ডেস্ক: জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে এক সমীক্ষায়। সেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশে জনসংখ্যা ২১০০ সালে প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে। ওই সময় পৃথিবীর জনসংখ্যা হবে ৮৮০ কোটি। এই সংখ্যা জাতিসংঘের বর্তমান অনুমানের চেয়ে ২০০ কোটি কম।
আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল এই বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণা করেছেন। তাদের গবেষণা মেডিকেল জার্নাল দ্য লানসেটে প্রকাশিত হয়েছে। খবর আল জাজিজার।
সমীক্ষায় বলা হয়, জাপান, স্পেন, ইতালি, থাইল্যান্ড, পর্তুগাল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং পোল্যান্ডসহ বিশ্বের ২০টির বেশী দেশে জনসংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই সমীক্ষা করা হয়। গত কয়েকমাস ধরে চলে এই সমীক্ষা।
সমীক্ষাতে আর বলা হয়েছে যে, জন্মহার কমে যাবে। আর আগামিদিনে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এই কারণে বিশ্বে ক্ষমতার নতুন মেরুকরণ ঘটবে।
শতাব্দীর শেষ দিকে ১৯৫টি দেশের ১৮৩টিতে যারা শরনার্থী ঢল আটকে দিচ্ছে সেই সমস্ত দেশে জনসংখ্যার স্তর বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় প্রতিস্থাপন সীমা কমে যাবে। এমনটাই মনে করছেন গবেষকরা। গবেষকরা জানাচ্ছেন, চিনের জনসংখ্যা আগামী ৮০ বছরে ১৪০ কোটি থেকে কমে দাঁড়াবে ৭৩ কোটিতে।
অপরদিকে সাব সাহারান আফ্রিকান দেশগুলোতে ২১০০ সাল নাগাদ জনসংখ্যা তিনগুণ বেড়ে ৩ শ’ কোটিতে দাঁড়াবে। এককভাবে নাইজেরিয়ার জনসংখ্যা ৮০ কোটি এবং ভারতের জনসংখ্যা হবে ১১০ কোটি।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ইন্সটিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস এন্ড ইভালুয়েশন (আইএইচএমই) কর্মকর্তা এবং রিপোর্টের প্রধান লেখক ক্রিস্টোফার মুররে সংবাদসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, জনসংখ্যা হ্রাসের এই হিসাব পরিবেশের জন্য সুখবর এবং অবশ্যই স্বস্তির খবর।
তার মতে, খাদ্য উৎপাদনের ওপর চাপ কমবে এবং কার্বন নি:সরণও অনেকটা হ্রাস পাবে। মানুষ বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবেন বলে দাবি ওই গবেষকের। পাশাপাশি সাব সাহারান আফ্রিকার কোন কোন দেশের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘যদিও আফ্রিকার বাইরে বেশিরভাগ দেশে শ্রম জনশক্তি হ্রাস পাবে এবং জনসংখ্যা পিরামিড ঘুরে যাবে, এতে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
এই পরিস্থিতিতে উচ্চ আয়ের দেশগুলির জন্য জনসংখ্যার স্তর ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার উত্তম সমাধান হচ্ছে অভিবাসন নীতি সহজ করা এবং যে সব পরিবার সন্তান গ্রহন করতে চায় তাদের সামাজিক সহায়তা দেওয়া।
জন্মহার হ্রাস এবং গড় আয়ু বৃদ্ধিতে বিশ্বব্যাপী ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের সংখ্যা ৪০ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়ে ২০১৭ সালের ৬৮ কোটি ১০ লাখ থেকে কমে ২১০০ সালে দাঁড়াবে ৪০ কোটি ১০ লাখ। অন্যদিকে বিশ্বের জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ অথবা ২৩৭ কোটি লোকের বয়সের সীমা হবে ৬৫ বছরের অধিক। ৮০ বছর বয়সী লোকের সংখ্যা বর্তমানের ১৪ কোটি থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৮৬ কোটি ৬০ লাখ।