রাশিদ আহমেদ গাজীপুর জেলা ব্যুরোচীফঃ প্রতিষ্ঠার তিন দশকে পদার্পণ করলো দেশের একমাত্র উন্মুক্ত ও দূরশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়। দেশজুড়ে বিস্তৃত ক্যাম্পাস নিয়ে শিক্ষার্থী পরিসংখ্যান বিবেচনায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়।
গাজীপুর মূল নয়নাভিরাম ক্যাম্পাস, পরিচ্ছন্ন দৃষ্টিনন্দন ভবন, পরিপাটি বিপুল গ্রন্থের সমাহারে গবেষণার উপযোগী গ্রন্থাগার, অত্যাধুনিক মিডিয়া সেন্টার, নান্দনিক উপাচার্য অফিস, লাল সিরামিকের পরীক্ষা অফিসসহ একাধিক অফিস, ই-লার্নিং সেন্টার, কৃষি গবেষণাগার, লাখ লাখ বই রাখার ওয়্যার হাউস। ৩৫ একরের মূল ক্যাম্পাস নিত্য গবেষণা, প্রকাশনা, প্রশিক্ষণ এখানকার নিত্য কাজ। ইন্টারন্যাশনাল একাডেমিক উয়িং নিয়ত সংযুক্ত বহি:বাংলাদেশ শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে, শিক্ষার্থী সেবায় ব্যস্ত সবাই।
১২টি আঞ্চলিক কেন্দ্র ও ৮০টি উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র শিক্ষার্থীদের পাঠ সামগ্রী বিতরণ, কাউন্সিলিং, ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন কাজ নিয়ে সতত একনিষ্ঠ। ৬টি স্কুল ও ১১টি প্রশাসনিক বিভাগে মূল ক্যাম্পাসে বিশাল কার্যক্রম।
৭৯টি আনুষ্ঠানিক একাডেমিক প্রোগ্রাম ও ১৯টি অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রোগ্রামে ডিসেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত ৯ লাখ ৬৫ হাজার ৮৩৮ শিক্ষার্থী।
দেশজুড়ে ১৫৫০টি স্টাডি সেন্টারে মাধ্যমিক থেকে পিএইচডি শিক্ষা পর্যায়ে পর্যন্ত শিক্ষার্থী এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করছে। ১২টি আঞ্চলিক কেন্দ্র, ৮০টি উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি তাদের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
তথ্য প্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার সুযোগ সবার জন্য অবারিত করেছে। শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা, আইন, বিজ্ঞান, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্য শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে একাডেমিক প্রোগ্রামে স্নাতক (সম্মান) এবং মাস্টার্স, পিএইচডিসহ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীরা এখান থেকে স্বল্প খরচে লেখাপড়া করে পেশাগত ক্ষেত্রে দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছে।
বেতার ও টেলিভিশনের অনুষ্ঠান, ওপেন টিভি, ওয়েব রেডিও, ওয়েব টেলিভিশন বাউবি টিউব, ফেসবুক, ই-বুক, মোবাইল এ্যাপ্স, ইউটিউবভিত্তিক বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষার্থীদেরকে অতি সহজেই পঠন পাঠন ও শিক্ষনের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
পাশাপাশি ই-লার্নিং সেন্টার, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র, ওপেন এডুকেশন রির্সোস, লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং অনলাইন এডুকেশন, অনলাইন ভর্তি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ২৬ হাজার টিউটর, ১৫ হাজার পরীক্ষক এবং প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা, কর্মকাণ্ড ইত্যাদি সফলভাবে পরিচালনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটি ভার্চুয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩৭ শিক্ষক ছাড়াও ২৮ হাজার ৯ শত ১৬ জন এ্যাডজাঙ্কট ফ্যাকাল্টি শুক্র ও শনিবার ক্লাস নিয়ে থাকেন।
গাজীপুরে ৩৫ একর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাস নয়নাভিরাম সবুজ বৃক্ষরাজি, প্রকৃতির সজীবতা, মক ভিলেজ (চিরন্তন গ্রাম), স্বাধীনতার চিরন্তন স্মারক ভাস্কর্য বিশ্ববিদ্যালয়কে এক মনোরম সুদৃশ্য ক্যাম্পাসে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২৯তম বর্ষে ২১ অক্টোবর সকালে ক্যাম্পাসে ‘স্বাধীনতা চিরন্তন’ স্মারক ভাস্কর্যের জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করেন ভিসি অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার।
একইসঙ্গে একই সময়ে দেশ জুড়ে বাউবির সব আঞ্চলিক ও উপ আঞ্চলিক কেন্দ্রেও পতাকা উত্তোলন করা হয়। প্রতিবারের মতো এবারও কেক কাটা, বিভাগভিত্তিক গ্রুপ ছবি তোলা, কবুতর ও বেলুন উড়ানো হয়।
সকালে এ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. নাসিম বানু, প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন, ট্রেজারার অধ্যাপক মোস্তফা আজাদ কামাল, রেজিস্ট্রার ড. মহা. শফিকুল আলম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু আদর্শে বিশ্বাসী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক সুফিয়া বেগম এবং তথ্য ও গণসংযোগ বিভাগের পরিচালক মো. আবুল কাসেম শিখদার। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।