রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
জাতীয় পার্টির মহাসচিব, বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় একটি দূর্নীতিগ্রস্থ মন্ত্রণালয়। এর দায়িত্ব যিনি থাকেন তিনি দূর্নীতির আশ্রয় নেন। এ মন্ত্রণালয়ের নিচ থেকে উপর পর্যায় পর্যন্ত দূর্নীতি রয়েছে।
সোমবার দুপুরে রংপুর গঙ্গাচড়ার তিস্তা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
রাঙ্গা বলেন, নদী নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা রয়েছে। তিনি বুঝেছেন নদী শাসন করতে হবে। তাই গোটা দেশে নদী শাসনের জন্য সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। কিন্তু পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দূর্নীতির কারণে সেটি করা সম্ভব হচ্ছে না। দূর্নীতির কারণে প্রতি বছর বন্যা ও নদী ভাঙ্গন হচ্ছে। তারা সঠিক ভাবে নদী খনন করছে না। সঠিকভাবে ড্রেজিং করলে পানি সঠিক জায়গা দিয়ে প্রবাহিত হতো এবং নতুন নতুন এলাকা বন্যা ও ভাঙ্গনের শিকার হতো না। দেশে হাজার হাজার মাইল আবাদী জমি বাড়তো। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে রংপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে যে সেতুটি হয়েছে, সেটির নিচ দিয়ে তিস্তার পানি না গিয়ে বাম দিক দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
রাঙ্গা আরও বলেন, প্রতি বছর গজলডোবা থেকে পানি আসছে, বালু-পলি আসছে। এতে করে তিস্তা নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদী ও পাড়ের উচ্চতা ২ থেকে ৩ ফুটের ব্যবধান থাকে। ভারত গজলডোবার দরজা খুলে দেয়ার সাথে সাথে তিস্তায় ৭ থেকে ৮ ফুট উঁচু পানি চলে আসে। এতে করে হঠাৎ করেই মানুষের ঘরবাড়ি ডুবে যায়। চরের মানুষ সারা বছর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে সঞ্চয় করে তা তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এবারও ৩ বার পানি বেড়েছে। গজল ডোবা বাঁধ নিয়ে ভারতের সাথে আলোচনা ছাড়া তিস্তা নদীরপাড়ের মানুষকে রক্ষা করা দুরুহ হবে। পানি নিয়ে আলোচনা শেষ করে চুড়ান্ত করা না হলে আমাদের তিস্তা নদীতে ডুবতে হবে ভাসতে হবে। এটি আমাদের কপালের দোষ কিংবা সরকারের ব্যর্থতা আমরা বলতে পারি। যদিও সরকারের সাথে ভারতের যথেষ্ট ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমি মনে করি পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনকার মানুষের কথা ভেবে ব্যবস্থা নেবে।
রাঙ্গা গঙ্গাচড়ার কোলকোন্দ ইউনিয়নের চর চিলাখাল ও বিনবিনার চর এলাকার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। সেই সাথে চিলাখাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ভাঙ্গন প্রতিরোধে বাঁশের পাইলিংয়ের কাজের অগ্রগতি দেখেন। চিলাখাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বিনবিনার চরে ভাঙ্গন কবলিত ৪ শতাধিক মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করেন রাঙ্গা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গা কন্যা মালিহা তাসনিম জুঁই, গঙ্গাচড়া থানার ওসি সুশান্ত কুমার সরকার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাজু আহমেদ লাল, কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রাজু, জেলা জাতীয় পার্টির নেতা খতিবার রহমান মাস্টার, মহানগর যুব সংহতির সভাপতি শাহীন হোসেন জাকিরসহ অন্যরা।