মাটিরাঙ্গায় চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল ঘাতকদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ
ইব্রাহিম হোসেন, খাগড়াছড়িঃ
Facebook Twitter share
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৭২ ঘন্টা পর বেলছড়ির বাঙালী টিলা (পাঞ্জাবি টিলা) পেশায় কাঠ মিস্ত্রি আবুল বাশার (৪১) চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই জনকে গ্রেফতার করেছে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ।গ্রেফতারকৃতরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলেও দাবি করছে পুলিশ।
নিহত আবুল বাশার (৪১) পাঞ্জাবী টিলা এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে। পেশায় কাঠ মিস্ত্রি আবুল বাশার তিন কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। পরিকল্পিত ভাবে আবুল বাশার কে হত্যা করা হয়েছে – পুলিশের কাছে এমনটাই স্বীকারোক্তি দিয়েছে গ্রেফতারকৃতরা।
Surjodoy.com
সোমবার (৩১ মে) মাটিরাঙ্গার খেদাছড়া থেকে এ হত্যাকাণ্ডের মূল দুই ঘাতককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে মাটিরাঙ্গা উপজেলার ০৯ নং বেলছড়ি ইউনিয়নের জয়নাল মেম্বার পাড়া গ্রামের আবুল কালামের (লম্বা কালাম) ছেলে আব্দুস সালাম (২৪)। মাটিরাঙ্গা উপজেলার জয়নাল মেম্বার পাড়া গ্রামের মনির হোসেনর ছেলে আনোয়ার হোসেন (সাগর) (১৭)।
The Daily surjodoy
বুধবার (২রা জুন) সকালে ১০ টায় নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ জানান,গেল বৃহস্পতিবার (২৭ মে) বিকেলে নিখোঁজ হন আবুল বাশার বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজনের খুঁজাখুঁজির এক পযার্য়ে শুক্রবার (২৮ মে) সকালে তার নিজ বাড়ির পাহাড়ি পাদদেশে সন্ত্রাসীদের এলোপাথাড়ি দা ও লাঠির আঘাতে খুন হওয়া আবুল বাশার লাশ পাওয়া যায়।
আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই জড়িতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত করছিলো মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ।
The Daily surjodoy
এর একপর্যায়ে গত সোমবার (৩১মে) উপজেলার খেদাছড়া এলাকা থেকে মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলীর দিক নির্দেশনায় ঘাতক আব্দুস সালাম (২৪) ও আনোয়ার হোসেন (সাগর) (১৭)। গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ।
পুলিশ সুপার দাবি করেন, ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে গ্রেফতার হওয়া ২ জন।
The Daily surjodoy
উল্লেখ্য, গেল ২৭ মে নিজ বাড়ির নিচের পাহাড়ি খাদে ঘাতক কর্তৃক আবুল বাশার (৪১) কে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
নিহত আবুল বাশার (৪১)মাটিরাঙ্গার বেলছড়ি ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড বাংলা টিলা পাঞ্জাবী টিলা এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে।
ঘটনার পরের দিন ভিকটিমের ছোট ভাই আবুল কালাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
The Daily surjodoy
ঘাতক আবদুস সালাম ও আনোয়ার হোসেন কর্তৃক পুলিশের কাছে দেয়া হত্যাকান্ডের বিবরণ : পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে, ঘটনার দিন ভিকটিম আবুল বাশার কে ডেকে এনে ঘাতক আব্দুস সালামের মাচাং মুরগীর খামারে নিয়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে, গলায় দড়ি দিয়ে পেচিয়ে ধরে, কাঠের বল্লিতে হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে মূল ঘটনাস্থল হতে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে ভিকটিমের বাড়ির পাশের নিচু জায়গায় ফেলে লাশের পাশে সিগারেটর কয়েকটি টুকরো ফেলে তার মাথায় দা এর উল্টা পিঠ দিয়ে ২টি কোপ(আঘাত) মৃত্যু নিশ্চিত করে। লাশ গুম করে একই পথ ধরে পূনরায় ওই খামারে ফিরে এসে ভিকটিমের লুঙ্গি, লাশ বহনে ব্যবহৃত রশি ও ভিকটিমের ব্যবহৃত স্যান্ডেল (জুতা) পুড়িয়ে আলামত ধ্বংস করে এবং নিজেদের আড়াল করার হীন উদ্দেশ্যে তার মোবাইল-মানিব্যাগ ও চাবি ভিকটিমের বাড়ির প্রবেশ পথে রেখে আসার বিষয়ে স্ববিস্তারে স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
The Daily surjodoy
পুলিশ সুপার আরো জানান, খাগড়াছড়ি জেলা ও মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের অক্লান্ত পরিশ্রম নিরবিচ্ছিন্ন চেষ্টায় দ্রুততম সময়ের( ৭২ ঘন্টায়) মধ্যে মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধী চিহ্নিত করন উক্ত খুনের ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও জড়িত ২(দুই) জন আসামিকে গ্রেপ্তার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা সম্ভব হয়েছে।
The Daily surjodoy
তিনি আরো জানান,স্পর্শকাতর বিষয় হলো ভিকটিমদের মেয়ে বাবার খোঁজ না পেয়ে পরের দিন সকালে ঘাতক আবদুস সালামকে ফোন করে জিজ্ঞেস করে চাচা আমার বাবাকে কি দেখেছেন ওনি এখনো বাড়ি ফেরেনি ঘতক আবদুস সালাম উত্তরে বলেন বাড়ির আশে পাশে খুঁজে দেখ ।