1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
বাবার শখে মেয়ের বাজিমাত, ঘোড়দৌড়ের বিস্ময় বালিকা সোনিয়া
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
বাঘায় প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন মিরপুর থানা যুবদলের ১২ নং ওয়ার্ডের কর্মী সন্মেলন অনুষ্ঠিত কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগে ১৫ দিনের ব্যবধানে ২টি হাতির মৃত্যু সহ চলতি মাসেই ৩ হাতির মৃত্যু হয় নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অপরাধে গ্রেপ্তার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা উলিপুরে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত উলিপুরে কমিউনিটি ক্লিনিক সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত পুলিশ সহ তিন বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত বাঘায় বিএনপি নেতার বাড়িতে ককটেল হামলায় আসামী ১১২ জন কাশিমপুরে মাদক ব্যবসায়ীদের নৃশংসতায় প্রাণ গেল তরুণের সাভারের কৃর্তির সুচিকিৎসার জন্য মানবতার ফেরিওয়ালা গরীব বন্ধু অসহায় মানুষের প্রিয় মানুষ খোরশেদ আলম

বাবার শখে মেয়ের বাজিমাত, ঘোড়দৌড়ের বিস্ময় বালিকা সোনিয়া

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৭ মার্চ, ২০২১, ৫.২৫ পিএম
  • ৩৩৮ বার পঠিত
শাহিন আলম,গোমস্তাপুর প্রতিনিধিঃ
সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদের নাম জানতে চাইলে বেশিরভাগই উত্তরে বলবেন বক্সিং তারকা মোহাম্মদ আলী, ফুটবলার পেলে-ম্যারাডোনা, ক্রিকেটার স্যার ডন ব্যাডম্যান-শচীন টেন্ডুলকারদের নাম। আচ্ছা তাদের জয়ের হার কি ১০০ শতাংশ? সব খেলায় কি জিততে পেরেছিলেন? সোজা উত্তর, না।
এটা আবার সম্ভব নাকি! তবে সম্ভবত এদের মধ্যে বক্সিং তারকা মোহাম্মদ আলীর জয়ের হার সবচেয়ে বেশি। প্রায় ৯২ শতাংশ জয় তার ক্যারিয়ারে। তবে সবাইকে অবাক করে নিজের ৪ বছরের ক্যারিয়ারের সবগুলো খেলায় প্রথম স্থান অর্জন করে অন্যন্য কৃতিত্ব দেখিয়েছেন ঘোড়দৌড়ের বিস্ময় বালিকা মাত্র ১১ বছর বয়সী সোনিয়া খাতুন।
দেশের ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতায় তার এই অর্জন ও কীর্তি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল। খুদে ঘোড়া দৌড় খেলোয়াড় সোনিয়া খাতুন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর ইউনিয়নের হোগলা-নেজু বাজার গ্রামের মো. মতিউর রহমানের দ্বিতীয় মেয়ে। সে বেগম নগর মহিলা মাদরাসায় ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে।
এতো অল্প বয়সে এমন সাফল্যে দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সোনিয়া। অথচ নিজের ঘোড়া না থাকায় দেশের যেকোন বড় প্রতিযোগিতায় তাকে অংশ নিতে হয় অন্যের ঘোড়া নিয়ে। আর তাতে যেসব মূল্যবান পুরস্কার জেতেন, তা নিতে পারেন না। দিনশেষে প্রতিটা খেলায় জিতেও মলিন মুখ নিয়েই ফিরতে হয় সোনিয়াকে।
সোনিয়ার সুনাম বহু আগেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ পেরিয়ে ছড়িয়ে গেছে সারাদেশে। নিজ জেলার আনাচে-কানাচে ছাড়াও নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিলেট, হবিগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বড় বড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে সোনিয়া।
সর্বশেষ গত শনিবার (১৩ মার্চ) হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় শাইলঘাটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ১০০ প্রতিযোগিকে হারিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। সেদিন সোনিয়া টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর গ্রামের আবুল হাশেমের হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে মোটরসাইকেল জিতে নেয়। তবে বরাবরের মতোই তার কপালে জোটে চুক্তি হওয়া ৪-৫ হাজার টাকা। এনিয়ে পাহাড়সম কষ্ট আর চাপা ক্ষোভ সোনিয়া ও তার পরিবারের সদস্যের মাঝে।
সোনিয়ার ঘোড়ায় চড়ার গল্পটা শুরু হয় তার বাবা মতিউর রহমানের সখের হাত ধরে। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিলেও দিনমজুর মতিউরের দীর্ঘদিনের শখ ছিলো যেকোনভাবেই কিনবেন শখের ঘোড়া। অর্থাভাবে দীর্ঘদিন থেকে কিনতে পারেননি সোনিয়ার বাবা। অন্যদিকে গ্রামে একজনের একটি ঘোড়া ছিলো।
প্রতিদিন বাজার থেকে বাসায় ফেরার পথে সেই অন্যের ঘোড়ার জন্য খাবার কিনে নিয়ে যেতেন মতিউর। আর এতে মাঝেমধ্যে সেই ঘোড়ায় উঠার সুযোগ মিলতো তার। তবে অপেক্ষার অবসান হয় গত ৫ বছর আগে। কথায় আছে, শখের দাম সোয়া লাখ। একটি এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ করে একটি ঘোড়া নিয়েছিলেন মতিউর।
দিনমজুরের কাজ করার পাশাপাশি শখের বসে শুরু করেন ঘোড়া চালানো। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আমি যখন ঘোড়া চড়তাম, তখন ৬ বছর বয়সী মেয়ে সোনিয়া উঠতে বায়না ধরতো। কিন্তু তাই বলে কি তাকে উঠতে দেয়া যায়? মেয়ে মানুষ পড়ে গিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে যেতে পারে। তবে অনেক বায়নার পর একদিন ঝুঁকি নিয়ে ঘোড়ায় উঠালাম। কিছুক্ষণ পরে দেখি ঘোড়া দৌড়াচ্ছে, আর সোনিয়া গলা ধরে ঝুলে আছে।
মতিউর রহমান আরো বলেন, প্রথম দিনে ঘোড়ায় উঠার পর ৭দিনের মাথায় শিবগঞ্জ উপজেলা স্টেডিয়ামে একটি প্রতিযোগিতার ডাক আসে। সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে ঘোড়ায় উঠার মাত্র ৭দিন বয়সেই প্রথম স্থান অর্জন করে সোনিয়া। এরপর আর থামেনি।
জেলার মধ্যে একে একে দরগাডাঙ্গা, বিসমি, পোলাডাঙ্গা, ঘুঘুডিমা ছাড়াও নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিলেট, হবিগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বড় বড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। ফলাফলও হয়েছে একই রকম। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০টি খেলায় সোনিয়া অংশ নিয়েছে বলে জানান তিনি।
সোনিয়ার মা জান্নাতুন খাতুন জানান, খুব ছোট থেকেই ঘোড়ার প্রতি তার আগ্রহ খুব। সে খুব ভালো করছে এখন। কিন্তু নিজের যে ঘোড়াটি আছে তা ছোট, এটি দিয়ে কোন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া যায়না। তাই বাধ্যতামূলক অন্যের ভাড়াটে হয়ে খেলায় অংশ নিতে হয়।
এখন পর্যন্ত সোনিয়া প্রায় ১০টি ফ্রিজ ও এলইডি টিভি জিতেছে সোনিয়া। যার একটিও পায়নি সে। প্রায় সব প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জিতলেও, তা নিজে পায় না সোনিয়া। বরং সবসময় তার জন্য বরাদ্দ থাকে ৩-৪ হাজার টাকা। যা যেতে আসতেই খরচ হয়ে যায়। আবার একটি ঘোড়ার দামও অনেক তাই কিনতে পারিনা।
কারন সোনিয়ার আব্বা অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে। এনিয়ে ৫ মেয়ের সংসার চালাতে হয়। তাই নতুন করে ঘোড়া কেনা অসম্ভব। তিনি বলেন, ঘোড়া চড়ার পাশাপাশি সোনিয়ার পড়াশোনা করারও অনেক স্বপ্ন। তবে ৫ মেয়ের সংসারে তা কতোটা সম্ভব এনিয়েও রয়েছে নানা দুঃচিন্তা। সে ঘোড়াকে খুব ভালোবাসে। নিজের হাতে খেতে দেয়, আদর করে। তবে তার এই ছোট্ট মনেও নিজের সাফল্যের ফল না পাওয়াতেও অনেক কষ্ট আছে।
ওয়ালিদ হাসান, সোনিয়ার বড় চাচাতো ভাই। সেও একজন জকি অর্থাৎ বিভিন্ন ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। সে জানায়, দুই ভাই-বোন বিভিন্ন জায়গায় একসাথে খেলি। সোনিয়া প্রায় সব জায়গাতেই জিতে কিন্তু মর্যাদা বা তার প্রাপ্যটা পায়না। অন্যের ঘোড়ায় খেলে বলে এমনটি হয়।
খেলা দেখে দর্শকরা সবাই আনন্দ নেয়, তবে খেলা শেষে সোনিয়ার নিঃশব্দের রক্তক্ষরণ কেউ দেখে না। সরকার বা সমাজের বিত্তবানরা তাকে একটি ঘোড়া দিলে বা তার পাশে এসে দাঁড়ালে সে দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে বলে মনে করেন এই জকি।
কথা হয় অবিশ্বাস্য সাফল্যের অধিকারী ১১ বছর বয়সী সোনিয়া খাতুনের সাথে। ঢাকা পোস্টকে সোনিয়া বলে, খেলতে খেলতে এমনটি হয়ে গেছি। এখন ভালো খেলি, তাই সবাই ডাকে।
আমার ছোট্ট একটা ঘোড়া আছে, কিন্তু এটা নিয়ে খেলতে পায় না। তাই পুরস্কারও পায়না। সে জানায়, ঘোড়ায় চড়া যেমন আনন্দের, তেমনি পড়াশোনাটাও তার কাছে অনেক স্বপ্নের।
তবে বয়স মাত্র ১১ বছর হলেও নিজের পরিবারের আর্থিক দুরাবস্থার কথা ভালোই জানে সোনিয়া। এবিষয়ে সে বলে, দুটোই একসাথে সমানতালে করতে চাই। তবে পারবো কিনা জানি না।  কারণ আমরা খুব গরিব। আমাদের একটাই ঘর, এই ঘ

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews