আবুল হাশেম:
রাজশাহী মহানগরীর নতুন বিলসিমলা এলাকায় মৃত্যু ব্যাক্তির জমি গোপনে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আবার নিজের দাবি করে পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের কাছে বিক্রয়ের অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে।
রাজশাহী মহানগরীর ৩ নং ওয়ার্ডের নতুন বিলশিমলা এলাকার মৃত বদর উদ্দিন ও মৃত আরকাতুন বেওয়ার ওয়ারিশ বাবুল আক্তার বাবলু ও পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের ৫ লক্ষ টাকায় রফাদফা ও হয়েছে যা এলাকাবাসীর জনসম্মুখে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় বেশ চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে সাংবাদিক লিয়াকতের জন্মস্থান নতুন বিলসিমলা এলাকায়, প্রতিটি মানুষের মুখে একই কথা কিভাবে মৃত ব্যক্তির জমি অন্যের কাছে বিক্রিও করলেন, আবার কিভাবে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জমিটি ক্রয় করে বিল্ডিং খাড়া করলেন এটা কারো বোধগম্য নয়।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার অর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিলসিমলা এলাকার মৃত লাইলি বেওয়ার ওয়ারিশগণ ও এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নগরীর নতুন বিলসিমলা এলাকার জেএল ৭৭ বহরমপুর মৌজার সাবেক ১৬০ খতিয়ানের ২৪১ দাগের আরএস ২৬৯ খতিয়ানের ৩৩৭ দাগে ওয়ারিশ সুত্রে ১৯৬৭ সালের দলিল মুলে ছোহরাব উদ্দিন বাবা ৫ কাঠা জমি প্রাপ্ত হন এবং সেই দলিল থেকে ০.০৪১৩ শতাংশ জমির মালিক সাংবাদিক লিয়াকত দিংরা। ভোগ দখল থাকা অবস্থায় ২০০৪-২০০৫ এল এ কেসে .০২৮৭ অধিগ্রহণ হয়। অধিগ্রহণের পর লাইলি বেওয়ার ওয়ারিশগনের ৪৪০৮ খতিয়ান মুলে.০১২৫ শতাংশ বা সুয়া শতক জমি প্রাপ্ত হন। সেই জমিতে চোখ পড়ে বিলসিমলা এলাকার নব্য ভুমি দস্যু বাবলু আক্তার দিংদের।
সেই জমি নিতে নানা কু-কৌশল অবলম্বন করে ৩৩৭ দাগের মালিকদের না জানিয়ে গোপনে পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের নিকট বিক্রয় করে দেন।
মৃত লাইলি বেওয়ার বড় ছেলে লালু বলেন, সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কাজে ২০০৪-০৫ এলএ কেসে ভূমি অধিগ্রহনের পর আমাদের সুয়া শতক জমি অবশিষ্ট থাকে। হঠাৎ গত ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারী বিষয়টি জানতে পারি আমাদের পার্শ্ববর্তী ৩৩৮ দাগের ওয়ারিশ ০.০১১০ শতাংশ জমি তলে তলে নিজ নামে নামজারি করে পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন ভুমি হারা মৃত লাইলী বেওয়ার ওয়ারিশগন।
আদালতে যাওয়া ছাড়া আমাদের কোন বুদ্ধি নাই বিধায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি আশা করি আমরা ন্যায়বিচার পাব। আমাদের ওয়ারিশন সূত্রে পাওয়া জমি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেরত চাই। সেই সঙ্গে এই জালিয়াতিতে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে লাইলি বেওয়ার ছোট ছেলে সাংবাদিক লিয়াকত বলেন, একদিন বাবলু বাসায় ডেকে নিয়ে বলে তোমাদের জমির খাজনা খারিজ আমরা দিচ্ছি তোমাদের মধ্যে আমাদের জমি ঢুকে আছে। আমি কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে হতাশ হয়ে ফিরে আসলাম।
এভাবে রেকর্ডীয় সম্পত্তির মালিকের হোল্ডিংভুক্ত জমি নিজ বলে প্রচার করা সমাজের প্রতি একটি অশনি সংকেত। আবার পুলিশ কর্মকর্তা আইনের লোক হয়ে কিভাবে বেআইনি কাজে অংশগ্রহণ করল তা আমার বোধগম্য নয়। যাচাই-বাছাই ছাড়া এভাবে জমি ক্রয় বিক্রয় হলে সাধারণ মানুষের মনে বাড়ির ভিটা নিয়ে সংশয় থেকে যায়। বিভিন্ন আইন করেও এদেরকে থামানো যাচ্ছে না। এই সিন্ডিকেটের হাত থেকে ২০০৪-০৫ এলএ কেসের অধিগ্রহণের নোটিশ পাওয়ার পর থেকে বিগত ১৯ বছরে বিলসিমলা এলাকার ৩৩৯ দাগের খাইরুল ইসলাম, ৩৩৭ দাগের সহিদুর রহমান, ৩৪০ দাগের শাহাদত হোসেন ও আমির হোসেনের ওয়ারিশগন, ৩৩৪,৩৩৫,৩৩৬ দাগের ডেভলপার আব্দুর রশিদ, কেউই রেহাই পাইনি এদের হাত থেকে। মামলা দেওয়ার মত আর কোন দাগ অবশিষ্ট নাই বিধায় এরা ৩৪০ দাগের রাস্তার জমি নিজ বলে প্রচার করছে সুজন আলিসহ বাবলু দিংরা।
অনুসন্ধানে জানা যায় প্রকৃতপক্ষে এরা নব্য ভূমিদস্যর একটা সিন্ডিকেট, এরা সদর জজ কোর্টে দেওয়ানি মামলা করে হয়রানি করে অর্থ আদায় করায় এদের মূল উদ্দেশ্য। আসেপাশের সাক্ষি না নিয়ে দুরের লোককে সাক্ষী বানিয়েছেন তারা আগে থেকে এই সিন্ডিকেটের সদস্য। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি এবং সেই সাথে আর কোন মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত বাবলু বলেন, ওরা যার কাছে জমি কিনেছে আমরাও তার কাছে থেকে জমি কিনেছি। ওদের মধ্যে আমাদের জমি ঢুকে ছিলো তাই নিয়েছি। ওয়ারিশদের না জানিয়ে ০.১১০ শতাংশ জমি বিক্রি করার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা লাইলি বেওয়ার বড় ছেলে লালুকে জানান হয়েছিল লিয়াকত তখন ছোট ছিল। তিনি আরও বলেন, আমাদের আর এস ৩৪০ দাগের মধ্যেও জমি ঢুকে আছে আমরা আদালতে মামলা করেছি।
জমি ক্রেতা পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, হ্যা আমরা ৩৩৭ দাগে ১১ ছটাক জমি কিনেছি বাবলুদের কাছে।
বাবলুরা আমাদের নামে আদালতে মিসকেস করেছিল আব্বা না বুঝে সই দিয়েছে ওটাতে আমারা রায় পেয়েছি এর বেশী কিছু বলতে পারবো না। তৃতীয় পক্ষের একজন কাজ করছে আমি বুঝতে পেরেছি। আমাদের জমির কোন সমস্যা নায় বলে ফোন কেটে দেন।