1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
হয়রানির শিকার নামজারি,খতিয়ান আছে, এসিল্যান্ড নেই
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪১ অপরাহ্ন

হয়রানির শিকার নামজারি,খতিয়ান আছে, এসিল্যান্ড নেই

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২০, ৩.৪৫ এএম
  • ২৮০ বার পঠিত

ছাতক প্রতিনিধি ::

ছাতক উপজেলার জমি খারিজ সংক্রান্ত রেজিস্ট্রার (ভলিয়ম) একই বিভাগের দুটি অফিসের তথ্যে অনেক ক্ষেত্রে মিল না থাকায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সেবাপ্রার্থী জনগণ। ফলে নাম খারিজে দীর্ঘসূত্রিতার বেড়াজালে ঘুরপাক খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ভূয়া নাম খারিজ করে অন্যের মূলবান ভূমি দখল করছে প্রভাবশালীরা। দুই অফিসের রেজিস্ট্রারে মিল না থাকায় সঠিক কাগজপত্র প্রদর্শন করেও হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনেকে। ছাতক উপজেলা ভূমি অফিসে ক্রয়কৃত জমির নাম খারিজ করতে এসে ‘জাল কাগজপত্র’ সরবরাহের অভিযোগে দায়ের করা এমন একটি মামলায় সম্প্রতি আসামি হয়েছেন ৭জন সেবাপ্রার্থী। নাম খারিজ মামলার শুনানির সময় স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ দুইজনকে আটকের পর ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত নাজমুল ইসলাম সিলেট থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকার ছাতক উপজেলা প্রতিনিধির দায়িত্বে আছেন। জনস্বার্থে দুটি অফিসের রেজিস্ট্রারের মধ্যে সম্বয়নপূর্বক জমি সংক্রান্ত স্পর্শকাতর তথ্য সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখার দাবি সেবাপ্রার্থী মানুষের।

জানা যায়, তাতিকোনা মৌজার এসএ ৩ খতিয়ানের ২৯৮ নম্বর দাগের ৬৯ শতক এবং ১৭১ নম্বর খতিয়ানের ১৩ নম্বর দাগে ২৫ শতক ভূমি তাতিকোনা গ্রামের মৃত রথিন্দ্র বল্লভ চৌধুরীর ছেলে বিনায়েক চৌধুরীর নামে ১১৪/১৯৯৫-৯৬ নম্বর নামজারি মোকদ্দমার আদেশে ৩৪৪ নম্বর খতিয়ান খোলা হয়। উক্ত খতিয়ান থেকে বিনায়ক চৌধুরী কর্তৃক নিযুক্ত আম মোক্তারের কাছ থেকে গত ১ সেপ্টেম্বর (দলিল নম্বর ১৭৩৫ ও ১৭৩৭) একই গ্রামের আজেফর আলী, তোয়াহিদ আলী ও আদরি বেগম পৃথক দুটি দলিলের মাধ্যমে ৬ শতক ভূমি ক্রয় করেন। বুধবার (১৮ নভেম্বর) পৃথক দুটি নাম খারিজ মামলার শুনানির সময় ‘জাল কাগজপত্র’ উপস্থাপনের অভিযোগে আটক হন ক্রেতার প্রতিনিধি স্থানীয় সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম ও ভূমি দাতার আম মোক্তার কবির মিয়া। উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) দাবি, বিনায়েক চৌধুরীর নামে ১১৪/১৯৯৫-৯৬ নম্বর নামজারি মোকদ্দমার আদেশ বলে খোলা ৩৪৪ খতিয়ান অন্য নামে থাকায় উক্ত খতিয়ানের বিপরীতে উপস্থাপিত কাগজপত্র তার কাছে সন্দেহজনক প্রতীয়মান হওয়ায় ভূমি দাতা, ক্রেতা এবং ক্রেতা ও বিক্রোতার প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভূমি মালিক কর্তৃক নিযুক্ত আম মোক্তারের দেওয়া তথ্যমতে, বিনায়েক চৌধুরীর নামে আগত ৩৪৪ খতিয়ানে ছাতক ইউনিয়ন ভূমি অফিসের রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ আছে। সেই রেজিস্ট্রার বলে গত ৩০ জুলাই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ১৭ হাজার টাকা খাজনা পরিশোধ করেন। খাজনা আদায়ের রশিদে ছাতক ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার সীলমোহরযুক্ত স্বাক্ষর রয়েছে। এদিকে, যে খতিয়ানকে জাল আখ্যায়িত করে ৭জন সেবাপ্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে, সেই নাম খারিজ মামলার আবেদন যাচাইবাছাই পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গত ১৮ অক্টোবর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে লিখিত নির্দেশ দেন ছাতক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাপস শীল। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কর্তৃক পাঠানো প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আবেদনকারীগণ আবেদনকৃত জমিতে সরেজমিনে দখলে আছেন। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় তাদের জমির প্রাপ্যতা সঠিক আছে। দেওয়ানি মামলা রেজিস্ট্রার পর্যালোচনায় আলোচ্য জমির বিষয়ে কোনও দেওয়ানি মামলা বা আদালতের নিষেধাজ্ঞা দেখা যায় না। অত্র জমি অর্পিত, পরিত্যক্ত, খাস বা সরকারি কোনও স্বার্থযুক্ত নয়। জমির উল্লেখিত শ্রেণি সঠিক আছে। আবেদনকারীদের নামে নামজারি ও জমাভাগের সুপারিশ করেছেন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার দেওয়া প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ছাতক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাপস শীল গত ৯ নভেম্বর নাম খারিজ মামলা শুনানির তারিখ ধার্য করেন। ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত শুনানিতে উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ১৮ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। ওই দিনের শুনানির সময় জাল কাগজপত্র সরবরাহের অভিযোগ এনে ভূমি দাতা, গ্রহিতা ও তাদের প্রতিনিধিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এডিএম রুহুল আমিন বাদি হয়ে ছাতক থানায় মামলা দায়ের করেন। শুনানিতে উপস্থিত দাতা ও গ্রহিতার দুই প্রতিনিধিকে আটক করে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তাদের মধ্যে একজন স্থানীয় সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম। অপর একটি নাম খারিজ মামলা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উল্লেখিত ৩ নম্বর খতিয়ানের ১২১ নম্বর দাগের ৩ শতক ভূমি গত ২০ জুলাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাপস শীলের স্বাক্ষরে ৮৭৬ নম্বর খতিয়ানে নাম খারিজ করান ছাতক পৌর শহরে ম-লিভোগ এলাকার বাসিন্দা শামীম মিয়া। উপজেলা ভূমি অফিসের বিশ্বস্থ একটি সূত্র জানায়, অফিসের নাম খারিজ রেজিস্টার দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অফিসের একটি অসাধু চক্র অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য রেজিস্টার থেকে পাতা ছিড়ে ফেলে মূল্যবান ভূমি মালিকানার স্বপক্ষের নথি গায়েব করে আসছে। এতে দীর্ঘমেয়াদী ভোগান্তিতে পড়ছেন জমির মালিকরা।

এদিকে, ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মামলায় গ্রেফতার সাংবাদিক নাজমুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জালিয়াতির মাধ্যমে করা ৪৮টি নামজারি বাতিল করে দেন তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ হাফিজুর রহমান। এছাড়া ভূমি অফিসের অনিয়মের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিবেদন করে স্বার্থান্বেষী মহলের রোষানলে ছিলেন তিনি। এব্যাপারে ছাতক উপজেলা সহকারী কমিশানার (ভূমি) তাপস শীল সাংবাদিকদের জানান,নাম খারিজ মামলার শুনানির সময় জাল কাগজপত্র উপস্থাপন করায় ৭জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি আইনানুগ প্রক্রিয়ায় চলবে। ভূমি অফিসে জালিয়াতি চক্রের উপস্থিতির বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews