মোঃ সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম
চারিদিকে যে দিকেই দুচোখ যায় শুধু পানি আর পানি, শুধু পানির রাজত্ব চলছে। এত বেশি পরিসরে পানি আগে কখনও দেখেনি চট্টগ্রাম বাসী। একটানা শ্রাবনের ভারী বর্ষণে বর্ষাকালীন চিরচেনা চট্টগ্রাম শহর জলে ভাসছে তো ভাসছেই। এ নিয়ে প্রায় ৩/৪ দিন ধরে অক্লান্ত বর্ষণে ডুবেছে পুরো চট্টগ্রাম নগরী।
৬ আগস্ট (রবিবার) ভারী বর্ষণে নগরজুড়ে থৈ থৈ করছে পানি আর পানি। তাতে করে কর্মজীবী নারী-পুরুষকে পড়তে হয়েছে বিপাকে। রাস্তায় পানি বেশি হওয়ায় অনেকেই ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ি না পেয়ে কর্মস্থলে না গিয়ে বাসায় ফেরত গেছে । তাছাড়া স্কুল কলেজ গামী কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম বিপদে।
চট্টগ্রাম নগরীর জিইসির মোড়, ২নং গেইট, শেরশাহ্ বাংলা বাজার, ওয়াসার মোড়, হালিশহর , আগ্রাবাদ , মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, কাপাসগোলা, বাদুরতলা, চকবাজার, ডিসি রোড, ফুলতলা, বাকলিয়া,চাক্তাই, মিয়া খান নগর, কাতালগঞ্জ, আরাকান রোড, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সড়ক, তিন পোলের মাথা, রিয়াজউদ্দিন বাজার, নতুন ব্রিজ সহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চরম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দোকানের ভিতরে ঢুকে গেছে পানি। খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ে অনেক ব্যবসায়ী সকাল থেকে দোকানই খুলতে পারেনননি। যারা খুলেছেন তাদের সবাই দোকানের ভিতর থেকে পানি সরাতে ব্যস্ত রয়েছেন।
চট্টগ্রাম পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম নগরীতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২১৮ মিলিমিটার। এরমধ্যে রোববার (৬ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬৩ মিলিমিটার।’
তিনি আরও বলেন, ‘২৪ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে সেটিকে আমরা অতি ভারী বর্ষন বলি। এর নিচে হলে ভারী বর্ষণ । গত ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রাম নগরীতে ২১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তাই এটাকে অতি ভারী বর্ষন বলা হচ্ছে। শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২১ মিলিমিটার।
এদিকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ঝুঁকিতে থাকা আকবরশাহ এলাকার বিজয় নগর ও ঝিল পাহাড়ে বসবাসরত ২৫০টি পরিবারকে দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। মহানগরে ৬টি সার্কেলের মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের কয়েকটি টিম জানমাল রক্ষার্থে কাজ করছে। মাইকিং করে মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।