1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
সন্দ্বীপে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে দুই কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের এক মাসের মাথায় ধস
রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

সন্দ্বীপে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে দুই কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের এক মাসের মাথায় ধস

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০২৩, ২.৪৩ পিএম
  • ১২৬ বার পঠিত

রিয়াদুল মামুন সোহাগঃ

সন্দ্বীপে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে দুই কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের এক মাসের মাথায় ধসে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।জোয়ারের ঢেউয়ে সড়কের নদীপ্রান্তের গাইডওয়াল ধসে পড়েছে।সম্প্রতি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গাছুয়া ইউনিয়নের আমির মোহাম্মদ নৌ-ঘাটে এই অবস্থা দেখা যায়।কয়েকদিন দিন আগে জোয়ারের ঢেউয়ে সড়কটির নদীপ্রান্তের অংশে গাইডওয়াল ধসে পড়েছে।জোয়ারের পানি ও বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে সড়কের কিছু অংশের মাটি।এর ফলে সড়কের একাধিক স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

 

সড়কটির অবস্থান উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নে। গাছুয়া আমির মোহাম্মদ নৌঘাট এলাকায় মূল বেড়িবাঁধ থেকে সড়কটি শুরু হয়ে চরের ওপর দিয়ে সাগরের দিকে গিয়ে শেষ হয়েছে।এই নৌঘাটে ফেরিঘাট করার প্রস্তাব রয়েছে।সেখানে যানবাহন চলাচলের জন্য সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

 

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার(পিআইও)কার্যালয় থেকে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে।ওই কার্যালয় সূত্র জানায়,২ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ২০ ফুট চওড়া সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।গত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে নির্মাণকাজ শুরু হয়।জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে কাজ শেষ করা হয়।সড়কটির নদীপ্রান্তের মাটি ধরে রাখার জন্য ৭০০ মিটার অংশে গাইডওয়াল নির্মাণ করা হয় সড়কটি নির্মাণের সময়ই কাজের ধরন দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা করেছিলেন,জোয়ারের ঢেউয়ে সড়কটি টিকবে না।সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে।নির্মাণের এক মাস না যেতেই এক জোয়ারে সড়কটি ধসে পড়ার ঘটনায় স্থানীয় লোকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সড়কের ছবি ছড়িয়ে দিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করছেন।

 

জোয়ারের পানিতে ধুয়ে যেতে পারে,এমন আশঙ্কায় নদীর প্রান্তে মাটি ধরে রাখার জন্য গাইডওয়াল নির্মাণ করা হয়েছিল।গত কয়েক দিন সাগর এত উত্তাল ছিল যে প্রবল ঢেউয়ে সড়কের মাথায় কিছুটা ভেঙে গেছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।এমনি প্রকৌশলীদের মাধ্যমে নকশা কিংবা সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের তথ্যও পাওয়া যায়নি।পিআইওর দপ্তরের পছন্দের লোকের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

ঠিকাদার আদনান জাবেদ গাছুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি।তিনি আমির মোহাম্মদ ফেরিঘাটের জেলা পরিষদের ইজারাদারও।জানতে চাইলে আদনান জাবেদ বলেন,ঘাটটি যেহেতু তাঁর কাছে ইজারায় আছে,তাই সড়কটি নির্মাণেও তাঁকে ঠিকাদার হিসেবে দেওয়া হয়েছে।নিজের ঘাটের যাত্রীদের সুবিধার্থে তিনি চুক্তির বাইরে অন্তত ২৫০ ফুট বেশি রাস্তা করেছেন।সেখান থেকে ৭০–৮০ ফুট রাস্তা জোয়ারের ঢেউয়ে ভেঙেছে।কিন্তু চুক্তির অংশ ভাঙেনি।গাইডওয়াল তাঁর চুক্তিতে ছিল না।তবুও সড়ক টেকানোর জন্য তিনি কাজ করেছেন।এখনো কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।বৃষ্টিতে যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে,সেখানে তিন দফায় মেরামত করেছেন।জোয়ারে যেখানে ভেঙেছে,সেখানেও মেরামত করে দেবেন।

