লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান ওরফে হবি (৭০) এ পর্যন্ত নয়টি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে নিজের ছেলের বান্ধবীকেও বিয়ে করেছেন তিনি।
সাবেক এই মেম্বারের দাবি, শখের বসে নয় বরং ঝগড়া আর বউয়ের অসুস্থতায় বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। একের পর এক বিয়ে করায় বিয়ে পাগল হবি মেম্বার নামে পেয়েছেন পরিচিত।
জানা গেছে, আটজন স্ত্রীর মধ্যে জমি-জমা বিক্রি করে ইতোমধ্যে তিনজনকে ডিভোর্স দিয়েছেন হবি মেম্বার। একজনের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচজন স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে আরেক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বাধ্য হয়ে বিয়ে ঠেকাতে পাটগ্রাম থানা ও লালমনিরহাট পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রথম স্ত্রী রহিমা বেগম।
রহিমা বেগম বলেন, ৪০ বছর আগে আমাকে বিয়ে করেছেন হবি। এরপর আমার মতের বিরুদ্ধে একের পর এক আটটি বিয়ে করেছেন। তিনি একজন লম্পট, নারীকে ভাগিয়ে এনে অন্যের সংসার নষ্ট করে মজা পায়। বর্তমানে আমার ছেলে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। মেয়েদের বিয়ে হয়েছে, নাতি-নাতনি রয়েছে। এ অবস্থায় অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে আবার বিয়ে করতে চাচ্ছেন হবি মেম্বার। তার জন্য গ্রামে মুখ দেখাতে পারি না।
হাবিবুর রহমানের ছেলে ও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বাবা বিয়ে পাগল। তিনি আমার বান্ধবীকে পর্যন্ত বিয়ে করেছেন। তিনি বুড়ো বয়সেও বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছেন। তার কারণে আমাদের মেয়ে, ভাতিজি ও ভাগ্নিদের বিয়ের প্রস্তাব আসলে খারাপ মন্তব্য করে মানুষ।
স্থানীয় আমের আলী বলেন, বিয়ে পাগল হাবিবুর রহমান হবি এলাকার মেয়েদের দেখলে বিয়ের জন্য পাগল হয়ে যান। বিয়ে করতে না চাইলে তাকে ও তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কুমুর উদ্দিনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, তিনি কাউকে তোয়াক্কা না করে এলাকায় একের পর এক অপকর্ম করছেন। তার বিরুদ্ধে কথা বললে মামলায় জড়িয়ে বিপদে ফেলেন।
বুড়িমারী ইউনিয়ন পরষিদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তোবারক হোসেন বলেন, বৃদ্ধ বয়সেও বিভিন্ন নারীর দিকে খারাপ নজর দেন হাবিবুর রহমান হবি। এতে সমাজে অনেকে তাকে ও তার পরিবারের লোকজনদের আর মেনে নিচ্ছেন না। সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাইদ নেওয়াজ নিশাত বলেন, হাবিবুর রহমান হবি একজন নারীলোভী ব্যক্তি। শেষ বয়সেও তিনি একের পর অপকর্ম করছেন। তার বর্তমানে পাঁচ স্ত্রী থাকার পরও অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়েছেন।
এ বিষয়ে হাবিবুর রহমান হবি বলেন, আমি নবম বিয়ে অনেক আগেই করেছি। ছেলেরা আমার সম্পদ দখল করতে আমার প্রতি অন্যায়-অত্যাচার করছে। আমি এ বিষয়ে আদালতে মামলা করেছি।
পাটগ্রাম থানা পুলিশের ওসি সুমন কুমার মহন্ত বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে এমন অভিযোগ বহু বিবাহের আদালতে করতে হবে।