মিঠাপুকুরের খোড়াগাছে সতীনকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনঃ জীবনের ভয়ে এখন ঘর ছাড়া
রেখা মনি,নিজস্ব প্রতিবেদক
মিঠাপুকুরের খোড়াগাছে ছোট সতীনকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে বড় সতীন ও তার আত্নীয়-স্বজনদের বিরুদ্ধে। এসময় বড় সতীনের ভগ্নিপতির ছেলে মোসাদ্দেকের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হন ভুক্তভোগী ফেরদৌসি বেগম।
এদিকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও জীবনের ভয়ে এখন ঘর ছাড়া ছোট সতীন ফেরদৌসি। স্বামী ঢাকায় থাকায় কুল-কিনারাহীন ভুক্তভোগী ন্যায় বিচারের আশায় সবার দারে দারে ঘুরছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের খোড়াগাছ পূর্বপাড়ার বাদশা মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী ফেরদৌসি বেগম(৪১) দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সাথে ঢাকায় গার্মেন্টস এ চাকুরী করতেন।
করোনাকালীন নানান জটিলতায় ৭/৮ মাস পূর্বে স্বামীকে ঢাকায় রেখে আসবাবপত্র ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে স্বামীর গ্রামের বাড়ি খোড়াগাছ পূর্বপাড়ায় বড় সতীনের কাছে আসে ফেরদৌসি বেগম। আসার পর থেকেই বড় সতীন ওরেছা বেগম ছোট সতীনের প্রতি মনক্ষুন্ন হন।
এর পর তাদের দু’জনের মধ্যে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গোলমাল শত্রুতা চলে আসছিল। এসব ঘটনার জের ধরে ঘটনারদিন গত ৭ জুলাই রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে ওরেছা বেগমের সাথে ছোট সতীন ফেরদৌসি বেগমের পারিবারিক বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু হলে পূর্ব -পরিকল্পনা মোতাবেক বড় সতীন ওরেছা বেগম(৫০) এর হুকুমে একই এলাকার ওরেছা বেগমের ভগ্নিপতি সেকেন্দার আলী (৫০), সেকেন্দার আলীর ছেলে মোছাদ্দেক হোসেন(২৫) ও মৃতঃ আঃ রহমানের স্ত্রী মমেনা বেগম (৪৭)সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন ব্যক্তি রুমের ভিতর ফেরদৌসি বেগমের উপর হামলা চালায় ও মার-পিট শুরু করেন।
এসময় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টাসহ মোসাদ্দেক হোসেন ফেরদৌসি বেগমের মাধার চুল, গায়ে থাকা ওরনা ও জামা টানাহেছড়া করে ছিড়ে ফেলে শ্লীলতাহানি ঘটায়।
ফেরদৌসি বেগমকে মারপিট করার খবর পেয়ে তার বোন একই এলাকার আউয়াল হোসেনের স্ত্রী আবেদা বেগম এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। এসময় শোরগোল, আত্নচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ফেরদৌসি ও তার বোন আবেদাকে উদ্ধার করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন।
পরে শরীরের অবস্থা আরো খারাপের দিকে গেলে রংপুর প্র্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়েগিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। বর্তমানে ফেরদৌসি বেগম ঘরছাড়া হয়ে বিভিন্ন আত্নীয় স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে থাকছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ছোট সতীনকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তার শয়ন কক্ষের খাটের তোষকের নিচে থাকা প্রায় ৫০ হাজার টাকা বের করে ও তার কানে থাকা স্বর্ণের দুল খুলে নেন হামলাকারীরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ফেরদৌসি বেগম বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় ৪ জনকে আসামি করে পেনালকোড ১৪৩, ৪৪৮, ৩২৩, ৩০৭, ৩৫৪, ৫০৬, ৩৭৯, ৩৮০ ও ১১৪ পেনালকোড /ধারা মোতাবেক একটি এজাহার দায়ের করেছেন। যা তদন্তাধীন রয়েছে।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..