রংপুর ব্যুরো:
রংপুর কাউনিয়া পীরগাছা ৪ আসনের সংসদ সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশির ঈদ পুনঃমিলনী অনুষ্ঠানে শ্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া বিতর্কের জেরে সোনা মিয়া (৫৫) কে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এলোপাতারি ছুরিকাঘাত করার পরে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন হত্যাকারীরা, এমনকি সোনা মিয়ার মরদেহে লাথি মারেন ২নং হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ ও তার ছোট ভাই কাউনিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, এমন অভিযোগ খানসামা বাজারে সোনা মিয়া হত্যার প্রত্যক্ষদর্শীদের।
খানসামা হাটের ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রাজনীতিতে দলাদলি, গ্রুপিং, মতবিরোধ, থাকতেই পারে। এজন্য ভরা বাজারে সোনা মিয়ার কোলে থাকা শিশুকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে একজন সহজ সরল মানুষকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করতে পারে না রাজ্জাক রাজু ও ইউসুফরা। প্রতক্ষদর্শীরা আরও বলেন, খুনিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে খানসামা হাটের ঈমামগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজের সামনে যখন আসে, তখন তাদের সকলের হাতে দেশীয় অস্ত্রসহ লোহার রড, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠি ছিলো। সোনা মিয়াকে হত্যার সময় রাজু, রাজ্জাক, ইউসুফ, মজিদ, রাশিদুল, সাইফুল, দিলদার ছাড়াও মোট ৩৫টি মোটরসাইকেলে আসা সন্ত্রাসীদের অনেকেই হেলমেট পরিহিত ছিলো। তবে অস্ত্র সবার হাতেই ছিলো। চাপাটি, রামদা, চাইনিজ কুড়াল তাদের হাতে প্রত্যক্ষ করেছে এলাকাবাসী। সন্ত্রাসীদের আক্রমণের ভয়ে অনেকেই ইচ্ছে থাকলেও এগিয়ে আসার সাহস পায়নি। তবে এলাকাবাসী বেশী ভয় পেয়ে যান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ ও তার ছোট ভাই ভাইস চেয়ারম্যান আ: রাজ্জাকের হাতে অস্ত্র দেখে।
নিহত সোনা মিয়ার চাচা ২নং হারাগাছ ইউপি চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদের বন্ধু রফিকুল ইসলাম জানান, রাজু আমার বন্ধু ছিলো কিন্তু গত ২৪ এপ্রিল মন্ত্রী মহোদয়ের ঈদ পুনঃমিলনী অনুষ্ঠানে তাদের যে তান্ডব দেখলাম। তাতে করে রাজুকে আর বন্ধু পরিচয় দিতে পারিনা। সন্ত্রাসীদের পরিচয় কেবল সন্ত্রাসী এরা কখনো মানুষের মর্যাদা দিতে জানেনা। মানুষ কতটা নির্মম, আর হিংস্র হলে, একজন মানুষকে প্রকাশ্যে দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করতে পারে, আমার বুঝে আসে না। আমরা সোনা মিয়ার খুনিদের ফাঁসি চাই।
সোনা মিয়ার ছোট ভাই হারাগাছ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুল বলেন, গত ২৪ এপ্রিল মাননীয় বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি’র ঈদ পুনঃমিলনী অনুষ্ঠানে আমরা যখন রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানাধীন ধুমেরকুটি স্কুল মাঠে। ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু, বাণিজ্য মন্ত্রীর আগমন শুভেচ্ছায় স্বাগতম, আনারুল ভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছায় স্বাগতম’ এই শ্লোগান দিতে শুরু করি, সাথে সাথেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ২নং হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকসহ কাউনিয়া উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইউসুফ, দিলদার, হাবীব, সাইফুল, রাশিদুল, মজিদসহ ৯০ দশক নামধারী নৌকা বিরোধী কথিত আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা বলেন, এখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদকের নামে কোন প্রকার শ্লোগান দেয়া যাবে না। কেন শ্লোগান দেয়া যাবে না এই প্রশ্ন করার সাথে সাথেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর ঝঁপিয়ে পড়ে ৯০ দশক নামধারী মাদকাসক্ত উগ্র সন্ত্রাসীরা। পরে সেখান থেকে খানসামার হাট ঈমামগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে এলে পুর্ব পরিকল্পনা অনুয়ায়ী ওই সন্ত্রাসীরা এখানেও কোন প্রকার শ্লোগান দেয়ার আগেই তারা হট্টগোল শুরু করে দেয়। এরই এক পর্যায়ে লাঠিসোঁটা ও অস্ত্রসহ ৯০ দশকের বাইরে যারা আছে তাদের উপর হামলা করে। সন্ত্রাসীদের আক্রমণের শিকার হয়ে, জীবন বাঁচাতে অনেকেই স্কুল ও কলেজের শ্রেণিকক্ষে গিয়ে প্রবেশ করেন। সেখানেও গিয়ে এলোপাতারি মারপিট চালায় ওই সন্ত্রাসীরা। এমনকি মাইকিং করে সন্ত্রাসীদের ডেকে আত্মরক্ষায় লুকিয়ে থাকা নেতাকর্মীদেরকে অধ্যক্ষের রুম থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে বেধড়ক মারপিট করে রাজু, রাজ্জাক ও ইউসুফ বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে ঈমামগঞ্জের অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে মন্ত্রী মহোদয় চলে যান বড়ুয়ার হাটে, সেখানেও তান্ডব চালায় ৯০ দশক নামধারী নেতারা। এরই ধারাবাহিকতায় রাত আনুমানিক ৮টার দিকে রাজু, রাজ্জাক, ইউসুফ, মজিদ, রাশিদুলসহ তাদের নেতৃত্বে থাকা সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা এসে আমার বড় ভাই ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য সোনা মিয়ার কোল থেকে তার নাতনি, ছোট শিশুকে ফেলে দিয়ে, মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরোচিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। স্থানীয়দের আত্মচিৎকারে আমার পরিবারের লোকজন ছুটে আসে। আমার সোনা ভাইয়ের নিথর দেহ নিয়ে যখন বিলাপ করছিলেন তার স্ত্রী। তখনও খ্যান্ত হয়নি রাজু, রাজ্জাক, তারা আমার ভাবির কোলেই বড় ভাইয়ের মরদেহে কয়েকবার লাথি মারে! সন্ত্রাসীদের এই নির্মম, নির্দয় আচরণে বেশ আতংকিত হারাগাছ ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
এজাহার ও স্থানীয়সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল পবিত্র ঈদুল ফিতরের তৃতীয় দিন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে ঈদ পুনঃমিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেদিনের সিডিউল ছিলো, মন্ত্রী মহোদয় তার রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসবেন হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানাধীন ধুমেরকুটির জয় বাংলা বাজারে। কিন্তু পুর্ব পরিকল্পনা অনুয়ায়ী আগে থেকেই রংপুর মহানগরীর সাহেবগঞ্জ বাজার এলাকায় উপস্থিত ছিলেন, ৯০ দশকের নামধারী নেতাদের ব্যানারে থাকা কতিপয় আওয়ামী লীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা। তারা মন্ত্রীর গাড়ীকে পিছনে রেখে আগে-আগে মাঠে গিয়ে মাঠের দখল নিয়ে মন্ত্রী মহোদয়ের প্রোগ্রাম বানচালের চক্রান্ত করেন। তাই শ্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে তারা সেখানে পেশীশক্তিকে কাজে লাগান। একই দিনে তারা নিজেদের সক্ষমতা জানান দিতে ওই দিন রাত আনুমানিক ৮টার দিকে সোনা মিয়াকে খুন করেন।
সোনা মিয়া হত্যার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনের অন্যতম নেতা, রংপুর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান কাউনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলতাফ হোসেনসহ কাউনিয়া উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মীরা জানান, উপজেলার কতিপয় বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ ও যুবলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা মিলে সাম্প্রতিক সময় সংঘবদ্ধ হয়ে, ৯০ দশক নামক পর্দার অন্তরালে থেকে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতি পথে বাঁধার সৃষ্টি করছেন। ওই নেতারা আরও বলেন, বিভিন্ন সময় যারা বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নৌকা বিরোধী কাজ করেছে। যারা ইতিপূর্বে নৌকার পরাজয় নিশ্চিত করতে অর্থ ও সময় এবং মেধা ব্যয় করেছে। যারা আওয়ামী বিরোধী, নৌকার বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়েছে, তারাই সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত জেনে জনসাধারণের মতামতের অবমূল্যায়ন করার মাধ্যমে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি করতে বেশ তৎপর। ৯০ দশকের অপতৎপরতার ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোন কল্যাণে কাজে দেবে আমাদের জানা নেই। ৯০ দশক নামক ব্যানারে সর্বদলীয় যে ঐক্য তারা করেছে এটা খুব ভালো, তবে ৯০ দশকের সাথে আমার প্রাণপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নামটা জড়ালে দলের অসম্মান করা হবে। আমি স্কুল জীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্যদিয়ে বড় হয়েছি, আমিও চাই ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হোক। কিন্তু আসল ত্যাগী কারা? ৯০ দশকের ব্যানারে যারা লাশের বিনিময় হলেও পদ চায়? তারা ত্যাগীদের কোন পর্যায়ের ত্যাগী নেতা এটাও পরিষ্কার হওয়া জরুরী। তবে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ কাউনিয়া উপজেলা শাখা কোন সন্ত্রাসীদের সাথে নেই। তিনি আরও বলেন, তথাকথিত এই ৯০ দশকের মূল উদ্দেশ্যে একটাই, সেটি হলো শেখ হাসিনার হাতকে দুর্বল করে দেয়া। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক প্রাণ পুরুষ টিপু মুনশি এমপিকে রংপুর ৪ আসন থেকে সরিয়ে দেয়া। সেই সাথে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশে যারা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছেন, তাদেরকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করার মাধ্যমে একটি ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা। ৯০ দশকের সাথে জড়িত সবাই বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দেয়নি। এর মধ্যে উপজেলার ৬নং টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে, বালাপাড়া ইউনিয়ন, কুর্শা ইউনিয়নে শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করার দায়ে, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশে এদেরকে বহিষ্কার করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রংপুর জেলা শাখা। এর পর থেকেই একের পর এক আওয়ামী বিরোধী কর্মকাণ্ডসহ অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে চলছেন, যার ফলস্বরূপ গত ২৪ এপ্রিল সোনা মিয়ার মতো একজন নিরীহ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। আমরা এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি অবিলম্বে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
৯০ দশকটা আসলে কি? ৯০ দশকের ব্যানারে আপনারা কি বাস্তবায়ন করতে চান? এমন প্রশ্নের জবাবে অত্র উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের নৌকার বিদ্রোহী চেয়ারম্যান ও বহিষ্কৃত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা রাশিদুল ইসলাম বলেন, ভাই আমার মানসিক অবস্থা ভালো নেই, আমি পারিবারিক সমস্যায় আছি, পরে কথা বলবো। তারপরে একাধিকবার তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি আর ফোন ধরেনি বলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
৯০ দশকের ব্যানারে থাকা কাউনিয়া উপজেলার বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ইউসুফের নিকট ৯০ দশকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগে বিভিন্ন পর্যায়ে হাইব্রিড নেতার ছড়াছড়ি। তাই আমরা ৯০ সালে যারা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ করেছি, যারা আওয়ামী লীগের দুর্দিনের ত্যাগী নেতা, তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ৯০ দশক চালু করেছি। ৯০ দশকের মূল নেতা হলো সাইফুল ইসলাম সেলিম সভাপতি, এবং সাধারণ সম্পাদক হাবিব। এদের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ৯০ দশক। কাউনিয়া উপজেলায় ৯০ দশকের ব্যানারে প্রায় ১৫০ জন নেতা আছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি ১৯৯৪ সালে দশম শ্রেণির ছাত্র তখন কাউনিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য ছিলাম! সোনা মিয়ার হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউসুফ বলেন, সোনা মিয়ার হত্যার দায় রাজু ও রাজ্জাকের ৯০ দশকের দায়ভার নিবে না। বিএনপি নেতা রাজু ৯০ দশকে কিভাবে এলো এই প্রশ্নের জবাবে ইউসুফ বলেন, রাজু আওয়ামী লীগ করে তাকে কোনদিন বিএনপি করা দেখিনি সে আমাদের ৯০ দশকের সদস্য।
তবে ৯০ দশকের নেতা দাবীকরা অপর ব্যক্তি দিলদার হোসেন বলেন ৯০ দশকের মূলদাবী হলো আওয়ামী লীগকে হাইব্রিড মুক্ত করা। তিনি জোরালোভাবে বলেন ৯০ দশকের বাইরে যারা আছে তারা সবাই হাইব্রিড আওয়ামী লীগ। আমরা নব্বই দশকের ব্যানারে এই হাইব্রিডদের প্রতিহত করবো। ইতিপূর্বে আপনি বিএনপি করতেন বলে অভিযোগ আছে? জবাবে দিলদার বলেন, আমি ৯৪ সালে ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, ৯৮ সালে যুবলীগ করেছি। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগ। কমিটির কাগজ দেখতে চাইলে তিনি বলেন কাগজ নেই তবে বিএনপি করেছি এটা মিথ্যা কথা।
৯০ দশকের কোন আদর্শ বাস্তবায়ন করতে জীবন দিতে হলো সোনা মিয়ার মতো একজন নিরহ মানুষকে? এমন প্রশ্নের জবাবে ৯০ দশকের ব্যানারে থাকা একাধিক নেতাকর্মীরা বলেন, মন্ত্রী সেদিন যদি ইউসুফকে বলতো যে, তোমাদের বিষয়টি আমি দেখবো তুমি তোমার লোকজন নিয়ে চলে যাও তাহলে এমন ঘটনা ঘটতো না। তারা নিশ্চিত করে বলেন, আসলে সোনা মিয়াকে হত্যা করার কোন প্লান ছিল না, মারার কথা ছিলো অন্যজনকে। কিন্তু দুর্ঘটনাবসত সে মারা গেছে। তবে এটা কোন ব্যাপার না। জেলে থাকা আসামীরা বের হলে আমরা আবারও সক্রিয় হবো। মামলার টাকা কে দেন জানতে চাইলে তারা জানান, ৯০ দশকের মুখপাত্র ডিশ ব্যবসায়ী আশরাফুল হলো অর্থের যোগানদাতা। তার শ্বশুর অনেক প্রভাবশালী বেহিসেবী টাকাও আছে তার। একটা মার্ডার কোন বিষয় না ৯০ দশকের কাছে।
৯০ দশকের সাথে জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্পৃক্ততার বিষয় জানতে চাইলে তারা বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মাজেদ আলী বাবুল ভাই আছে আমাদের সাথে। সোনা মিয়া হত্যার বিষয়ে মাজেদ আলী বাবুল’র ভূমিকা কি জানতে চাইলে তারা বলেন, সোনা মিয়া মারা যাওয়ায় মাজেদ ভাই অনেক রাগারাগি করেছেন। কিন্তু হঠাৎ মার্ডার হয়ে গেছে তবে এটা কোন ব্যাপার না। মাজেদ কি সাধারণ মানুষ? তার ছোট ভাই অনেক বড় নেতা ঢাকায় থাকে ওনার আত্মীয়-স্বজন অনেকেই আছে কেন্দ্রীয় নেতা, তারও অনেক টাকা। তার (বল্টু তো) পদ কে দিছে সেটাও দেখতে হবে। আগামীতে মাজেদ ভাই এই কাউনিয়ার এমপি হচ্ছে এটাও জানি রাখেন। তাহলে বাণিজ্য মন্ত্রী নির্বাচন করবে না? এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, মুনশি হঠাও আনারুল হঠাও এবার এমপি হবে মাজেদ ভাই, উপজেলা চেয়ারম্যান হবে রাজ্জাক ভাই, ভাইস চেয়ারম্যান রাজু ভাই।
সোনা মিয়া হত্যা মামলার অগ্রগতি সমন্ধে জানতে চাইলে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোন্তাসিম বিল্লাহ বলেন, মামলা তদন্ত চলছে এখন পর্যন্ত সোনা মিয়া হত্যা মামলার এজাহার নামীয় মোট ৮ জন আসামি জেল হাজতে আছে। ২ ও ৩নং আসামি পলাতক আর বাকিরা জামিনে আছেন।