দেশে মাত্র ৪১টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনভুক্ত। আর এ দলগুলোর মধ্যে একটি বড় অংশেরই সারাদেশে নেই সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড। বেশিরভাগই এক নেতার এক দলে পরিণত হয়েছে। জেলা-মহানগর দূরের কথা, কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিও নেই তাদের। অনেকের আবার অফিস বা রাজনৈতিক কার্যালয়ও নেই। বাসায় সাইনবোর্ড ঝুলিয়েই চলছে কার্যক্রম।
এদিকে রাজধানীজুড়ে পোস্টার ব্যানার সর্বস্ব দল রয়েছে প্রায় ৮০টি। জানা গেছে, এগুলো শুধু নামেই রাজনৈতিক দল। এসব দলের কাজ মূলত রাজনীতির ব্যানারে সংঘবদ্ধভাবে বড় দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে লোক ভাড়া দেয়া। এছাড়া সচিবালয়, মন্ত্রণালয়ে লবিং তদবিরসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানায় শ্রমিকদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে চাঁদা, ধান্দাসহ নানা অপকর্ম করে অর্থ উপার্জন করা।
বড় দলের নেতারা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে সব সময় নিজের পেছনে কিছু লোক রেখে জনপ্রিয়তা জাহির করেন। এমনকি কোন নেতা কত জনপ্রিয় তাও নির্ভর করে ওইসব ছোট দল থেকে ভাড়ায় খাটা নেতাকর্মীদের ওপর।
এসব ছোট দল শুধু বড় দলের নেতাদের পেছনে ভাড়ায় মিছিল করে না, ভোট এলে বড় দলগুলোর কাছ থেকে আসনসহ নানা সুযোগ-সুবিধা আদায় করে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের কদর ছিলো। কিন্তু ভোটের পর তাদের কদর কমেছে। অন্যদিকে করোনা মহামারিতে বড়দলগুলোর কোনো কর্মসূচি না থাকায় একেবারে বেকার হয়ে পড়েছে ছোট দলের নেতারা।
রাজনৈতিক কর্মসূচির বাইরেও প্রেসক্লাব, হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত বিভিন্ন সংগঠনের সংবাদ সম্মেলনেও জনতার কাতারে বসে থাকা লোক ভাড়া দেয় ওইসব দল। এছাড়াও গার্মেন্টস ও অন্য শিল্প কারখানায় বেতন আদায়সহ নানা ইস্যুতে আন্দোলন করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে চাঁদা আদায় করাও এসব দলের কাজ। যা এখন প্রায় বন্ধ। তারপর করোনা মহামারি এসে একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে ওইসব ছোট দল ও বাম সংগঠনের অর্থ উপার্জনের সব পথ। সব মিলিয়ে অসহায় দিন কাটছে ছোট দলের নেতাকর্মীদের।
দলগুলোর মধ্যে রয়েছে- নির্দলীয় জন আন্দোলন, বাংলাদেশ সংখ্যালঘু গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ, করাপশন ফ্রি পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকান পার্টি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ ফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, বাংলাদেশ মুক্তি ঐক্য দল, বাংলাদেশ নয়া সমাজ দল, ফরওয়ার্ড পার্টি, গণ ঐক্য ফ্রন্ট (গাফ) বাংলাদেশ, বাংলাদেশ প্রগ্রেসিভ পার্টি, জনতার সংহতি, বাংলাদেশ জাতীয় তাঁতী দল, বাংলাদেশ জাতীয় দল, কৃষক শ্রমিক পার্টি, পাবলিক পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ডেমোক্রেটিক পার্টি, কোরআন ও সুন্নাহ বাস্তবায়ন পার্টি বাংলাদেশ, ডেমোক্রেটিক লেবার পার্টি, লিবারেল পার্টি বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ পিপলস্ পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পেশাজীবী ফোরাম, বাংলাদেশ জন-গণতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কৃষক শ্রমিক ঐক্যজোট, পিপলস্ রিপাবলিকান পার্টি (পিআরপি), সামাজিক রাজনৈতিক আন্দোলন, ইসলামী সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ দুনিয়া দল, বাংলাদেশ জাতীয় পিপলস পার্টি, পিপলস্ পার্টি অব বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্য আন্দোলন, পাকমন পিপলস্ পার্টি, মুক্ত রাজনৈতিক আন্দোলন, জনমুক্তি পার্টি, বাংলাদেশ হিন্দু লীগ, বাংলাদেশ রেভুলেশনারি পার্টি, ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টি, ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-স্বনির্ভর পার্টি, বাংলাদেশ আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, বাংলাদেশ দরিদ্র উন্নয়ন পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টি, জেনারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ ভূমিহীন দল, সাহসী মুক্তিযোদ্ধা জনতা ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক বাস্তুহারা লীগ, বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, লোক দল, পিপলস্ অ্যাকশন পার্টি বাংলাদেশ, সোনার বাংলা পার্টি, বাংলাদেশ সংখ্যালঘু ঐক্য ফ্রন্ট, জাতীয় জনতা পার্টি, জাতীয়তাবাদী ঐক্য মোর্চা, মুক্তিযোদ্ধা কমিউনিজম ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ জালালী পার্টি, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি প্রভৃতি।