কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: বশির উদ্দিনের ভ্যানে করে সারাদিন ঘুরে বেড়িয়েছেন তার পূর্বপরিচিত রঞ্জু মণ্ডল। দু’জন গল্প করেছেন, এক সঙ্গে চা খেয়েছেন। বশির ভাবতেও পারেননি এই রঞ্জুর হাতেই তার প্রাণ যাবে। কুষ্টিয়ার ভ্যানচালক বশির উদ্দিন হত্যার ঘটনায় আটক রঞ্জু মণ্ডল চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশকে।
মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার চরগোপালপুর-মিটন সড়কের পাশে ধানক্ষেত থেকে বশির উদ্দিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাড়ি পাশের উপজেলা কুমারখালীর সাঁওতা গ্রামে। পরে এ ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। তারা প্রথমে বশিরের ভ্যানটি উদ্ধার করে সদর উপজেলার নগর মোহাম্মদপুর গ্রামে আনজেরা নামে এক গৃহবধূর বাড়ি থেকে। আনজেরা পুলিশকে জানান তার চাচাতো ভাই রঞ্জু রাতে ভ্যানটি রেখে গেছে। পরে মঙ্গলবার রাতে সাঁওতা গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে আটক হয় রঞ্জু।
বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নিহত বশির ও ঘাতক রঞ্জুর শ্বশুরবাড়ি একই এলাকায়। এই সূত্র ধরে দু’জনের পরিচয়। রঞ্জু নিজের মায়ের খোঁজখবর রাখত না, ভরণপোষণও দিত না। সে বেশির ভাগ সময় শ্বশুরবাড়িতে থাকত। বশিরের বিষয়টি ভালো লাগেনি। তিনি প্রায়ই মাকে ভরণপোষণ দেয়ার জন্য রঞ্জুকে অনুরোধ করতেন। এতে ক্ষুব্ধ হন রঞ্জু। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। এই ক্ষোভ থেকে বশিরকে হত্যার পরিকল্পনা করে রঞ্জু।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৪ আগস্ট সকালে ২০০ টাকা দিয়ে বশিরের ভ্যান ভাড়া করে রঞ্জু। সারা দিন বশিরকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করে। এক সাথে চা পান করে। এক ফাঁকে বিআরবি ক্যাবলসের কাছে ইট কেনাবেচার দোকানের সামনে এসে প্রস্রাব করার কথা বলে ভ্যান থেকে নেমে কৌশলে ১টি ইট নিয়ে লুঙ্গির আড়ালে রেখে পুনরায় ভ্যানে ওঠে। পরে রাত ১০টার দিকে চরপাড়া মাঠের মধ্যে বাথরুম পেয়েছে বলে বশিরকে ভ্যান থামাতে বলে। তার কথায় ভ্যান থামালে রঞ্জু লুঙ্গির ভেতর থেকে ইট বের করে বশিরের মাথার মাঝখানে সজোরে আঘত করে। এতে ঘটনাস্থলেই বশির মারা যান। পরে রঞ্জু লাশটি রাস্তার পাশের ধানক্ষেতে রেখে ভ্যান নিয়ে চলে যায়। ঘাতক রঞ্জু সদর উপজেলার মেটন গ্রামের সালামত মণ্ডলের ছেলে।