এস এম জীবন :
রাজধানীর মিরপুরে আবাসিক মেসের মালামাল চুরির অভিযোগ করায় অভিযোগকারীকে ছুরিকাঘাত করছেন শামসুল হক ও ইমরান নামের ব্যাক্তি সহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনের নামে মিরপুর মডেল থানায় মামলা হয়েছে, যার মামলা নম্বর-১০,মামলা সূত্রে জানা যায়,বাদী মোঃ আব্দুল হাই (৪২), পিতা-মোঃ আব্দুল হাকিম, সাং-গোবিন্দপুর, থানা ও জেলা-সাতক্ষিরা, এ/পি-বাসা নং-০৮, রোড নং-০৭, মিরপুর-০৬, মিরপুর মডেল থানা, ঢাকা আপনার থানায় এসে আসামী ১। মোঃ সামছুল হক (৫৫), পিতা-মৃত বেলাল হোসেন, ২। মোঃ ইমরান হোসেন (২৬), পিতা-অজ্ঞাত, উভয় ঠিকানাঃ সাং- রাজমান, থানা- উল্লাপাড়া, জেলা- সিরাজগঞ্জ, বর্তমান বাসা নং-৩১, বড়বাগ।
লিখিত অভিযোগে বাদী আব্দুল হাই বলেন,আমি একজন বে- সরকারী চাকুরীজীবি। মিরপুর মডেল থানাধীন ৩১ বড়বাগ নামক এলাকায় আমার নিজের ভাড়া কৃত আবাসিক মেসের ৭ম তলায় আসামীদ্বয় সহ অন্যান্য সদস্যরা ভাড়ায় থাকিত। গত অক্টোবর/২০২৪ মাসে উক্ত ফ্ল্যাট মালিক আমাদেরকে মেস ছেড়ে দিতে বলিলে আমার ব্যবহৃত যাবতীয় মালামাল সামগ্রী রেখে চলে যায়। পরবর্তী ইং- ০২/১১/২০২৪ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৬:১৫ ঘটিকার সময় আমার মেসের মালামাল সামগ্রী নিতে গিয়া দেখি মেসের ১টি ফ্রিজ, যার মূল্য-৪৬,৫৭০/- টাকা, ১টি কম্পিউটারের সিপিইউ, যার মূল্য অনুমান-৪৫,০০০/- টাকা, সিসি ক্যামেরা, মূল্য অনুমান-২০,০০০/- টাকা, চেয়ার, টেবিল, ওয়াড্রাব, আলমারী, গ্যাসের চুলা মূল্য অনুমান- ৩০,০০০/-টাকা, যাহার সর্বমোট মূল্য ১,৪১,৫৭০/- (একলক্ষ একচল্লিশ হাজার পাঁচশত সত্তর) টাকা নেই।তখন আমি সহ মেসের অন্যান্যরা উল্লেখিত মালামাল সামগ্রী খোঁজাখুঁজি করিতে থাকি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানিতে পারি যে উল্লেখিত মালামাল সামগ্রী আসামীদ্বয় আমাদের মেসে হতে চুরি করিয়া তাদের ভাড়াকৃত একই ভবনের ৬ষ্ঠ তলার ফ্ল্যাট নং-১ এর অফিস কক্ষে লুকিয়ে রাখিয়াছে। পরবর্তীতে আসামীদ্বয়কে আমাদের মালামাল চুরি করিয়া নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানিতে চাইলে আসামীদ্বয় স্বীকার করে যে তাহারা আমাদের মালামাল নিয়ে গিয়াছে। আমরা মালামাল ফেরত দিতে বলিলে মালামাল ফেরত না দিয়ে সময়ক্ষেপন করিতে থাকে। পরবর্তীতে আমিসহ আমার মেসের সদস্য মোঃ রাশিদুল ইসলাম তুহিন (৪২) মোঃ রবিউল ইসলাম (৪৩) সহ ইং ০৫/১১/২০২৪ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৭.০০ ঘটিকার সময় মিরপুর মডেল থানাধীন বড়বাগ (৬০ ফিটের মাথায়) জনৈক সোহেল এর চায়ের দোকানে বসে চা খাইতেছিলাম। উক্ত সময় ১ ও ২নং আসামীদ্বয় অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন আসামীদের সঙ্গে নিয়ে জনৈক সোহেল এর চায়ের দোকানে আসিয়া আমাদেরকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে। আমরা প্রতিবাদ করিলে ১ ও ২নং আসামীদ্বয় সহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা আমাদেরকে এলোপাতাড়ী কিলঘুষি মারিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করে। একপর্যায়ে ১নং আসামী সামছুল হক তাহার পকেট থেকে একটি ধারালো খুর/চাকু বাহির করিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে আমার পেটের বাম পার্শ্বে আঘাত করিয়া কাটা রক্তাক্ত জখম করে। আমাকে মারপিট হইতে রক্ষার জন্য আমার সঙ্গীয় রবিউল ইসলাম আগাইয়া আসিলে ২নং আসামী ইমরান তাহার হাতে থাকা এন্টিকার্টার দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে রবিউলের পেটের ডান পাশে আঘাত করিয়া কাটা রক্তাক্ত জখম করে। আমাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে আসামীদ্বয় সহ অজ্ঞাতানামা অন্যান্য আসামীরা পালানোর চেষ্টাকালে স্থানীয় লোকজন ১নং আসামী সামছুল হককে ধারালো খুরসহ হাতেনাতে আটক করে। আটককৃত আসামী সামসুল হককে উপস্থিত উত্তেজিত জনতা গণ পিটুনী দিয়ে সাধারন জখম করে। ঐ সময় ২নং আসামী তাহার হাতে থাকা উক্ত এন্টিকার্টারটি ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে দৌড়ে পলাইয়া যায়। পরবর্তীতে বিষয়টি মিরপুর মডেল থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে মিরপুর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসিয়া ১নং আসামীকে হেফাজতে নেয় এবং ১নং আসামীর হেফাজত হইতে ধারালো ১টি খুর এবং ঘটনাস্থল হতে একটি এন্টিকার্টার উদ্ধার করেন।
মামলার বাদী আব্দুল হাই আর বলেন,আমার পেটে মারাত্মক জখম হয়েছে,বারোটা সেলাই লেগেছে এবং আমার সঙ্গীর আটটা সেলাই লেগেছে । স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা এসআই মাসুদ রানা বলেন, মামলা হয়েছে একজন আসামি গ্রেফতার হয়েছে, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান চলমান থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন মিয়া বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি, মামলা হয়েছে একজন আসামি আটক হয়েছে অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।