আজকের যুগে আমাদের সামনে হাজারো দুয়ার খোলা। চাইলেই খুঁজে পাই আকাংখিত যেকোন বই পত্রিকা। কিন্তু একজন নারীর জন্য কোন কিছুই সুলভ না। আর নারীর সম্পাদনায় একটি পত্রিকা সেতো অকল্পনীয়। এই আধুনিক যুগেই যখন নারীরা নিগ্রহের শিকার হোন তখন কেবলই ভাবি একজন ফারহানা বেগম কতটা সাহসী হলে এই সাহসী কিন্তু দুর্গম পেশায় নিজেকে নিবেদন করেছেন।
সাংবাদিকতা একটি ঝুঁকিপূর্ণ পেশা,সাংবাদিকতার পথ চলা মোটেই মসৃণ নয়। পদে পদে বিপদ আর জীবন ঝুঁকি নিয়ে সত্য ও ন্যায়ের সাথে থেকে কাজ করা যেখানে একজন পুরুষের জন্যই কঠিন হয়ে দাড়ায় তখন একজন নারী হয়ে এই পথে চলা সত্যি কঠিন বিষয়।
আর আমাদের সমাজ ও পরিবার পরিবেশ নারীদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজের অনুকূল নয়। এ প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করার জন্য প্রয়োজন প্রচন্ড মানসিক জোর। ফারহানা বেগম হেনা এ সব অন্তরায় অতিক্রম করেছেন নিজের মনোবল ও পারিবারিক সহযোগিতায়। নারীদের অবরোধে রাখা আমাদের যুগের সামাজিক রীতি এবং সে পরিবেশেই আবদ্ধ থাকাটাই যেন নারীদের কাছে স্বাভাবিক। কিন্তু ফারহানা বেগম হেনা’র পারিবারিক পরিবেশ নারীদের সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশের সহায়ক।
২০২১ সালে এসেও আমরা কিন্তু নারীদের তার যোগ্যতম স্থানটি দিতে পারছি না। পারছিনা তাদের কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করতে। নারীরা যতোই ভালো কাজ কারুক না কেনও কখনো ই তাদের কাজের জন্য বাহবাহ তো দূরের কথা আমরা চাই তারা যেনো নিবৃত্তেই থাকুক। আমরা মুখে তো বলিই এই সমাজকে পরিবর্তন করতে হলে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের কে ও সমান তালে এগিয়ে আসতে হবে কিন্তু বাস্তবতা এর পুরোটাই উল্টো। যদি তা নাই হতো তা হলে আজকে আমাদের অনেক নারীই মূল্যায়িত হতো তার কাজের মাধ্যমে। যখন আপনি, আমি কোন কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ কোন সম্মাননা পাই বা মূল্যায়িত হই তখন আমাদের যেমন কাজের দায়-দায়িত্ব বেড়ে যায় এবং ভালো ভালো কাজ করার আগ্রহ আমাদের মাঝে চেপে বসে ঠিক তেমনি একজন নারীকে ও যথাযথ ভাবে মূল্যায়ন করতে পারলে তারও কাজের আগ্রহ বেড়ে যেতো। আমরা একজন নারী কর্মীকে দিয়ে তো কাজ আদায় করে থাকি কিন্তু সেই কাজের জন্য তাকে বাহবাহ তো দূরের কথা ধন্যবাদ টুকুও দিতে নারাজ। আমরা এতোটাই সংকিন্ন মনমানসিকতা নিয়ে কি করে একজন নারী কর্মী থেকে ভালো কিছু আশা করতে পারি।
আধুনিক সাহিত্যে আজ অনেক লেখকের আনাগোনা। আজ আমাদের সমাজে পুরুষের পাশাপাশি অনেক নারী সাংবাদিকও আছেন,কিন্তু কয়েকজন নারী সাংবাদিক তার যথাযথ সম্মান পেয়েছেন আপনার,আমার কাছ থেকে। কয়জন নারী সাংবাদিকের কথা আমরা তুলে ধরেছি আমাদের লিখনির মাধ্যমে। কয়েকজন নারী সাংবাদিককে আমরা পেরেছি তাদের কাজের মূলযায়ন দিতে। আমরাই আমাদের সংকিন্ন মনমানসিকতার কারণে তাঁদেরকে পিছিয়ে রেখেছি সব সময়। আজও বেড়িয়ে আসতে পারিনি আমাদের সংকিন্ন মনমানসিকতা থেকে।
