা অপারেশনের সুনির্দিষ্ট স্থান, ঢাকা কাঁপিয়ে দেয়া গেরিলা দলের সদস্যদের নিয়ে।
তথ্য কৃতজ্ঞতাঃ গেরিলা যোদ্ধা শ্রদ্ধেয় রফিকুল হক নান্টূ।ছবি কৃতজ্ঞতাঃ শ্রদ্ধেয় ইকবাল সুফী এবং কিংবদন্তী আলোকচিত্রী জালালুদ্দিন হায়দার। ছবিটি শান্তিনগরের মোমেনবাগস্থ তৎকালীন প্রাদেশিক নির্বাচন কার্যালয়ে পরিচালিত ১ নভেম্বর ১৯৭১ সালের সফল গেরিলা অপারেশন পরবর্তীতে তোলা। বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রদ্ধেয় রফিকুল হক নান্টূর সাথে স্কুল শিক্ষার্থীদের ছবিটি তুলেছেন শ্রদ্ধেয় সুহৃদ সাগর লোহানী। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews