রেখা মনি, নিজস্ব প্রতিবেদক
রংপুর শহরের মধ্য গণেশপুর এলাকা থেকে দুই বোনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। শনিবার সকালে (১৯ সেপ্টেম্বর) রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় নিহত জান্নাতুল মাওয়ার বাবা মমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে এ মামলা করেন। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) উত্তম প্রসাদ পাঠক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুরে গণেশপুর এলাকা থেকে সুমাইয়া আক্তার মীমের (১৬) মরদেহ ঘরের ভেতর ফ্যানের সঙ্গে ঝুলানো অবস্থায় এবং তার চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়ার (১৪) মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শনিবার সকালে জান্নাতুল মাওয়ার বাবা অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেছেন। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে হত্যার মূল রহস্য জানার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আলামত জব্দসহ তাদের আত্মীয়-স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা বেশ কয়েকটি দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
এদিকে মরদেহ উদ্ধারের পর রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। শুক্রবার সন্ধ্যায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত মীম ও মাওয়ার পরিবারের লোকজনকে থানায় নেয়া হয়। পাশাপাশি ওই রাতেই নগরীর উত্তর বাবখা থেকে মাহফুজার রহমান রিফাত ও সদর উপজেলার লাহিড়িরহাট এলাকা থেকে আরিফুল ইসলাম নামে দুই যুবককে আটক করে পুলিশ।
তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, আটক রিফাত ও আরিফুল নগরীর মুলাটোল মদিনাতুল উলুম কামিল মাদরাসার আলিম প্রথমবর্ষের ছাত্র। তারা দুজন বন্ধু। নিহত মীমও ওই মাদরাসা থেকে এবার দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়। রিফাতের সঙ্গে নিহত মীমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রেমের সূত্র ধরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বড় বোনকে প্রেমিকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় ছোট বোনকে খুন করা হয়। পরে প্রেমিকার সঙ্গে কথাকাটাকাটির জেরে তাকে হত্যার পর মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় প্রেমিক।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার দুপুরে নিহত দুই বোনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জান্নাতুল মাওয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।