কিন্তু চিন্তা করে দেখুন কয়জন নারী আছেন যারা সাংবাদিক পদে চাকরীর বাইরে নিজেকে প্রকৃত সাংবাদিক পরিচয়ে জন্ম দিতে পেরেছেন? এত হাজারো পত্রিকা, চ্যানেলের ভিড়ে এমন অনেক অনলাইন দৈনিক আছে যার পরিচালনায় এবং সম্পাদনায় নারী অধিস্টিত আছেন। কিন্তু আমরা ক’জনের কথা জানি ক’জনকে আমরা চিনি জানি বা ক’জনকে আমরা আমাদের লিখনির মাধ্যমে তুলে ধরেছি। ক’জন নারী সাংবাদিক কে আমরা তাদের যথাযথ সম্মান দিতে পেরেছি। আবার
এমব কোন অনলাইন দৈনিক কি আছে যা সদ্য লিখতে শিখা আরেকটি প্রজন্মকে তৈরী করবে? তবে হা ফারহানা বেগম হেনা পরিচালিত ডেইলি বিডি নিউজ ডটনেটের মাধ্যমে অনেক নতুন ও তরুণরা তাদের লিখনির মাধ্যমে উঠে এসেছেন এবং বর্তমানে ভালো পর্যায়ের সাংবাদিক হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় কাজও করছেন তারা।
এতসব প্রশ্নের উত্তরে একটা নামই মনে আসে,আর তা হলো ডেইলি বিডি নিউজ ডট নেট,আর এর সম্পাদনায় রয়েছেন একজন নারী সাংবাদিক-ফারহানা বেগম হেনা। যার মাধ্যমে সদ্য লেখালেখিতে হাত পাকানো ছেলেমেয়েরা পায় সামনে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা। আর এই ছেলেমেয়েদের মাধ্যমেই আসবে একটি শিক্ষিত ও সংস্কৃতিবান প্রজন্ম। অনুপ্রেরণা ও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করতে পারে এমন ক’জন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় আমাদের সমাজে।
ফারহানা বেগম হেনা,যিনি বিশ্বাস,চেষ্টা ও পরিশ্রম দিয়ে সফলতার মুখ দেখেছেন এবং নিজ অধ্যবসায়ে মনের গহীনে লালিত স্বপ্নকে স্পর্শ করে আজ স্বীয় সম্পাদনায় পথ দেখিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ডেইলি বিডি নিউজ ডট নেট নামক অনলাইন পত্রিকাটিকে। নদীর এপার থেকে ওপার প্রতিনিয়ত ছুটে বেড়িয়েছেন জীবনের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে। অসংখ্য পাঠকের ভালোবাসা নিয়ে আজ তাঁর স্বপ্নের অনলাইন দৈনিকটি ছুটে চলেছে হিমালয়সম উচ্চতা পানে।
ফারহানা বেগম হেনা,সিলেটে নারী সাংবাদিকতার একজন অগ্রদূত হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। ৮ই মার্চ ২০১৪ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন “ডেইলি বিডি নিউজ ডট নেট” নামক অনলাইন পত্রিকা। এবং সেই সূচনালগ্ন থেকে আজ অবধি সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। সবাই ভাববেন সময়তো খুবই অল্প,কিন্তু আমি বলবো একজন নারীর জন্য এই কয়েকটি বছর কয়েক যুগের সমান। নানা প্রতিকূলতার মাঝে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে এতদূর আসা চাট্টিখানি কথা নয়। পুরুষশাসিত সমাজে একজন নারী সাংবাদিকের এতদূর এগিয়ে আসা কি সামান্য কয়েকটি শব্দে প্রকাশ করা সম্ভব?
