ভাঙনের শিকার রহিমা বেগম বলেন, যমুনার পেটে গেছে আমাগো জমিজমা। জীবন বাঁচাইতে পরিবার পরিজন নিয়া নৌকায় ঘর বানাইছি। আল্লাহ ছাড়া আমাগো দেখবার কেউ নাই।
মমতা নামে আরেকজন বলেন, জমিজমা তো নদীর পেটে, মাথা গোঁজার মতো ঘরটাই আছে। ভয়ে আছি কহন এইডাও হারামু। ছোট বাচ্চাগুলা নিয়া কই যামু বুঝবার পারতাছি না।
শনিবার সরেজমিনে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আলীপুর ও বেলটিয়া গ্রামে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। নদীর পাড়ে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না ভাঙন।
ভুক্তভোগীরা জানায়, নদী ভাঙনের কবলে পড়ে আলীপুরের অধিকাংশ মানুষ এখন বসবাস করছেন বেলটিয়া গ্রামে। বন্যার শুরুতেই এ গ্রামের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ও ৪০ বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এখনো ঝুঁকিতে রয়েছে ৩ নম্বর বেলটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মসজিদ ও আলীপুর দারুচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদরাসাসহ দুই শতাধিক ঘরবাড়ি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জুনে যমুনার ভাঙন রোধে বেলটিয়া ও আলীপুরের দেড়শ মিটার এলাকায় ১০ হাজার ৯শ’ জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এতে ভাঙন বন্ধ না হওয়ায় সম্প্রতি নদী থেকে বালু তুলে ভাঙন কবলিত বেলটিয়া গ্রামের কিছু অংশে ফেলা হচ্ছে।
গোহালিয়াবাড়ী ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল খালেক জানান, ৯ জুলাই ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বেলটিয়া গ্রাম পরিদর্শন করেছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ.কে.এম এনামুল হক শামীম। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ৩৭টি পরিবারকে ১০
হাজার টাকা ও ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন।
গোহালিয়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার জানান, বেলটিয়া ও আলীপুরের ভাঙনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
টাঙ্গাইল-৪ আসনের এমপি হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী জানান, ভাঙন রোধে যমুনা নদীর দুই পাড়ে পাকা বাঁধ নির্মাণের জন্য ২৪১ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। পানি কমলেই কাজ শুরু হবে। এছাড়া নদীতে স্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ.কে.এম এনামুল হক শামীম।
Leave a Reply