কিন্ত মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মারুফার ব্যাক্তিস্বার্থ ও বাণিজ্যিক মনোভাব এবং কতৃপক্ষের উদাসীনতায় বিনেপয়সাতে ওই একই চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ থাকার পরেও সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাজারো প্রসুতি মা।
The Daily surjodoy
গর্ভবতী নারীরা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে প্রতি সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার নিয়মিত চেকআপে আসেন। সে হিসেবে ১ মাসেই চেক-আপ কৃত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৮ শতাধিক। সে হিসেবে মাসে নরমাল ডেলিভারী সহ সিজারের সংখ্যা কমপক্ষে ১৮০ থেকে ২০০ টি হওয়ার কথা অথচ প্রতি মাসে নরমাল ও সিজারিয়ান অপারেশনের সংখ্যা ৫০টি ও অতিক্রম করেনি। গত ৩ মাসের পরিসংখ্যানে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
The Daily surjodoy
মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ক্যাম্পাসে রয়েছে মেডিকেল অফিসার, নার্স/ ধাত্রীদের আবাসিক ভবন। সুসজ্জিত অপারেশন থিয়েটারসহ রোগীদের জন্য রয়েছে ৩০টি বেড। আরও রয়েছে বিনে পয়সায় ওষুধ সরবরাহের সুবিধা। এতকিছু সুযোগসুবিধা থাকবার পরও বেসরকারি ক্লিনিক গুলোতে যেতে বাধ্য হচ্ছে রোগীরা। এতে অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন দরিদ্র ও অসহায় মানুষেরা।পাশাপাশি সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের সুফল থেকে সেবা প্রত্যাশীদের বঞ্চিত করে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল পরিমান অর্থ। সেইসাথে চরিতার্থ করছেন নিজেদের অর্থলিপ্সু মনোবাসনার শতভাগ।
The Daily surjodoy
অনুসন্ধানে জানা গেছে,মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মারুফা শুক্রবার সারাদিন এবং সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে প্রতিদিন বিকেল ৩ টা থেকে রাত্রি ৮ টা পর্যন্ত আইডিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত চেম্বার প্রাকটিস্ করেন। নতুন রোগী বাবদ ৫শ, পুরাতন রোগীর ৪ শ টাকা ফি নেন।
The Daily surjodoy
ওই সময়কালীন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে জরুরী প্রসববেদনা জনিত কারণে আগত মুমূর্ষু রোগীদের ক্যাম্পাসে অবস্থানরত স্টাফরা রোগী ভর্তি না করে তার প্রইভেট চেম্বারে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে বিভিন্ন পরিক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে সময়ক্ষেপণ করে ওই ক্লিনিকেই সিজার করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।অফিস চলাকালীন সময়ে আগত রোগীর ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতিতে সময়ক্ষেপণ করা হয়। পরে অফিস সময় শেষ হয়েছে অথবা অজ্ঞানের ডাক্তার না থাকার অজুহাতে রোগীকে বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যেতে বাধ্য করা হয় স্বজনদের। এছাড়াও গোপন সমঝোতার মাধ্যমে অফিসে বসেই ক্লিনিক ও দালালদের মাধ্যমে নিয়ে আসা রোগীদের দেখে ব্যবস্থাপত্র দেন তিনি।
জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে এই তিন মাসে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ডাঃ মারুফা সিজার করেছেন মাত্র ১৯ টি। অথচ চাকুরী বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে তিন মাসে বেসরকারি ক্লিনিকে ডি এন্ড সি সহ সিজার করেছেন ২২৩টি।
The Daily surjodoy
এই অপারেশন গুলির মধ্যে বেশকিছু সিজার অফিস সময়ের মধ্যে করা হয়। এবং একই দিনে আইডিয়াল ক্লিনিকে ৫থেকে ৭টি সিজার করার রেকর্ড রয়েছে। গত মার্চ মাসে তিনি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ৪ টি সিজার করলেও বেসরকারি ক্লিনিকে করেছেন ৮০ টি অপারেশন। এপ্রিলে মাতৃসদনে ৮ টি সিজার করলেও প্রাইভেট ক্লিনিকে করেছেন ৭৮ টি এবং মে মাসে বেসরকারি ক্লিনিক এ সিজার, হিসট্রেকটমি ও ডি এন্ড সি সহ ৬৫ টি অপারেশন করলেও মাতৃসদনে সিজার করেছেন মাত্র ৭ টি। প্রতিটি সিজারের বিপরীতে বেসরকারী ক্লিনিক থেকে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা পেয়ে থাকেন।
The Daily surjodoy
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে এ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসকের জন্য স্থায়ী কোন পদ নেই। তবে এ সমস্যা সমাধানের বিকল্প হিসেবে অনুকূলে এ্যানেস্থিয়া দেয়ার দায়িত্ব পালন করার কথা ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় কর্মরত এমওএমসিএইচএন্ডএফপি ডাঃ জি.এম আরিফের।
The Daily surjodoy
তবে একই পদে তিনি নাগেশ্বরী উপজেলারও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ ব্যাপারে ডাঃ জি.এম আরিফ জানান, সিজারের জন্য কল না পেলেতো আমার করার কিছুই নেই।
The Daily surjodoy
অফিস সময়ের পর প্রাইভেট প্রাকটিস করার বৈধতা রয়েছে জানিয়ে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মারুফা আক্তার জাহান বলেন, এ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসকের সংকট নেই। তবে নরমাল ডেলিভারির দিকেই তারা বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
The Daily surjodoy
সবেমাত্র যোগদান করার কথা জানিয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক মীর রফিকুল ইসলাম বলেন, মেডিকেল অফিসারের ক্যাম্পাসের বাহিরে প্রাইভেট প্রাকটিস করার নিয়ম নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানান তিনি।
Leave a Reply