আব্দুর রাজ্জাক জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রামঃ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে বিকাশ এজেন্টের ১৫ লক্ষ (পনের লক্ষ) টাকা ছিনতাই হয় গত মার্চ মাসে।পরে তাত্ক্ষণিক ভাবে পুলিশ অভিযান চালালে ওই দিনি ৭ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করে।পরে আজ ২৬ এপ্রিল অবশিষ্ট ৭ লক্ষ ৪০ হাজার (সাত লক্ষ চল্লিশ হাজার) টাকার মধ্যে হতে ৬ লক্ষ ৬০ হাজার (ছয় লক্ষ ষাট হাজার) টাকা উদ্ধার ও মূল আসামীসহ গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
পুলিশ ও অভিযোগ কারীদের সূত্রে যানাযায়
গত ১৯ মার্চ বেলা আনুমানিক ১১ টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার গ্রামের বিকাশ কর্মী শ্রী শুভ কুমার রায় (২৬),পিতা-শ্রী বিশ্বাস চন্দ্র রায় ১৫ লক্ষ (পনের লক্ষ) টাকা নিয়ে বিকাশ এজেন্টদের নিকট বিলি করার জন্য মোটরসাইকেল যোগে ভূরুঙ্গামারী থেকে সোনাহাট ক্যাম্পের মোড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে বেলা আনুমানিক ১২ টার সময় উক্ত বিকাশ কর্মী ভূরুঙ্গামারী থেকে সোনাহাট যাওয়ার পথে অত্র থানাধীন দক্ষিণ ভরতেরছড়া নামক স্থানে জনৈক শাহ আলম মেম্বারের বাড়ির পার্শ্বে পাঁকা রাস্তার উপর দিয়ে যাওয়ার সময় পিছন থেকে আসামী শ্রী প্রসেনজিত বর্মণ (২৭), পিতা-মৃত শশিমোহন বর্মন, শান্তিটারী দিঘীরপাড় ৯নং ওয়ার্ড, খাদিমুল ইসলাম (লাল) (২৭), পিতা- আজিজুল হক,বোয়ালের ডারা ৩নং ওয়ার্ড, উভয় থানা-নাগেশ্বরী,মোস্তফা (৩০), পিতা হানিফ মন্ডল, গনাইরকুটি,ভূরুঙ্গামারীগণ তাদের ব্যবহৃত চলন্ত মোটরসাইকেল দ্বারা একই উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত করে দস্যুতার জন্য বিকাশকর্মীর চলন্ত মোটরসাইকেলের পিছন থেকে ধাক্কা দিলে বিকাশকর্মী তার সঙ্গে থাকা টিএমও শ্রী বিদ্যুৎ চন্দ্র সহ পাঁকা রাস্তার উপড় পড়ে যায়। সেই সুযোগে মোটরসাইকেলে থাকা আসামীগণ বিকাশকর্মী ডিএসও শ্রী শুভ কুমার এর কাছে থেকে ১৫ লক্ষ (পনের লক্ষ) টাকা রক্ষিত একটি ব্যাগ দস্যুতা সংঘটনের মাধ্যমে ছিনতাই করে সোনাহাটের দিকে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায় তারা। উক্ত ঘটনার পরপরই কচাকাটা ও ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ কর্তৃক উল্লেখিত প্রথম ও দ্বিতীয় আসামীকে কচাকাটা থানাধীন ছনবান্দা খলিশাবাড়ি গ্রামস্থ ১, ২ ও ৩নং আসামীকে পলায়নের সহায়তাকারী এজাহার নামীয় ৪নং আসামী মোন্নাফ আলী (২৫), পিতা খলিলুর রহমান এর বাড়ির সামনে থেকে দস্যুতালব্ধ ১৫ লক্ষ (পনের লক্ষ) টাকার মধ্যে ৭ লক্ষ ৬০ হাজার (সাত লক্ষ ষাট হাজার) টাকা সম্বলিত একটি কালো রংয়ের হাত ব্যাগ ও দুস্যতার ঘটনায় ব্যবহৃত কালো সবুজ রংয়ের বাজাজ পালসার (১৫০ সিসি) মোটরসাইকেল যার রেজিঃ নম্বর কুড়িগ্রাম-ল-১১-৩৫০৪ উদ্ধার সহ গ্রেফতার করেন থানা পুলিশ। এবং পলায়নে সহায়তাকারী আসামী মোন্নাফ আলী (২৫) কেও গ্রেফতার করা হয়। বর্ণিত ঘটনায় ভূরঙ্গামারী থানার মামলা নং-২১, তারিখ-২০ মার্চ ২০২৩, ধারাঃ ৩৯৪/৩৪/১০৯ পেনাল কোড-১৮৬০; রুজু করা হয়।
ঘটনার পরবর্তী ২য় দিন এজাহার নামীয় ১ ও ২নং আসামীর ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে প্রদত্ত স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দির প্রেক্ষিতে তদন্তে প্রাপ্ত আসামী রুহুল আমিন (২৮), পিতা ইউনুস আলী,কুটিপয়রাডাঙ্গা, থানা-নাগেশ্বরী, গ্রেফতার করা হয় এবং উক্ত আসামীও ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে প্রদত্ত স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আসামীদের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি ও মামলাটির তদন্তকালে এই দস্যুতা সংঘটনের মূলহোতা ও পরিকল্পনাকারী এজাহার নামীয় ৩নং আসামী মোঃ মোস্তফা (৩০), পিতা- হানিফ মন্ডল, থানা-ভূরুঙ্গামারী, জেলা-কুড়িগ্রাম মর্মে প্রকাশিত ও প্রাথমিক ভাবে প্রতীয়মান হয়। দীর্ঘদিন আন্তগোপনে থাকার পর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও গুপ্তচর নিয়োগের মাধ্যমে আসামী মোস্তফা (৩০) কে ২৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক ০৫.৩০ ঘটিকার সময় কুড়িগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগীতায় ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ কর্তৃক কুড়িগ্রাম থানাধীন জিয়া বাজার এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর আসামী মোস্তফাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে ও তার হেফাজতে দস্যুতালব্ধ টাকা আছে মর্মে স্বীকার করে। ধৃত আসামীর স্বীকারোক্তি মোতাবেক ধৃত আসামী সহ অভিযান পরিচালানা করে তার দেখানো মতে তার বসত বাড়ির পশ্চিম ভিটার পূর্ব দুয়ারী চৌচালা টিনের ঘরের চাঙ্গের উপর হতে দস্যুতালব্ধ অবশিষ্ট ৭,৪০,০০০/- (সাত লক্ষ চল্লিশ হাজার) টাকার মধ্যে হতে বিকাশের জনতা ট্রেডার্স কোম্পানীর ব্যাগ সহ ৬,৬০,০০০/- (ছয় লক্ষ ষাট হাজার) টাকা ২৬ এপ্রিল রাত্রী ০৩.৪৫ ঘটিকার সময় উদ্ধার করা করেন থানা পুলিশ। বর্ণিত দস্যুতা মামলার ঘটনায় লুন্ঠিত ১৫,০০০০০/- (পনের লক্ষ) টাকার মধ্য হতে সর্ব মোট ১৪,২০,০০০/- (চোদ্দ লক্ষ বিশ হাজার) টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন পুলিশ প্রশাসন।
ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বলেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সহযোগিতায় ছিনতাই হওয়া ১৫ লক্ষ টাকার মধ্যে আমরা দুটি অভিযানে ১৪ লাক্ষ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছি।তাছাড়া দুস্যতার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটসাইকেল ও অন্যান্য সকল আলামতও জব্দ করা হয় এবং জড়িত সকল আসামীকে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।