সিলেটের প্রথম দিকের নারী সাংবাদিক তিনি। কর্মস্থলে দীর্ঘক্ষন কাজ করতে করতে মেয়েদের জন্যে আলাদা টয়লেট না থাকায় কত যে অসুবিধা,তা আজকের সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করা মেয়েরা কল্পনাও করতে পারবে না। কিন্তু ফারহানা বেগম হেনা সেই নারী,যিনি অবান্ধব পরিবেশেই মুখ বুঁজে কাজ করে গেছেন। আর তাইতো আজ তিনি সাহসী,কপটতাহীন,তোষামোদ-বর্জিত,স্পষ্টভাষি এবং আপসহীন সাংবাদিক হিসেবে সর্বমহলে সম্মানিত।
যতদূর মনে পড়ে গতবছর একটি অনুস্টানে সদ্য সাংবাদিকতায় আসা তরুন তরুনীদের উদ্দ্যেশে তিনি বলেছিলেন-এখনকার সাংবাদিকরা অনেক সাহসী।
আপনারা আজ অতি সহজেই নির্বিঘ্নে হাটে,মাঠে কাজ করতে পারছেন কিন্তু আমাদের সময় এতটা সহজ ছিল না। বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার কারনে যখন যেখানে যে অবস্থাতেই থাকেননা কেন নিউজ কিন্তু সাথে সাথে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিচ্ছেন মুহূর্তের মধ্যেই। কূটনীতিক,অর্থনৈতিক,অপরাধমূলক,সামাজিক বিভিন্ন ধরনের রিপোর্ট,প্রতিবেদন তৈরি করছেন। স্পটে কোনো ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে সংবাদ সংগ্রহের জন্য উপস্থিত হন। সেটা যত বিপদসংকুল স্থানই হোক না কেন। নির্ভীক এই সাংবাদিকরাই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সত্য সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে। আপনার একটি সংবাদই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। মুহূর্তে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে পারেন আমাদের সোনার বাংলাকে।
নারী সাংবাদিক ফারহানা বেগম হেনা শুধু মাত্র সাংবাদিকতা নিয়েই আছেন তা কিন্তু নয়। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি একজন সমাজ কর্মীও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডের সাথে রেখেছেন নিজেকে জড়িয়ে। সাংবাদিক ফারহানা একজন বাংলাদেশ পল্লী চিকিৎসক। তিনি দীর্ঘ দিন থেকে দুস্ত অসহায় মানুষকে দিয়ে আসছেন বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা। যেকোনো দূর্যোগ পূর্ণ সময়ে বিনামূল্যে ফ্রী মেডিক্যাল ক্যাম্প ও ঔষধ বিতরণ করে থাকেন নিজ উদ্যোগে ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে। শুধু কি তাই শীতের সময় গরীব অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ,রমজান মাসে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ,ঈদের সময় ঈদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ,গোপনে রক্তদান,গরীব অসহায় রুগীকে আর্থিক সহায়তা সহ বিভিন্ন সময় সামজসেবা মূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। করোনা ভাইরাস এর মহামারী পরিস্থিতির সময় নিরবে নিবৃত্তে অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন খাদ্য সামগ্রী নিয়ে। এমন অনেক কাজ তিনি নিরবে নিবৃত্তেই করে থাকেন যা অপ্রকাশিত থেকে যায়। তিনি এমনই একজন আলোকিত মানুষ।
সংস্কৃতিমনা নারী জাতির একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক ফারহানা বেগম হেনা’কে আমার সশ্রদ্ধ সালাম। নারীর সাহায্যে, তার চিন্তাশীলতা ও সচেতনতায় নব সমাজের নির্মাণ সুদৃঢ় হতে পারে। – লেনিনের এই মতবাদে সমাজকল্যানে উদ্ভাসিত হোক আপনার সৃজনশীলতা।