কাজী হুমায়ুন কবির, চট্টগ্রামঃ
রেল শ্রমিক লীগের পদ থেকে সম্প্রতি ৫ নেতাকে বাদ দিয়ে হাইকোর্ট নতুন করে কমিটি করার আদেশ দিলে এরই মধ্যে কে কে নতুন কমিটিতে সভাপতি সেক্রেটারী পদে প্রার্থী হবেন এনিয়ে রেলপাড়ায় চলছে উষ্ণ আলোচনা। কারন এই সংগঠনটি রেল কর্মচারীদের দাবী দাওয়া আদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ন সংগঠন। গুরুত্বপূর্ন পদে অবসর প্রাপ্তদের বাদ দিয়ে কর্মরত সিনিয়রদের চান অনেকে। এরই সুত্র ধরে অনেকেই গুরুত্বপূর্ন পদগুলোতে প্রার্থী হতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে সভাপতি প্রার্থীদের তালিকায় আসতে চান মইন উদ্দিন মোল্লা। রেলের বর্তমানে কর্মরত কর্মচারীর মধ্যে পুরাতন কর্মচারী হলেন মোঃ ময়েন উদ্দিন মোল্লা। তিনি সিগনাল টেলিকমে কারপেন্টার পদে কর্মরত। বাংলাদেশ রেলওয়ের শ্রমিকলীগের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব রহমত উল্লাহ চৌধুরীর আদর্শে উৎসাহিত হয়ে রেলশ্রমিকলীগে যোগ দেন তিনি। কর্মের পাশাপাশি কর্মচারীদের দাবীদাওয়া আদায়ের সংগঠন রেল শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সিআরবি শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে ইতিমধ্যে সুনাম অর্জন করেছেন। সেইসাথে রাজনৈতিক অঙ্গনে চট্টগ্রাম মহানগর শ্রমিকলীগের সদস্য হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জনসেবাকে আদর্শ হিসাবে সামনে রেখেই তিনি রাজনীতি করেন।
কেন তিনি সভাপতি হতে চান এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মহামান্য আদালত অবসর প্রাপ্তদের মুল পদগুলো থেকে বাদ দেয়ায় আমি মনে করি আইন অনুযায়ী সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়েছে আদালত। অবসর প্রাপ্তরা দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকলীগের পদ আকড়ে থাকায় রেল সংগঠনের কোন গুনগত পরিবর্তন হয়নি। সেইসাথে দীর্ঘদিন যাবত এটা পারিবারিক কমিটি হিসাবে পরিচিত হয়েছে। অবসরপ্রাপ্তদের দখলে থাকা সংগঠনে কোনরুপ গতি ছিলনা। তাই আমরা কর্মরতরাও চাইনা অবসরপ্রাপ্তরা কমিটির মুল পদগুলোতে আসুক। কারন তাদের নিয়ে বর্তমান কর্মরত কর্মচারীদের কোন লাভ হচ্ছেনা। আমি দেখেছি, সঠিক সময়ে কর্মচারীদের দাবী দাওয়া আদায়ে তারা বার বার ব্যর্থ হয়েছে। আমি সিনিয়র কর্মচারী হিসাবে সভাপতি হলে বর্তমানে কর্মরত কর্মচারীদের দাবী দাওয়া আদায়ে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবো। সেইসাথে সংগঠনকে গতিশীল করতে কমিটির সবার সহযোগীতা নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করবো। বর্তমানে রেলশ্রমিকলীগে তিনটা গ্রুপ। আমি মনে করি, রেল শ্রমিকলীগের গ্রুপিংটা বাংলাদেশ রেলওয়ের সর্বনাসের কারন। এই গ্রুপিংয়ের কারনে মুলত দাবী দাওয়া আদায় হচ্ছেনা। তাদের গ্রুপিংয়ের কারনে সুবিধাভোগীরা সুযোগ নিচ্ছে। বর্তমান শ্রমিকলীগের হাতে কোন ক্ষমতা নেই। তাই আমি চাই, রেলশ্রমিকলীগের তিনটা গ্রুপ এক হয়ে কাজ করুক। তিন গ্রুপের ঐক্য হলে রেল কর্মচারীদের দাবী দাওয়া আদায়ে শক্তিশালী একটি সংগঠন হবে।
রাজনেতিক জীবনে ১৯৭১ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলিগের সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ছিলেন। ১৯৮৬ সালে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ঢাকার কমলাপুরে ডান পায়ে গুলি লাগে। তবু জীবন চলার যুদ্ধে থেমে থাকেননি তিনি। আশি ও নব্বইর দশকে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে কেউ তাকে দাবাইয়া রাখতে পারেনি। রেল শ্রমিক আন্দোলনেও তিনি ছিলেন সক্রিয় কর্মি।