
শেখর চন্দ্র সরকার বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ফেসবুকে লাইভে সমালোচনামূলক বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সেখানে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর স্বামী এবং তার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন।
শনিবার (২১ আগস্ট) রাতের ওই বিতণ্ডা থামাতে গিয়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরাও আক্রান্ত হয়েছেন। পরে নিরাপত্তার অভাবে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বা জয়নব বেগমকে তার স্বজনরা ওই হাসপাতাল থেকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে স্থানান্তর করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, জেলার শাহাজাহানপুর উপজেলার নন্দগ্রাম এলাকার মোহাম্মাদ আছলামের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জয়নব বেগমকে (৩০) গত বুধবার শজিমেক হাসপাতালে গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। তবে সেখানে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না- এমন অভিযোগ তুলে ওই নারীর স্বামী আছলাম শনিবার দুপুরে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কক্ষে গিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফেসবুকে লাইভ করেন। যেহেতু গাইনি বিভাগে নারী চিকৎসকরাই বেশি থাকেন তাই এ ধরনের লাইভের বিষয়টি জানার পর সহকর্মী পুরুষ ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন। এরপর আছলাম সন্ধ্যার পর গাইনি ওয়ার্ডে গেলে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে তার বাক-বিতন্ডা হয়।
অন্তঃসত্ত্বা নারীর স্বামী ও দেবরের অভিযোগ, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের মারধর করেছে। এমনকি হাসপাতালে কর্তব্যরত সাদা পোশাকে থাকা ৪ পুলিশ সদস্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে তারাও মারধরের শিকার হন। পরে হাসপাতাল প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে গেলে রাত ৯টার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
পরে তারা নিরাপত্তার অভাববোধ করায় অন্তঃসত্ত্বা জয়নবকে শজিমেক হাসপাতাল থেকে বের করে শহরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করেন।
ওই ঘটনা সম্পর্কে অন্তঃসত্ত্বা নারী জয়নবের স্বামী আছলাম অভিযোগ করেছেন, শনিবার তার স্ত্রীর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সেটি বন্ধের জন্য চিকিৎসকের কাছে সাহায্য চাইতে গেলে তাকে ও তার স্ত্রীকে সন্ধ্যার পর প্রায় এক ঘণ্টা এক রুমে আটকিয়ে মারধর করা হয়। আছলামের ছোট ভাই জাকির হোসেন দাবি করেছেন, অন্তত ৫০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক তাদের মারধর করেছে।
শজিমেক মেডিকেল হাসপাতাল সংলগ্ন ছিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলাম জানান, কর্তব্যরত ৪ পুলিশ সদস্য সামান্য আঘাত পেয়েছেন। তিনি বলেন, সাদা পোশাকে ছিলেন বলেই তাদেরকে হয়তো চিনতে পারেনি।
শজিমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন, অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর স্বামী দুপুরে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নিয়ে ফেসবুকে লাইভ করেন। এ নিয়েই মূলত সমস্যার সূত্রপাত। সন্ধ্যার পর তা নিয়ে আবারও হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।
চিকিৎসাধীন অন্তঃস্বত্ত্বা সেই নারীকে স্বজনরা হাসপাতাল থেকে নিয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে তার সঙ্গে দেখা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার আশ্বাস দিই। কিন্তু তার স্বজনরা জানায় তারা নিরাপদ বোধ করছেন না। তাই চিকিৎসার জন্য অন্যত্র যেতে চান।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply