মোহাম্মদ মাসুদ :
হিজরি চতুর্থ সনের তৃতীয় শা’বান মানবজাতির মূল্যবান মর্যাদাপূর্ণ বিশেষ দিন।হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ)পবিত্র জন্মদিন ইসলামের ইতিহাসের এক অনন্য ও অফুরন্ত খুশির দিন। নবী দুলালী মা ফাতেমা ও হজরত আলী পুত্র ইমাম এবং ইমাম হাসানের ছোট ভাই পাঞ্জাতনের শেষ স্তম্ভ শহীদ সম্রাট ইমাম হোসেনের পবিত্র জন্মদিন পালিত হয়েছে নানা আয়োজনে।
আজ ৩শাবান ২৩ফেব্রুয়ারি (সোমবার) রাতে চট্টগ্রামের প্রানকেন্দ্র সদরঘাটস্থ ইমামবাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়।
নবীজি(সা) এর পবিত্র সহিহ হাদিস,’হোসেন আমার অংশ,আমি হোসেনের অংশ’ এই সুত্রে আজকের দিনে নবীর কলিজার টুকরা হজরত হোসেন পবিত্র এ ধরায় আগমন করেন। যেহেতু নবীজি আল্লাহর পক্ষ হতে অবগত ছিলেন যে,প্রিয় নাতি হোসেনই তওহীদের রক্ষাকর্তা রুপে উনার ওফাতের পর আবির্ভূত হবেন তাই জীবদ্দশায় তিনি ইমাম হোসেনকে অত্যধিক স্নেহে মায়া বন্ধনে আবদ্ধ করার নজির আমরা সহিহ হাদিসে দেখতেই পাই।
নবীজির এই মমতার সুন্নত পালনে মোমেন সকলে আজ সমবত হয়ে নবী পরিবারের শানে হামদ-নাত-কাসিদা পরিবেশন করেন। বিশেষ দোয়া মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সকলের ইহকাল পরকালের কামিয়াবি ও নেক আমল কবুলে আর্জি পেশ করা হয়। শেষে একে অপরের সাথে খোলাখুল, মিষ্টি বিতরণসহ তবুরুক বিতরণ করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান আলেম হুজ্জাতুল ইসলাম মওলানা আমজাদ হোসেন বলেন,’ইসলামের পথ মানেই কারবালার পথ,আর কারবালার মহানায়ক নবী দৌহিত্র ইমাম হোসেন হচ্ছেন ঈমানের রক্ষাকারী আর তার জন্মদিবসে আসমান-জমিনের প্রশংসারত সকল মাখলুকাতের সাথে ইমাম হোসেনের জিকর ও স্মরণ শিখা অনির্বাণ হয়ে মোমেনের অন্তরে চিরকাল প্রজ্জ্বলিত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
হুসাইন (রাঃ) আল্লাহর পথে সর্বোচ্চ ত্যাগ ও শাহাদাতকে তিনি দিয়ে গেছেন অসীম ও অতুলনীয় শিক্ষা সৌন্দর্যে ভরপুর করে।যা কেয়ামতের আগ পর্যন্ত যুগে যুগে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের কাছে হুসাইন (রাঃ) হয়ে আছেন থাকবেন। গৌরবময় জীবন ও মৃত্যুর আদর্শ ইতিহাসে স্মরণকালের স্মরণীয় হয়ে থাকবে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ইসলাম প্রিয় তৌহিদ জনতার মাঝে।
ইমাম হুসাইন কেবল জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও মুক্তিকামী মানুষেরই আদর্শ ছিলেন না, সর্বোত্তম জিহাদ তথা আত্ম-সংশোধন ও পরিশুদ্ধিরও মূর্ত প্রতীক। অন্যদেরকে সৎকাজের দিকে ডাকার ও অসৎ কাজে নিষেধ বা প্রতিরোধের শর্ত হল, সবার আগে নিজেকেই পরিশুদ্ধ করা।
ইমাম হুসাইন (রাঃ) সাতান্ন বছরের জীবনের প্রতি সংক্ষিপ্ত দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, ইমাম ছিলেন সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিনম্রতা, দয়া, ক্ষমাশীলতা, পরোপকার এবং খোদাভীরুতা ও খোদাপ্রেমের ক্ষেত্রেও মানবজাতির জন্য শীর্ষস্থানীয় আদর্শ। নামাজ আদায়, কুরআন তিলাওয়াত এবং দোয়া ও ইস্তিগফারের ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন পিতা ও বিশ্বনবী(সা.)’র ধারার স্বচ্ছ প্রতিচ্ছবি।