দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ কওমী মাদ্রাসা পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামিয়া জমিরিয়া কাসেমুল উলুম মাদ্রাসায় পক্ষে-বিপক্ষে দু”গ্রুপের অস্থিরতা চরম পর্যায়ে। এক পক্ষ মানববন্ধন ও অপর পক্ষ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেন।
গত বুধবার (১ নভেম্বর) বিকালে উভয় পক্ষের কর্মসূচী পালিত হয়। ফলে কওমী মাদ্রাসা নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। মাদ্রাসার মহাপরিচালক ওবায়দুল্লাহ হামযাকে নাজেহাল ও কক্ষ ভাংচুর করে মহাপরিচালক থেকে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নিয়ে রাতের আধারে বের করার অভিযোগ ওঠে। এর পরের দিন তড়িগড়ি করে সূরার কমিটির নামে বৈঠক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। এতে মাদ্রাসার সহকারী মহাপরিচালক আবু তাহের ও নদভীকে মহাপরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই দিনে মহাপরিচালক ওবায়দুল্লাহ হামযা অনিদিষ্ট কালের জন্য মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষনা করে একটি নোটিশ প্রচার করে। গত মঙ্গলবার রাতে মাদ্রাসার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও মজলিসে শূরার সভাপতি মওলানা সুলতান জওক নদভী এক বিবৃতিতে মাদ্রাসায় হামলার নিন্দা জানান এবং সদ্য ঘোষিত মহাপরিচালক নদভীকে অবৈধ বলে দাবি করেন। জানা যায়, ২০২২ সালে ২১ জুন মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি আবদুল হালিম বুখারীর
মৃত্যুবরণ করায় তার খালি পথটিতে ২০২২ সাল ৬ জুলাই মজলিমের শূরা সিদ্ধান্ত ক্রমে ওবায়দুল্লাহ হামযা পটিয়া আল জামেয়া আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে তিনি মাদ্রাসার পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু ওবায়দুল্লাহ হামযার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাদ্রাসার শাইখুল হাদিস মুফতি আহমদুল্লাহ’র সাথে বিরোধ সৃষ্ঠি হয়। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার মধ্য রাতে মাদ্রাসার সকল গেইট বন্ধ করে লাঠিসোটা নিয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে আন্দোলান করে ছাত্ররা। মহাপরিচালক ওবায়দুল্লাহ হামযাকে অপসারনের দাবী জানায় ছাত্ররা। এসময় তারা মহাপরিচালকের বাসভবন,গাড়ি ভাংচুর চালায়। পরে দিন বুধবার ভোর ৫ টায় মহাপরিচালকে পদত্যাগে স্বাক্ষর নিয়ে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে মহাপরিচলাক ওবায়দুল্লাহ হামযা পটিয়া থানায় একটি এজাহার দেন। গত বুধবার বিকালে স্থানীয় সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে পটিয়ার থানার মোড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন, মওলানা করিম উল্লাহ, মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা আইমন, মাওলানা ইমতিয়াজ। এসময় তারা মহাপরিচালক ওবায়দুল্লাহ হামযার কার্যালয় ও বাসভবনে সন্ত্রাসী হামলা ও ভাংচুরের তীব্র নিন্দা জানান। একই দিন গত বুধবার বিকেলে মাদ্রাসায় নতুন কমিটির মহাপরিচালক আবু তাহের নদভী সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদ্রাসার শিক্ষক রেজাউল করিম আনছারী। লিখিত বক্তব্যে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, নতুন কমিটির মহাপরিচালক আবু তাহের নদভী, শাইখুল হাদিস মুফতি হাফেজ আহমদুল্লাহ, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা সামশুদ্দিন জিয়া, মাওলানা আকতার হোসেনসহ মাদ্রসার শিক্ষক ও ছাত্রবৃন্দরা।