 

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,গত ১২ মার্চ স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান সড়কের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।এরপর কাজ শুরু হয়। সড়কটির গাইডওয়াল নির্মাণের সময় সমালোচনা শুরু হয়।গাইডওয়াল ধরে রাখার জন্য যে খুঁটি দেওয়া হয়েছে,তা ছিল বিচ্ছিন্ন।সেটি এক জোয়ারে টিকবে না বলে তখন আশঙ্কা করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।নির্মাণের সময়ই স্থানীয়রা আশঙ্কা করেছিলেন এই গাইডওয়াল ও সড়ক টিকবে না।

 

গাছুয়া এলাকার একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই সড়কটি ধরে নৌযাত্রীরা যাতায়াত করেন। বর্ষা শুরুর পর কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পুরো সড়কের একাধিক স্থানের মাটি ধুয়ে গেছে।কিছুদিন আগে জোয়ারে সড়কের মাথার গাইডওয়াল ও সড়কটির কিছু অংশ ধসে যায়।

 

ফেরিঘাট চালুর ঘোষণার পর যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য সড়কটি নির্মাণের প্রকল্প নেয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর।এক মাস না যেতেই ধসে পড়েছে গাইডওয়াল।

 

সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলন নামের একটি সংগঠনের সভাপতি হাসানুজ্জামান সন্দ্বীপি বলেন,ফেরি চলাচল শুরুর আগেই সড়কটি ধসে গেল।বর্ষার আগমুহূর্তে সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু করে প্রশাসন।তখন তাঁরা আশঙ্কা করেছিলেন,সড়কটি টিকবে না,এখন তা–ই হলো।তিনি বলেন,সন্দ্বীপে বর্ষার আগে যেকোনো সড়ক নির্মাণ করলে সেটি টিকবে না,বিষয়টি বুঝতে প্রকৌশলী হওয়ার দরকার নেই।যদি আমরা সাধারণ মানুষের মাথায় আশঙ্কার সৃষ্টি হয়,তাদের কেন বিষয়টি মাথায় এল না।

 

জানতে চাইলে পিআইও মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন,ফেরিঘাট চালুর ঘোষণার পর যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য তাঁরা মূলত একটি প্রকল্প তৈরি করে গ্রামীণ মাটির সড়কের আদলে সড়কটি নির্মাণ করেছেন।সড়কটিতে মাটি দেওয়া হয়েছে।ধীরে ধীরে সেটি বসে শক্ত হয়ে যাবে।কাঁচা মাটি হওয়ায় বর্ষা শুরুর পর একাধিক স্থানে ভেঙেছে।সেটি মেরামত করা হয়েছে।জোয়ারের পানিতে ধুয়ে যেতে পারে,এমন আশঙ্কায় নদীর প্রান্তে মাটি ধরে রাখার জন্য গাইডওয়াল নির্মাণ করা হয়েছিল।গত কয়েক দিন সাগর এত উত্তাল ছিল যে প্রবল ঢেউয়ে সড়কের মাথায় কিছুটা ভেঙে গেছে।পরিবেশ ঠিক হলে তাঁরা সেটি আবার মেরামত করে দেবেন।পাইলিং করে গাইডওয়াল নির্মাণ করার বরাদ্দ ছিল না।এর ফলে কোনোরকম মাটি ধরে রাখার জন্য গাইডওয়াল নির্মাণ করেছিলেন তাঁরা।

 

এক প্রশ্নের জবাবে পিআইও মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে।ধসে যাওয়া অংশ মেরামতের জন্য ঠিকাদারকে বলা আছে। প্রয়োজনে আপৎকালীন ফান্ড তৈরি করে সড়কটি মেরামত করে টিকিয়ে রাখা হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews