1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
ভয়াল ২১ আগস্ট আজ
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
নবাবগঞ্জে শ্রমীকলীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি খালের মাটি লুটের অভিযোগ ক্যাব প্রস্তাবিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি প্রনয়ন,বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাত সংস্কারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাস চাপায় প্রাণ গেল ২ মোটরসাইকেল আরোহীর রাজশাহীতে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পণ জামিন নামঞ্জুর জেল হাজতে প্রেরন ফুলবাড়িতে যথাযথ মর্যাদায় সশস্ত্রবাহিনী দিবস উদযাপিত বাসে উঠাকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ ছাত্রদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র সাইন্সল্যাব এলাকা আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পেলেন বাহারুল আলম পুঠিয়ায় সাথী ক্লিনিককে ১০ হাজার জরিমানা, সাংবাদিকের হুমকি নড়াইলে মদ্যপানে ১স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু,আরও ১ জন হাসপাতালে ভর্তি

ভয়াল ২১ আগস্ট আজ

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০, ১০.২৭ এএম
  • ২৯৫ বার পঠিত

তৌহিদ আহমেদ রেজা:
মৃত্যু-ধ্বংস-রক্তস্রোতের নারকীয় গ্রেনেড হামলার ১৬ বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০০৪ সালের এইদিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন নেতা সেদিন অল্পের জন্য ভয়াবহ হামলা থেকে বেঁচে গেলেও নিহত হন মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন। এছাড়া আরো ৪শ’ জন আহত হন। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, একুশে আগস্টের ওই বিকেলে শান্তি সমাবেশে শেখ হাসিনার বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে আকস্মিক গ্রেনেড বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলে মারাত্মক বিশৃঙ্খলা, ভয়াবহ মৃত্যু ও দিনের আলো মুছে গিয়ে এক ধোঁয়াচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ সময় ঢাকার তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ও শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী তাৎক্ষণিকভাবে এক মানব বলয় তৈরি করে নিজেরা আঘাত সহ্য করে শেখ হাসিনাকে গ্রেনেডের হাত থেকে রক্ষা করেন। তবে গ্রেনেডের আঘাত থেকে বেঁচে গেলেও শেখ হাসিনার শ্রবণ শক্তির মারাত্মক ক্ষতি হয়।

ওই হামলায় গুরুতর আহত মেয়র হানিফের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত অস্ত্রোপচার করার কথা থাকলেও গ্রেনেডের স্পিন্টার শরীরে থাকার কারণে তা করা সম্ভব হয়নি। পরে তিনি ব্যাংকক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

বর্বরোচিত ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন- আইভি রহমান, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স কর্পোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া।

মারাত্মক আহতরা হলেন- শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু, প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক, প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, মোহাম্মদ হানিফ, সদ্যপ্রয়াত অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, এএফএম বাহাউদ্দিন নাছিম, নজরুল ইসলাম বাবু, আওলাদ হোসেন, মাহবুবা পারভীন, এডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দিপ্তী, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনি, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, রুমা ইসলাম, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেইন, মামুন মল্লিক প্রমুখ।

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ওই হত্যাকাণ্ডের প্রতিকারের ব্যাপারে তৎকালীন বিএনপি সরকার নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেছিল। শুধু তাই নয় এ হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রক্ষা করতে সরকারের কর্মকর্তারা ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা পাঁচটি গ্রেনেড ধ্বংস করে দিয়ে প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টাও করা হয়েছিল।

পরবর্তী সময়ে নতুন করে তদন্ত শুরু হলে বিএনপি সরকারের প্রভাবশালী স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুরজ্জামান বাবর ঘটনার সঙ্গে তারেক রহমান জড়িত আছেন বলে দাবি করে বলেন, খালেদা জিয়ার বড় পুত্র তারেক রহমান এ হামলার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছিলেন।

এই হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি অথবা গোষ্ঠীর সন্ধানদাতার জন্য সে সময় বাবর এক কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। হামলার পর বাবরের তত্ত্বাবধানে একটি তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এতে জজ মিয়া নামে এক ভবঘুরে, একজন ছাত্র, একজন আওয়ামী লীগের কর্মীসহ ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অথচ পরবর্তী তদন্তে তাদের কারো বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় বিচারিক আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, এ মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে সাক্ষ্য তথ্য প্রমাণে দেখেছি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার জঙ্গিগোষ্ঠীর সহায়তা নিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি সংঘবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যাই ছিল ভয়াবহ ওই গ্রেনেড হামলার লক্ষ্য।

একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান, দলটির নেতা হারিছ চৌধুরী, সাবেক এমপি শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়ে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত।

গত ১৬ আগস্ট এ মামলার পেপারবুক তৈরির কাজ শেষে তা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছেছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নির্ধারণ করে দেয়া হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হবে বলে জানা গেছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক আদালতের রায় বিষয়ে আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি উচ্চ আদালতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হবে।

তিনি বলেন, মামলাটির গুরুত্ব উল্লেখ করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির আবেদন করা হবে। যেন শুনানির জন্য একটি বেঞ্চে পাঠানো হয়। বিচারিক আদালত আসামিদের যে সাজার রায় প্রদান করেছেন তা যেন বহাল থাকে উচ্চ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সে প্রচেষ্টা থাকবে।

উল্লেখ্য, বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দুই মামলার রায়ের প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পৃষ্ঠার নথি ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে এ নথি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয়। মামলার নথিগুলো পৌঁছালে হাইকোর্টের ডেসপাস শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফারুক সেগুলো গ্রহণ করেন। এর মধ্যে এই ঘটনার হত্যা মামলার রায় ৩৬৯ পাতা এবং বিস্ফোরক আইনের মামলার রায় ৩৫৬ পাতা। আর অন্যান্য নথির মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা, তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে দেয়া সাক্ষীদের জবানবন্দি, যুক্তিতর্ক, আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্য, আদালতে দেয়া আসামিদের স্বীকারোক্তি, ট্রাইব্যুনালে দেয়া আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের হাজিরা ও দরখাস্ত রয়েছে নথির ভেতরে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews