
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে সরকারি খাল দখলের মহোৎসব মেতে উঠেছে একটি মহল
মিহিরুজ্জামান জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরাঃ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের রতনপুর ইউনিয়নের বাইনতলা খাল দখলের মহোৎসব মেতে উঠেছে একটি মহল।খাল দখল করে পানিপ্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত করার কারণে বর্ষা মৌসুমে হাজারো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, মাছের ঘের আর ফসলের জমি পানিতে একাকার হয়ে গেছে। বর্তমানে এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ। এলাকাবাসী জানান, একসময়ে এই বাইনতলা খালের পানি নিয়ে ফসলের চাষাবাদ, গোসল, মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কাজে ও বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের কাজে ব্যবহার হতো। কিন্তু কয়েক বছর যাবত রতনপুর ইউনিয়নের সৈয়দালীপুর গ্রামের আব্দুল বারী মোড়লের ছেলে ও আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল ইসলাম (৪৫) ওরফে খাল শহীদের নেতৃত্বে কতিপয় খাল খাদক ১২ একরের সামান্য বেশি খাল ইজারা নিয়ে নেট-পাটা বসিয়ে ও বিভিন্ন স্থানে বেঁড়িবাধ নিয়ে খাল দখলের মহোৎসবে মেতে উঠেছে।ফলে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে উপজেলার টুপদিয়া, কাটুনিয়া, সুবর্ণগাছী মাছরাংগা, চকপরানপুর, দত্তনগর, সৈয়দালীপুর, চকরামগোবিন্দপুর, নাটুয়ারবেড়, খড়িতলা, তেরুলিয়াসহ আরও কয়েকটি গ্রামের সাধারণ মানুষ।
ওই এলাকার নুরুজ্জামান, হাবিবুল্ল্যাহ, আবু হাসান, নেছার গাজী, আবু মুছা, আবুল কালাম, রবিউল ইসলামসহ শতাধিক ব্যক্তি জানান, কয়েক বছর যাবত শহিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে খাল খাদকরা প্রায় ১০ কিলোমিটারের অধিক লম্বা বাইনতলা খালের মধ্যে মাত্র ১২ একরের সামান্য বেশি খাল ইজারা নিয়ে ৫ কিলোমিটারের বেশি এলাকা জবরদখল করে মাছ চাষ করছে। খাল ইজারা নিয়ে সরকারি নিয়ম-নীতি না মেনে টোনা জাল ও পাটাতন নেটের বেড়া দিয়ে পানি নিষ্কাশনে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এতে কৃষিকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এলাকায় পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে।উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার ছত্রছায়ায় থাকা খাল শহীদ দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে জানান তারা।এব্যাপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলামের কাছে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির বলেন, আমি এখনই খোঁজ নিচ্ছি। ওই ইউনিয়নের জলাবন্ধতা দূর করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনাও দিচ্ছি।এদিকে অভিযুক্ত শহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চুনাখালি মৎস্যজীবী সমিতি ৬.১২ একর জমি ও চক-সন্তোষপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে ৬.২৩ একর জমি ইজারা দিয়েছে সরকার। আমি এই দুই ক্লাবের উপদেষ্টা ও সদস্য। আমরা বৈধভাবে ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছি।হাজার হাজার পরিবারকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা ও স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ বাইনতলা খালের ইজারা বাতিল ও অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে ভূক্তভোগী সহ সচেতন মহল।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply