রেখা মনি, নিজস্ব প্রতিবেদক;
দিনে সূর্যলোকে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক। সন্ধ্যা হলেই হালকা কুয়াশার সে যাচ্ছে চারপাশ। সারারাত গাছের পাতা নিগ্রো টিনের চালে পড়া শিশিরবিন্দুর টিপটপ শব্দ জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে শীতের আগমনের চিত্র এটি।
দিনের তাপমাত্রা অনেকটাই সহনীয় থাকলেও সন্ধ্যা হতেই তা হ্রাস পেয়ে বাসিন্দাদের উষ্ণ কাপড় পরিধানের বাধ্য করছে। স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার বলছে,ডিসেম্বরের শুরুতে তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার (কৃষিমন্ত্রী ও সিনপটিক) সূত্র জানায়, জেলায় গত কয়েকদিন ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছে। মঙ্গলবার (৩০) নভেম্বরজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।শীতের স্বাভাবিক নিয়মে আগামীতে তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার।
সঙ্গে বাড়বে কুয়াশার ঘনত্ব। এদিকে শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ধনুকররা। আর পোশাক সংগ্রহে ভ্রাম্যমান কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন নিম্নআয়ের মানুষ জন।
সদর উপজেলার ধল্লা অববাহিকার দিনমজুর মোস্তাফিজার জানান, গরমের দিন তাদের জন্য ভালো। শীত আসলেই নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়।শীতবস্ত্রের অভাবে যেমন কষ্ট পেতে হয় তেমনি এই মৌসুমে মাঠে কাজ করে রোজগার করা তাদের জন্য আরো বেশি কষ্ট দায়ক।
মুস্তাফিজের বলেন, এলাও তেমন ঠান্ডা পড়ে নাই। গরমের দিনে ভালো।ঠান্ডা আসলে কাপড়ের কষ্ট কামাই রোজগার করি খাওয়াও কষ্টের। এদিকে চরাঞ্চলের এখনো জেকে বসেনি শীত। রাতে হালকা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলেও দিনের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক বলে জানান সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর রলাকাটা বাসিন্দা সুবহান আলী।
ব্রহ্মপুত্র নদের চরের বাসিন্দা ও পেশায় শিক্ষক মবিন বলেন, তাপমাত্রা অনেকটা কমে আসলো এখনো তীব্র শীত আসেনি।রাতে চারপাশে হালকা কুয়াশায় ঢেকে থাকলেও ঠান্ডা খুব একটা লাগছেনা। চরের জীবনযাত্রা এখনো স্বাভাবিক রয়েছে। মৌসুমের শুরুতেই শীতের তীব্রতা হালকা হলেওডিসেম্বরে একাধিক শৈত্য প্রবাহের পূর্বাভাস দিচ্ছে স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার।
তখন তাপমাত্রা অনেকটাই হাসবে জীবনযাপন বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছে প্রতিষ্ঠানটি। রাজাহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার এর ( কৃষি ও সিনপটিক )পর্যবেক্ষক সুবল চন্দ্র সরকার জানান,ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জেলায় একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আবহাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ডিসেম্বরের শেষের দিকে মাঝারি থেকে ভারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুল হাই সরকার জানান, শীত মোকাবেলায় সরকারিভাবে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার ৯ উপজেলায় ৩ পৌরসভায় ৩৫ হাজার ৭০০ কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও শীতার্তদের পোশাক কেনার জন্য উপজেলা ভেদে ৮ থেকে ১৪লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।