পাকা ধান আর কাঁচা শীতের আমেজ নিয়ে প্রকৃতিতে অনেকটা চুপি চুপি এসে নিজের অস্তিত্বের জানান দিয়েছে ঋতুকন্যা হেমন্ত। হেমন্তের রোদে নেই সেই রুদ্র উত্তাপের ছোঁয়া।
ভোরের শিশির ভেজা ঘাসে মুক্ত দানা আর ফসলের সোনালি সমুদ্র যেন পূর্ণতা আনে প্রকৃতিতে। এনে দেয় নবান্নের সমৃদ্ধি আর সফলতা। তবে, নগরায়ণের প্রভাবে আবহমান কাল ধরে চলা গ্রামীণ বাংলার এই ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন প্রকৃতিবিদরা।
“মাঠের ঘাসের গন্ধ বুকে তার, চোখে তার শিশিরের ঘ্রাণ, তাহার আস্বাদ পেয়ে অবসাদে পেকে ওঠে ধান” –কবি জীবনানন্দের দেখা রূপসী বাংলার আবহমান কার্তিকের সোনালি ক্ষেত আর শিশিরের ঘ্রাণের দেখা মেলে এই হেমন্তে।
কৃষিনির্ভর জনজীবনে হেমন্ত আনন্দ বেদনার কাব্যের মতো শুরুতে অভাব-অনটন আর শেষটায় সমৃদ্ধির সোনালি উদ্ভাসে টইটুম্বুর। দেখতে দেখতে সবুজ মাঠগুলো ছেয়ে গেছে হলুদ চাদরে, জানান দিচ্ছে নবান্নের কথা।
নবান্ন মানেই তো চারিদিকে পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ, মাঠে মাঠে চলে ফসল কাটার ধুম। এই ফসলই সমৃদ্ধি আনবে কৃষকের জীবনে। মাতাবে সার্বজনীন উৎসবের ছোঁয়ায়।
এরই মধ্যে কিষাণ-কিষাণী নিতে শুরু করেছেন নবান্নের সাজ। ঢেঁকি ধোয়ামোছা, চলছে মাটির ঘর লেপা, আর গোলায় ধান তোলার কাজ। প্রকৃতিবিদ দ্বিজেন শর্মা মনে করেন, হেমন্ত ফসলের গোলা ও মনভরপুর এক ঋতু।
সবুজ ও সোনারঙ জমিনে মুক্তোর কারুকাজ। হিম ও উষ্ণ সেই কুয়াশাই বলছে শীত আগত। হৈমন্তী হাওয়ার স্বরলিপিরসুর তাই।